ঝলঝলিয়ার রেল পার্ক এখন দুষ্কৃতীদের আড্ডা
রেলের উদাসীনতায় প্রাক্তন মন্ত্রী গনি খান চৌধুরীর নিজের হাতে গড়া মালদহ রেল পার্ক সংস্কারের অভাবে ভেঙে পড়েছে। গোটা পার্কটা ঝোপে ভরে গিয়েছে। এক সময় রেল পার্কে ৬০ ফুট উঁচু রঙিন আলোর ফোয়ারা দেখতে অনেকে ভিড় করতেন। কৃত্রিম পাহাড়ের ফাঁকে ঝরনা বইত, পাতাল রেঁস্তোয়ায় খাওয়ার জন্য লাইন পড়ত। এখন সে সব ইতিহাস। মালদহ টাউন স্টেশন সংলগ্ন ওই পার্ক এখন সাপ ও সমাজবিরোধীর আড্ডা। তাই স্থানীয়েরা পার্কমুখো হতেই ভয় পান।
মালদহ টাউন স্টেশন সংলগ্ন এই এলাকায় আগে ৭০-৮০ বিঘার একটি পচা জলা ছিল। দুর্গন্ধে স্টেশনে টেকা যেত না। গনি খান চৌধুরী রেল মন্ত্রী হওয়ার পর, ১২ ডিসেম্বর ১৯৮২ জলায় রেল পার্ক শিলান্যাস করেন। এর পর মাটি ভরাট করে, রাতদিন কাজ করিয়ে পার্ক গড়ে তোলেন। ১৯৮৩ সালের ১৩ অগস্ট গনিখান চৌধুরী রেল পার্ক উদ্বোধন করে জেলার মানুষের জন্য খুলে দেন। কিন্তু তিনি মারা যাওয়ার পরই রেলপার্কের সংস্কার বন্ধ হয়ে যায়। বাতিস্তম্ভ চুরি হতে হতে গোটা পার্ক অন্ধকার হয়ে পড়ে। চুরি হয়ে যায় পার্কের নামী দামী গাছও। ধীরে ধীরে পার্ক জঙ্গলে ভরে যায়।

ঝোপে ভরেছে গনি খানের সাধের উদ্যান। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়।
ঝলঝলিয়া এলাকার এক জন বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী সুনীল সেন বলেন, “আমরা স্থানীয় বয়স্করা মিলে প্রাতর্ভ্রমণ আর সন্ধ্যায় পার্কে জমিয়ে আড্ডা দিতাম। কিন্তু গনি খান মারা যাওয়ার পরে সব কিছুই বদলে গেল। ঝোপঝাড়ে ভরা পার্কের কাছে যেতেই রীতিমতো ভয় করে।”
স্থানীয় বিধায়ক রাজ্যের পযর্টন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাককালীন ওই পার্ক সংস্কার করার জন্য ১০ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেন। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশে জঙ্গল কেটে রেল নতুন কিছু গাছ লাগায়। বাকি টাকা লুঠ হয়ে গিয়েছে। ফলে যে কে সেই। জঙ্গলে ভরেছে রেল পার্ক।”
রেল পার্কের এই হালে মালদহ ডিভিশনের রেল কর্তাদেরই দুষেছেন গনি পরিবার। তাঁর ভাই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, “দাদা রেলমন্ত্রী হওয়ার পরে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ৯ মাসে এই রেল পার্ক গড়ে তুলেছিলেন। এখন জঙ্গলে ভরে যাচ্ছে। দিল্লিতে রেলমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে রেল পার্ক সংস্কারের টাকা বরাদ্দের দাবি জানাব।” ডিআরএম মালদহ ডিভিশন রবীন্দর গুপ্ত বলেন, “শুধু পার্ক সংস্কার করে রক্ষণাবেক্ষণ আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ওই রেল পার্ককে চিল্ড্রেনস রেল মিউজিয়াম করার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। রেল বোর্ড অনুমোদন করেছে। কিন্তু কাজ শুরুর অনুমোদন মেলেনি। তা এলেই চিল্ড্রেনস রেল মিউজিয়ামের কাজ শুরু হবে।” ডিআরএম বলেন, “লাইন বসিয়ে ৩ কামরার একটি ট্রেন চালু হবে। ছোট ছোট স্টেশন তৈরি করা হবে। গ্যালারি তৈরি করে ১০০ বছর আগে রেল কেমন ছিল তা দেখানে হবে। ছোটদের জন্য রেস্তোরাঁ তৈরি হবে।” ইংরেজবাজার পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান এলাকার বাসিন্দা নরেন্দ্রনাথ তেওয়ারি এ প্রসঙ্গে বলেন, “অনেক দিন ধরেই শুনছি রেল পার্কে চিল্ড্রেনস মিউজিয়াম করা হবে। কিন্তু তা কোথায় হচ্ছে? সংস্কার না হওয়ায় দুষ্কৃতী, সাপের আড্ডা হয়েছে সেটি।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.