পরিবারের আপত্তি, খুন প্রেমিকের হাতেই
সালটা ২০০৮। বছর পনেরোর ব্রিটিশ মেয়ে লরা উইলসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় ষোলো বছরের আশতিয়াক আসগরের। ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব গাঢ় হয়। কিন্তু তখনও লরা জানতেন না, সম্পর্কের বছর দুয়েকের মধ্যে আশতিয়াকের হাতেই খুন হতে হবে তাঁকে। ২০১০-এ সাউথ ইয়র্কশায়ারের রথারহ্যামের একটি খাল থেকে উদ্ধার হয় ছুরির আঘাতে ক্ষতবিক্ষত লরার দেহ। খুনের দায়ে আশতিয়াক এখন যাবজ্জীবন সাজা খাটছে। আজ একটি ব্রিটিশ টেলিভিশন শোয়ে দিদির এই মর্মান্তিক পরিণতির কাহিনি শুনিয়েছেন লরার বোন সারা উইলসন।
সারা জানিয়েছেন, আশতিয়াকের রক্ষণশীল পরিবার কিছুতেই মেনে নিতে পারত না লরাকে। আশতিয়াকও বরাবর চেয়েছিল তার ও লরার সম্পর্কটা গোপন রাখতে। এই গোপনীয়তাই অসহ্য হয়ে উঠেছিল লরার কাছে। তা ছাড়া, আশতিয়াকের বেহিসেবি জীবনযাপন ঘিরেও লরার মনে জমছিল সন্দেহ। মাঝেমধ্যেই লরা বোনকে দুঃখ করে বলতেন আশতিয়াকের অন্য মহিলা বন্ধুদের কথা। আশতিয়াকের পরিবারও ইতিমধ্যে পাকিস্তানের একটি মেয়ের সঙ্গে তার বিয়ের কথা প্রায় পাকা করে ফেলে। সব মিলিয়ে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন লরা। দু’জনের সম্পর্কটাও এই সময়ে ভেঙে যায়।
হতাশ লরা এর পর জড়িয়ে পড়েন ইশক নামে এক বিবাহিত ব্যক্তির সঙ্গে। সে-ও আশতিয়াকের পরিচিত। সারার দাবি, আশতিয়াকের মনে ঈর্ষা জাগাতেই ইশকের ঘনিষ্ঠ হয়েছিল লরা। সেই সম্পর্কের পরিণতি একটি শিশুকন্যা। অ্যালিসিয়া। লরার বয়স তখন সতেরো। কিন্তু অ্যালিসিয়ার জন্মের পরে মা-মেয়ের আর কোনও দায় নিতে চায়নি ইশক। তখন লরা আবার ফিরে যেতে চেয়েছিলেন আশতিয়াকের কাছে। লরার মা ম্যাগি জানিয়েছেন, সেটাই ছিল তাঁর মেয়ের জীবনের সব চেয়ে বড় ভুল।
লরা-আশতিয়াকের সম্পর্ক ফের শুরু হয়। অথচ প্রেমিকের সেই পুরনো শর্ত। গোপন রাখতে হবে সব কিছু। কিন্তু এ বার এক দিন লরা-সারা হাজির হন আশতিয়াকের বাড়িতে। জোটে চরম অপমান। সারা জানান, লরাকে জুতো ছুড়ে মেরেছিলেন আশতিয়াকের মা। তখন আশতিয়াক তাঁর পেছনেই দাঁড়িয়ে ছিল ঢুলুঢুলু চোখে। তবে পরে সে ইশককে এসএমএস করে জানিয়েছিল, লরাকে সে শেষ করে ফেলবে। এক সন্ধ্যায় ওই খালের ধারে লরাকে ডেকে পাঠায় সে।
ছোট মেয়ের সঙ্গে লরার মা-ও ছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। তিনি জানিয়েছেন, রাত অবধি মেয়ে না ফেরায় তিনি আঁচ করে নিয়েছিলেন, খারাপ কিছুই ঘটেছে। তাঁদের দাবি, এই সময়টায় আশতিয়াক উল্টে চেনা-পরিচিতদের ফোন করে জানতে চাইছিল, লরাকে কেউ দেখেছে কি না।
মেয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর আদালতের দ্বারস্থ হয় লরার পরিবার। লরাকে খুন করার অপরাধে আশতিয়াকের যাবজ্জীবন সাজা হয়। মামলা চলাকালীন ঈশকের নাম উঠলেও নির্দোষ প্রমাণিত হয় সে। ম্যাগি জানিয়েছেন, দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরেও নির্বিকার চিল তাঁর মেয়ের খুনি। বর্তমানে আলিসিয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন ম্যাগি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.