বিহারে কংগ্রেস কার সঙ্গে, রাজ্য-রাজনীতির জল্পনা তুঙ্গে
ংগ্রেস তুমি কার?—এই প্রশ্নে রাজ্য রাজনীতি রীতিমতো সরগরম। একদিকে জেডিইউ এবং অন্য দিকে লালু প্রসাদ ও রামবিলাস পাসোয়ান। আগামী লোকসভা নির্বাচনকে ঘিরে রাজ্যের জোট রাজনীতির অভিমুখ কী হবে তা নিয়ে জল্পনা এখন তুঙ্গে। লালু প্রসাদের আরজেডি এবং রামবিলাস পাসোয়ানের লোকজন শক্তি দল ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করার ব্যাপারে প্রকাশ্যে আগ্রহের কথা জানিয়েছে। এ বার জেডিইউ জানিয়ে দিল, কংগ্রেসকে ঠিক করতে হবে তারা কার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধবে। হয় জেডিইউ নয়তো লালু-রামবিলাস। দুই নৌকোয় পা দিয়ে চলা যাবে না।
জেডিইউ এবং বিজেপি আলাদা হওয়ার পর থেকেই রাজ্যে জেডিইউ এবং কংগ্রেসের জোট গড়ার জল্পনা চলছে। এনডিএ ছাড়ার পরে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে কংগ্রেসের চার বিধায়ক নীতীশকে সমর্থন দেওয়ার পর জল্পনার আগুনে ঘি পড়েছে। কংগ্রেসের সঙ্গে জেডিইউ জোট বাঁধার ব্যাপারে দলের শীর্ষ নেতা শিবানন্দ তিওয়ারি বলছেন, “সময় থাকতে থাকতে কংগ্রেসকে ভাবতে হবে। আমরা আগ্রহী। তবে ভালোবাসা একমুখী হতে পারে না। সেটা হলে বিপদ।” কংগ্রেসের কোর্টে বল ঠেলে শিবানন্দরা বুঝিয়ে দিতে চান তাঁরা সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আটকাতে যে কোনও অবস্থান নিতে রাজি। শিবানন্দের অনুমান, “সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শেষ হওয়ার পরে মনে হচ্ছে কংগ্রেস এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। আমাদের দলও এই নিয়ে আলোচনা করবে।”
লালু প্রসাদ জেলে যাওয়ার পরে রাবড়ী দেবী জানিয়ে দিয়েছিলেন, আরজেডি কংগ্রেসের সঙ্গে আছে। এরপরে রামবিলাস পাসোয়ান লালু-পত্নীর সঙ্গে দেখা করার পরে ফের আরজেডি এবং এলজেপির অবস্থান স্পষ্ট করে দেন। এ বার শিবানন্দ তিওয়ারিরা যা বলছেন তাতে কংগ্রেসকে আগামী বছরের শুরুতেই একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বেশি দিন বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখা যাবে না।
সম্প্রতি বিহার কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে দলের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে অবশ্য জোট রাজনীতির রণনীতি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সনিয়া গাঁধী কিষাণগঞ্জে সভা করবেন।
৩০ জানুয়ারি পটনার গাঁধী ময়দানে রাহুল গাঁধীর সভা করার কথা।
রাজ্য কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রেম চাঁদ মিশ্র বলেন, “সকলেই ধর্মনিরপেক্ষতার কারণে, বিজেপিকে ঠেকাতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করতে চাইছে। এটা দলের শীর্ষ নেতারাও জানেন। অতীতে বিহারে কংগ্রেসকে ব্যবহার করা হয়েছে। তাই কংগ্রেস এবার সতর্ক। সিদ্ধান্ত নেবেন কংগ্রেস হাইকম্যান্ড।”
সাধারণ ভাবে মনে করা হচ্ছে নীতীশের সব থেকে বড় তুরুপের তাস, তাঁর রাজ্যের বিশেষ মর্যাদার প্রশ্নটি। আগেই তিনি ঘোষণা করেছেন, “বিহারকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা যে সরকার দেবে তার সঙ্গে জেডিইউ আছে।” কংগ্রেসের প্রতি আনুগত্য দেখাতে এনডিএ-র শরিক হয়েও সেই সময় তাঁর দল প্রণব মুখোপাধ্যায়কে ভোট দিয়েছিল। যা প্রকাশ্যেই তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু এই মুহূর্তে নীতীশের বাধ্যবাধকতা অন্য। তাঁর প্রথম ও শেষ লক্ষ্য নরেন্দ্র মোদীকে দিল্লি থেকে দূরে রাখা। আর তা সফল করতে গেলে তাঁকে কংগ্রেসের সঙ্গে যেতেই হবে।
সেই কারণেই কংগ্রেসের প্রতি জেডিইউ নরম মনোভাব নিয়ে চলতে চাইছে। জেডিইউ মুখপাত্র কে সি ত্যাগী কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে তাঁদের আগ্রহের ইঙ্গিতও দিয়েছেন, “কংগ্রেসকে ঠিক করতে হবে তারা দুর্নীতিপরায়ণ নেতার সঙ্গে থাকবে, না নীতীশ কুমারের মতো স্বচ্ছ ভাবমূর্তির সঙ্গে যাবে। লালু প্রসাদ কেন জেলে আছেন তা সকলেই জানেন। তাঁর নেতৃত্বে চলা সরকারের অতীত ইতিহাসও সকলের মনে আছে। সে ক্ষেত্রে মানুষ নীতীশ কুমারের সুশাসন দেখছে।”
তাঁর বক্তব্য, “ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্নে আমরা এনডিএ ছেড়েছি। বিজেপির সঙ্গে মিলে রাজ্যে সরকার চালানো নিয়ে জেডিইউ-এর তো কোনও সমস্যা ছিল না। শুধুমাত্র ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য তাদের সঙ্গ ত্যাগ করে ঝুঁকি নিয়েছি।” রাজ্যে কংগ্রেসের সংগঠন মজবুত না, তবুও কেন এই দলের সঙ্গে জোট গড়া নিয়ে এত শোরগোল? এই প্রশ্নের উত্তরে ত্যাগী বলেন, “নরেন্দ্র মোদী দেশের কাছে এখন বড় বিপদ।
তাই সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখতে আমরা ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকে জোটবদ্ধ করতে চাই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.