|
|
|
|
প্রধানদের প্রশিক্ষণ দিতে কর্মশালা |
নামেই ১০০ দিনের কাজ, পূর্বে হয়েছে মাত্র ২০ দিন
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
চলতি আর্থিক বছর শুরুর পর কেটে গিয়েছে সাড়ে সাত মাস। আর্থিক বছরের অর্ধেকের বেশি সময় কেটে যাওয়ার পরও জেলায় একশো দিনের প্রকল্পে এখনও গড়ে কাজ হয়েছে মাত্র ২০ দিন। জেলার বেশ কয়েকটি ব্লকে এই হার আরও কম। এই পরিস্থিতিতে জেলার সর্বত্র একশো দিনের কাজে গতি আনতে এ বার নবনির্বাচিত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। আজ কোলাঘাটে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বলাকা মঞ্চে এই প্রশিক্ষণ শুরু হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার জেলা পরিষদের সভাকক্ষে জেলার উন্নয়ন নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে একশো দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়। এই বৈঠকেই জেলা পরিষদের তরফে পেশ করা রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, চলতি আর্থিক বছরে জেলায় একশো দিনের কাজের প্রকল্পে গত ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত গড়ে কাজ হয়েছে ২০ দিন। জেলার ২৫টি ব্লকের মধ্যে কোলাঘাট, কাঁথি-১, শহিদ মাতঙ্গিনী, তমলুক, নন্দকুমার, ময়না প্রভৃতি ব্লকে শ্রমিকদের ৩০ দিনের বেশি কাজ দেওয়া গেলেও পটাশপুর-১ , মুগবেড়িয়া , খেজুরি-২ , ভগবানপুর -১ ও ২ , দেশপ্রাণ, রামনগর-১ ব্লকে ২০ দিনের কম কাজ পেয়েছে শ্রমিকরা। সব মিলিয়ে জেলায় গড় ২০ দিন। চলতি আর্থিক বছরে এখনও পর্যন্ত ১৪৪ কোটি ১২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে।
এত খারাপ অবস্থা কেন?
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডলের বক্তব্য, “চলতি আর্থিক বছরের শুরু থেকেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি চলায় এই প্রকল্পের কাজের গতি কিছুটা কম ছিল। এ ছাড়া পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্ব শেষের পর দীর্ঘ দিন বর্ষা চলায় কাজ ব্যাহত হয়েছে। ফলে বাসিন্দাদের কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা খামতি রয়েছে।”
জেলা পরিষদের উন্নয়ন বিষয়ক রিপোর্ট অনুযায়ী, কোলাঘাট ব্লকে শ্রমিকরা গড়ে কাজ পেয়েছে সবচেয়ে বেশি গড়ে ৪২ দিন। এরপরেই রয়েছে যথাক্রমে কাঁথি ১ ব্লক (৩৯ দিন), শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক (৩৮ দিন), নন্দকুমার ব্লক (৩৭ দিন), তমলুক ও ময়না ব্লক (৩৪ দিন)।
সবচেয়ে কম, মাত্র ৯ দিন কাজ দিতে পেরেছে পটাশপুর-১ ব্লক। একই ভাবে খেজুরি -২, ভগবানপুর-২ ব্লকে ১৩ দিন, ভগবানপুর-১ ব্লকে ১৫ দিন, দেশপ্রাণ ব্লকে ১৬ দিন, রামনগর-১ ব্লকে গড়ে ১৯ দিন কাজ পেয়েছে শ্রমিকরা। বাকি ব্লক গুলিতে গড়ে ২০ থেকে ২৮ দিন কাজ পেয়েছে শ্রমিকরা।
এই অবস্থায় চলতি আর্থিক বছরে জেলায় গড়ে অন্তত ৫০ দিন কাজ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হলেও তা পূরণের জন্য হাতে রয়েছে মাত্র ৪ মাস সময়। এই সময়ের মধ্যে জেলায় গড়ে ৩০ দিনের কাজ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হবে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, একশো দিনের কাজের ক্ষেত্রে টাকার অভাব নেই। কাজে গতি আনতে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে দ্রুত প্রকল্প তৈরি করে জমা দিতে বলা হয়েছিল। ইতিমধ্যে পঞ্চায়েতগুলি থেকে অনেক প্রকল্প জমা পড়েছে। এগুলি রূপায়ণের জন্য উদ্যোগী হতে হবে। এ ছাড়াও প্রকল্পের বিভিন্ন কাজের বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানাতে পঞ্চায়েত প্রধানদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার বন্যাকবলিত পাঁশকুড়া, তমলুক ও নন্দকুমার ব্লকের ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের একশো দিনের প্রকল্পে কাজ দেওয়ায় জোর দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও একশো দিনের কাজে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার জন্য বিশেষ উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে। একশো দিনের কাজে নিযুক্ত শ্রমিকদের পানীয় জল দেওয়া-সহ বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করতে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী শ্রমিকদের হালকা কাজ দেওয়ার উপর গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। জেলার যে সব গ্রামসংসদ এলাকায় প্রকল্পের কাজে খামতি রয়েছে সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনকে সেখানে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে। |
|
|
|
|
|