শুধুমাত্র শহরের নাগরিকদেরই নয়, এ বার থেকে ময়দানের গাছের নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করতে হবে কলকাতার সিপিকে। শুক্রবার এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
ভিক্টোরিয়ার দূষণ সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলাকালীন এ দিন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত আদালতে জানান, গঙ্গাসাগর মেলা বা রাজনৈতিক দলের সমাবেশে প্রায় কয়েক লক্ষ লোক-সমাগম হয় ময়দানে। তখন যে অস্থায়ী শৌচাগার তৈরি হয় তা অস্বাস্থ্যকর। মানুষের বর্জ্য থেকে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
সুভাষবাবু আদালতে জানান, সম্প্রতি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ময়দান এলাকায় কয়েক হাজার গাছের চারা লাগানো হয়েছে। কিন্তু জানুয়ারিতে তিনটি বড় রাজনৈতিক দলের সমাবেশ হবে ময়দানে। সুভাষবাবুর আশঙ্কা, এর জেরে চারাগুলির ক্ষতি হতে পারে। নষ্ট হতে পারে শহরের ফুসফুস ময়দান। |
হাইকোর্টের বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ এর ভিত্তিতে নির্দেশ দেন, ময়দান ও তার আশপাশের এলাকা যাতে নষ্ট না হয় তা দেখতে হবে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে। গাছ বাঁচাতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করতে হবে তাঁকেই। ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন জানায়, শহরে প্রতি দিন যে হারে বাইরে থেকে বাস, ট্রাক ও ছোট যান ঢুকছে তাতেও শহরের দূষণ মাত্রা সহ্যের সীমা অতিক্রম করছে। ওই সব যান যাতে শহরের যত্রতত্র দাঁড়াতে না পারে, সে ব্যবস্থা সিপিকেই করতে হবে।
আদালতের আরও নির্দেশ, ময়দান এলাকায় পর্যাপ্ত ‘বায়ো টয়লেট’ বসাতে হবে। ময়দানে যে সব রাজনৈতিক দল সমাবেশ করবে, তাদের কাছ থেকে তার খরচ আদায় করবে সরকার। সরকারি আইনজীবী সুন্দরানন্দ পাল এবং বিকাশ মুখোপাধ্যায়কে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, বইমেলার সময়ে মিলন মেলা প্রাঙ্গণের শৌচাগারগুলিরও ভয়াবহ অবস্থা হয়। আদালতে নির্দেশ, সেখানেও বায়ো টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্যকে।
এ দিন মূল মামলার শুনানির সময়ে সরকারি আইনজীবীরা জানান, ধর্মতলা থেকে বাস টার্মিনাস সরানোর ব্যাপারে সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে জানুয়ারির মধ্যে তা জানানো হবে। বাস টার্মিনাস সরানোর ব্যাপারে গত সেপ্টেম্বরে হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি কমিটি তৈরি করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে। রাজ্যের মুখ্যসচিব, পরিবহণ সচিব, সিপি, মেয়র-সহ আরও কয়েক জনকে নিয়ে ওই কমিটি হয়। কমিটির দায়িত্ব, ধর্মতলা থেকে বাস টার্মিনাস কোথায় যাবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া।
কমিটির কাজ দ্রুত শেষ করা নিশ্চিত করতে রাজ্যকে নির্দেশ দেয় আদালত। |