লাগাতার গন্ডার হত্যা রুখতে এ বার রাজ্য বন বিভাগ নিজস্ব গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক তৈরি করতে চাইছে। একই সঙ্গে শিকারের নানা ধরণ আর সেই শিকার রোখার বিভিন্ন পন্থা শেখাতে বনরক্ষীদের নিয়ে শুরু হয়েছে বিশেষ কর্মশালা।
রাজ্যে চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ৩৪টি গন্ডার হত্যা হয়েছে। এর মধ্যে সদ্য বিশ্ব-ঐতিহ্য ক্ষেত্রের স্বীকৃতি ফিরে পাওয়া মানসে ৪টি গন্ডার হত্যা হওয়ায় কেন্দ্র ও বিশ্বের পশুপ্রেমী সংগঠনগুলিও নড়েচড়ে বসেছে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে শিকারিদের গতিবিধি, অরণ্য লাগোয়া গ্রামে তাদের আশ্রয়দাতাদের নামধাম, খড়্গ পাচার চক্রের বিষয়ে জানতে তাই কেবল পুলিশের উপরে নির্ভর করে থাকতে চাইছে না বনবিভাগ। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল আর পি অগ্রবাল জানান, বন বিভাগের বিশেষ গোয়েন্দা শাখা পুলিশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিজেদের মতো করে হাঁড়ির খবর জোগাড়ের চেষ্টা চালাবে। সম্প্রতি রাজ্য পুলিশ ও বনবিভাগের বৈঠকের পরে এই শাখাটি গড়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। অগ্রবাল জানান, শিকারিদের জামিন পাওয়া আটকাতে তথা শাস্তি নিশ্চিত করতে দ্রুত চার্জশিট দেওয়া ও ফাস্ট ট্র্যাক আদালত গড়ার ব্যাপারে কথা চলছে। তবে আইন বিভাগের সবুজ সংকেত লাগবে। সেই সঙ্গে গুজরাতের মতো এ রাজ্যেও বন্যপ্রাণ বিষয়ক ফরেনসিক পরীক্ষণাগার গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
চোরাশিকারিদের সঙ্গে সমানতালে টক্কর দিতে ও বন্যপ্রাণ বিষয়ে জ্ঞান বাড়াতে, মানস জাতীয় উদ্যান, মানস সংরক্ষিত অরণ্য, কচুগাঁও সংরক্ষিত অরণ্য ও রিপু-চিরাং সংরক্ষিত অরণ্যের ১০০ জন সামনের সারির বনরক্ষীকে নিয়ে বিশেষ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে মানসের তিনটি রেঞ্জের ৩২ জন রক্ষীর প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, প্রশিক্ষণকালে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে রক্ষীরা পরোক্ষ চিহ্ন দেখে প্রাণী শণাক্তকরণ, বন্যপ্রাণ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক, দেশিয় ও রাজ্য আইন, বন্যপ্রাণীর দেহাংশের ব্যবসার বিভিন্ন চক্র, শিকারের বিভিন্ন পদ্ধতি ও তা রোখার উপায় ইত্যাদি নানা বিষয়ে শিখবেন। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ ও শিকার আটকানোর কাজে তিন দশকের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ডিএফও ভূপেন তালুকদারকে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার প্রধান প্রশিক্ষক নিযুক্ত করা হয়েছে। |