সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে অনুষ্ঠিত হল বিশ্বজিৎ দাশগুপ্তের একক ‘সঙ্গে বিশ্বজিৎ’। ছোটবেলা থেকে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিমপ্রাপ্ত বিশ্বজিৎ নব্বইয়ের দশকে প্রথম সারির রিয়্যালিটি শো ‘স্টার ট্র্যাক’-এ সারা দেশের মধ্যে প্রথম চার জনের মধ্যে স্থানাধিকার করেছিলেন। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত থেকে আধুনিক, ঝুমুর থেকে ভাটিয়ালি, দাদরা থেকে ব্যান্ডের গান সমস্ত ক্ষেত্রে বিশ্বজিতের কণ্ঠের অবাধ বিচরণ ভূয়সী প্রশংসার দাবি রাখে।
এ দিনে বিশ্বজিতের গাওয়া গানগুলির মধ্যে ‘আলবেলা সাজন’, ‘পিয়া তোরা’, ‘আমায় ডুবাইলি রে’, ‘পৃথিবীটা নাকি’, ‘চলো রিনা’ গানগুলি মন ছুঁয়ে যায়। এছাড়াও বিশ্বজিতের নিজস্ব গান যেমন ‘ছলছলাইয়া নদী’, ‘রাত ভরে মল্লারে’, ‘আমি কি করি এখন’ প্রত্যেকটিতে শিল্পীর নিজস্বতা প্রকাশ পায়। তবে সব কিছু ছাপিয়ে বিশ্বজিতের মুন্সিয়ানা ধরা পড়ে ইন্দ্রাণী সেনের সঙ্গে গাওয়া ডুয়েট ‘বরসন লাগি’ এবং অনুষ্ঠানের শেষ গান ‘লগা চুনরি মে দাগ’-এ। প্রতিটি গানের সঙ্গে সঠিক ও পরিমিত যন্ত্রানুসঙ্গ গানগুলিকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিল। ‘দিশা’র উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শ্রাবণী সেন। |
প্রতিটি মুহূর্ত যেন প্রাণবন্ত |
সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে ছিল কবিতা ও গানের এক অনবদ্য মেলবন্ধন ‘সাত তারায় সাঁঝবেলায়’। সাত জন নক্ষত্র কবির নির্বাচিত কবিতা নিবেদনের মাধ্যম ছিল গান ও আবৃত্তি। লোপামুদ্রা মিত্র উজাড় করে দিলেন তাঁর গান আর তারই পাশাপাশি রাজা দাস গড়লেন তাঁর নিজস্ব ভুবন, আবৃত্তিকে সঙ্গী করে। |
অনুষ্ঠান পরিকল্পনায় ছিল নিষ্ঠা ও অভিনবত্ব কারণ প্রত্যেক কবির সৃষ্টি উপস্থাপনের সূচনায় তাঁদের সম্মাননা জ্ঞাপন, মানপত্র পাঠ, পর্দায় ফুটে ওঠা কবির জীবনপঞ্জী এবং সর্বোপরি কয়েক জন কবির স্বকণ্ঠে কবিতার উচ্চারণকে শ্রুতিমাধ্যমে ধ্বনিত করে তোলা অনুষ্ঠানে স্বতন্ত্র মাত্রা সংযোজন করে। আলোকপ্রক্ষেপ ও মঞ্চসজ্জা প্রশংসার দাবি রাখে। ‘নিভন্ত এই চুল্লী’ এবং ‘অবনী বাড়ি আছ’তে লোপামুদ্রার সামগ্রিক অভিব্যক্তি কবিতার নিহিত নির্যাসটিকে যেন মূর্ত অবয়বে প্রকাশ করে। আবৃত্তিতে রাজা পরিশীলিত, কবিতার প্রাণ প্রতিষ্ঠায় দক্ষ। তাঁর কণ্ঠে শুনতে ভাল লেগেছে ‘কেউ কথা রাখেনি’ এবং ‘আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি’। অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন মধুমন্তী মৈত্র এবং আবির চট্টোপাধ্যায়। মঞ্চে বাণী বসু, জয় গোস্বামী, শ্রীজাত, স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখের উপস্থিতি ও বক্তব্য সাঁঝবেলার আলোকমালাকে নিঃসন্দেহে আরও উজ্জ্বল করে তোলে। আয়োজক অনি স্কয়ার ক্রিয়েশনস। |
সম্প্রতি কিংশুক রায়ের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হল ‘রংবাহার’। রবীন্দ্রগান, ভজন, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও কীর্তনের সংমিশ্রণ লক্ষ করা গেল এই নৃত্যগীতি আলেখ্যে। দেবশ্রী মুখোপাধ্যায়, মধুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পরে দু’টি অনবদ্য রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনিয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করলেন সুছন্দা ঘোষ।অনুষ্ঠানে লোকগানও প্রাধান্য পায়। রত্না রায় শোনালেন ‘সুজন মাঝি রে’, ‘ভাল কইরা বাজান গো দোতারা’ দর্শকদের মন ছুঁয়ে যায়। কবিতা পাঠে ছিলেন কৃষ্ণপদ দাস, ঈশিতা দাস অধিকারী। অনুষ্ঠানের শেষে কিংশুক রায়ের গাওয়া ‘চলে যায় বসন্তের দিন’ এক অন্য মাত্রা পায়, যা আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে রাহুল সিংহের নৃত্যানুষঙ্গে। শিশুশিল্পী সুবর্ণা ভৌমিক ও অস্মিতার নৃত্যানুষ্ঠান সুন্দর। |