ব্যস্ত সময়ে শোভাযাত্রা, যানজট
শিয়ালদহে ট্রেন ধরতে যাবেন বলে মিল্ক কলোনিতে নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন অনুপ দাস। আর জি কর হাসপাতালের সামনে আসার পরে ঘণ্টাখানেক ঠায় দাঁড়িয়ে রইল তাঁর গাড়ি। পুরো রাস্তাটাই বন্ধ, সার সার গাড়ি দাঁড়িয়ে। শেষে গাড়ি থেকে নেমে মেয়েকে নিয়ে হেঁটে ফড়িয়াপুকুরে গিয়ে ট্যাক্সি নিয়ে স্টেশনে পৌঁছে ট্রেন ধরলেন তিনি।
শুধু অনুপবাবুই নন, শুক্রবার দুপুরে উত্তর কলকাতার অনেকেরই এমন ভোগান্তি হয়েছে। কারণ সপ্তাহের ব্যস্ত দিনে রাস্তা আটকে শোভাযাত্রা বেরিয়েছে। আর তার জেরেই যানজটে হাঁসফাঁস করেছে উত্তর থেকে মধ্য কলকাতার বিভিন্ন এলাকা। নাকাল হতে হয়েছে নিত্যযাত্রীদের।
পুলিশ সূত্রে খবর, দুপুরে বেলগাছিয়ার পরেশনাথ মন্দির থেকে একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রা বেরোয়। আর জি কর রোড, বিধান সরণি, হাতিবাগান, বি কে পাল অ্যাভিনিউ হয়ে মিছিলটি যায় বড়বাজারের বৈশাখী লেনে। প্রায় হাজার দু’য়েক লোকের সঙ্গে ১০টি ট্রেলার, দু’টি রথ ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, রাস্তার এক দিক আটকে ওই শোভাযাত্রা হয়। ফলে কয়েক ঘণ্টার জন্য কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পরে শহরের ওই অংশ।
থমকে পথ। আটকে অ্যাম্বুল্যান্সও। শুক্রবার, উত্তর কলকাতায়। —নিজস্ব চিত্র।
কিন্তু কাজের দিনে ব্যস্ত সময়ে কী করে রাস্তা আটকে শোভাযাত্রার অনুমতি দিল পুলিশ প্রশাসন?
লালবাজার সূত্রের খবর, প্রতি বছর ওই ধর্মীয় সংগঠনটি দু’বার শোভাযাত্রা বার করে। কার্তিক পূর্ণিমার দিন বড়বাজার থেকে শোভাযাত্রা বেরিয়ে শেষ হয় বেলগাছিয়ার পরেশনাথ মন্দিরে। এক সপ্তাহ পরে আবার ওই রাস্তা দিয়েই বেলগাছিয়া থেকে বড়বাজার পর্যন্ত যায় শোভাযাত্রাটি। এর জন্য ওই সংগঠন লালবাজার থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতিও নেয়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ট্রেলার নিয়ে শোভাযাত্রা করার জন্য বিশেষ অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিনের ওই ধর্মীয় শোভাযাত্রার জেরে প্রায় কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে শ্যামবাজার, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোড, আর জি কর রোড, রাজা দীনেন্দ্র রায় রোড, মহাত্মা গাঁধী রোড, বি টি রোড, অরবিন্দ সরণি, বি কে পাল অ্যাভিনিউ-সহ উত্তর ও মধ্য কলকাতার একাধিক রাস্তা। এক পুলিশ কর্তার দাবি, শোভাযাত্রা বেরোলেও বিকল্প রাস্তা দিয়ে যান-চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। যদিও নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, ট্রাফিক পুলিশ কোনও সহযোগিতা করেনি। পুলিশের পক্ষ থেকে ওই সব রাস্তা ব্যবহার না করার জন্য কোনও আগাম ঘোষণা করা হয়নি। ফলে না জেনে অনেকেই যানজটে আটকে নাজেহাল হন। লালবাজারের কর্তারা অবশ্য দাবি করেছেন, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আগে থেকেই ওই রাস্তাগুলি ব্যবহার না করার জন্য সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল সাধারণ মানুষকে।
ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন যে শোভাযাত্রাটি বেরোয়, তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করেছেন সংগঠকেরাই। ওই সংগঠনের স্বেছাসেবকরা দড়ি দিয়ে ঘিরে রেখেছিলেন শোভাযাত্রাটি। ফলে অ্যাম্বুল্যান্স ছাড়া কোনও গাড়ি মিছিলের মধ্যে দিয়ে পার করানো যায়নি।
এ দিন বিকেলেও মানিকতলা থেকে একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রা বেরোয়। পুলিশ জানায়, সুকিয়া স্ট্রিট, আমহার্স্ট স্ট্রিট, কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিট, এপিসি রোড হয়ে সেটি মানিকতলায় ফেরে। তবে পুলিশের দাবি, এই মিছিলে মাত্র শ’দুয়েক লোক থাকায় তেমন যানজট হয়নি।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.