বাড়ি দখলে অভিযুক্ত তৃণমূলের দুই নেতা
তৃণমূলের দলীয় পতাকা লাগিয়ে, ‘জনজাগরণ সঙ্ঘ’য়ের নাম করে বাড়ি দখলের অভিযোগ উঠল সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া নেতাদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার কাটোয়া শহরের চাউলপট্টি রোডের (দক্ষিণ) ঘটনা। যদিও অভিযুক্ত নেতাদের দাবি, এই বাড়ি দখলের সঙ্গে তৃণমূলের সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই।
কাটোয়া পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বাড়ির মালিক ষড়ানন কর্মকারের দাবি, বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগে গত বুধবার বাড়ির দখল নেয় তৃণমূল। তাঁর অভিযোগ, বর্ধমান জেলা তৃণমূল সম্পাদক শমীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় (অভিযোগপত্রে তমাল নাম উল্লেখ আছে) ও তৃণমূল নেতা শ্যামল মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাঁর বাড়ি দখল হয়েছে। এমনকী কাটোয়া থানার পুলিশ অভিযোগ না নিয়ে তাঁকে অভিযুক্তদের সঙ্গে ‘যোগাযোগ’ করার পরামর্শ দেয় বলেও তাঁর দাবি। এরপরে শুক্রবার তিনি কাটোয়া মহকুমা আদালতের দ্বারস্থ হন। ষড়াননবাবুর আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ দাস বলেন, “বিচারক অভিযোগটি নিয়ে পুলিশকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।” আদালতে দ্বারস্থ হওয়ার আগে, বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি, রাজ্য মানবাধিকার কমিশন, স্বরাষ্ট্র সচিব, এসডিও (কাটোয়া) ও কাটোয়া পুরসভার চেয়ারপার্সনের কাছেও রেজিষ্ট্রি মারফত অভিযোগ পাঠান ষড়াননবাবু।
এই বাড়ি ঘিরেই বিতর্ক।—নিজস্ব চিত্র।
ষড়াননবাবুর অভিযোগ, গত ১৬ নভেম্বর স্থানীয় লেনিন সরণী দিয়ে বাড়ি ফেরার সময় তমালবাবু ও শ্যামলবাবুরা নিজেদের তৃণমূল নেতা বলে পরিচয় দিয়ে তাঁকে বাড়িটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তাঁরা জানান, ওই বাড়িতে দলীয় দফতর করতে চান তাঁরা। লিখিত অভিযোগে ষড়াননবাবু জানিয়েছেন, ‘‘আমি প্রতিবাদ করতেই তৃণমূলের নেতারা বলেন, ‘এখন আমাদের রাজত্ব, যা মনে করব সেটাই করতে হবে।’ এরপর থেকে নানা ভাবে হুমকি আসতে থাকে।” তাঁর আরও অভিযোগ, এরমধ্যেই সোমবার সপরিবারে নদিয়ার মাটিয়ারিতে আদি বাড়িতে যান তিনি। বুধবার ফিরে দেখেন, সদর দরজায় তালা এবং তৃণমূলের পতাকা টাঙানো। তালা ভেঙে বাড়ির ভিতর ঢোকেন তিনি। এর ঘন্টাখানেক পরেই কিছু লোক তৃণমূলের পতাকা হাতে জোর করে বাড়িতে ঢুকে পড়ে। তারপর তমালবাবু ও শ্যামলবাবুর নাম করে বলে, ওঁদের নির্দেশ আছে, বাড়ি ছেড়ে দিতে হবে। তিনি প্রতিবাদ করলে তাঁকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে ফের তৃণমূলের পতাকা টাঙিয়ে দরজায় তালা মেরে দেওয়া হয় বলে ষড়াননবাবুর অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ষড়াননবাবুর আদি বাড়ি মাটিয়ারিতে। কাটোয়ার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বাড়ির মালিক ছিলেন ষড়াননবাবুর দিদিমা দুলালী কর্মকার। তিনি ২০১০ সালের ২৭ অক্টোবর বাড়িটি নাতি ষড়াননবাবুকে দান করেন। এরপর মাঝেমধ্যেই ওই বাড়িতে থাকতেন তাঁরা। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “আদালত যা নির্দেশ দেবে, তা আমরা মানতে বাধ্য।” কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক তথা প্রদেশ কংগ্রসের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কাটোয়ায় এই ধরণের ঘটনা অবাঞ্ছিত।” সিপিএমের কাটোয়া জোনাল কমিটির সম্পাদক অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “এটাই তৃণমূলের চরিত্র।”
শুক্রবার চাউলপট্টি রোডের ওই বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, দোতলার ব্যালকনিতে ‘জনজাগরণ সঙ্ঘ’র ফ্লেক্স টাঙানো রয়েছে। তার দু’পাশে উড়ছে তৃণমূলের পতাকা। তবে অভিযুক্ত নেতা শমীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “ষড়াননবাবুর বাবা কাটোয়া শহর-সহ আশপাশের এলাকায় প্রচুর পরিবারের টাকা আত্মসাতে অভিযুক্ত। ভুক্তভোগী পরিবারগুলিই সম্ভবত টাকা পাওয়ার জন্য ওই ঘটনা ঘটিয়েছে।” আর এক অভিযুক্ত শ্যামলবাবুর দাবি, যাঁরা বাড়ির দখল নিয়েছেন তাঁরা তৃণমূলের সমর্থক হতে পারেন। তবে কাটোয়া পুরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তথা বীরভূমের তৃণমূল জেলা সম্পাদক অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। আমাদের দলের কেউ ওই ঘটনায় থাকতেই পারে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.