প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামায় তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সেলের এক নেতাকে ২৫ কিলোমিটার দূরে বদলি করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার কোচবিহারের ওই ঘটনা নিয়ে দলের মতবিরোধ প্রকাশ্যে চলে এসেছে। দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা পূর্ত দফতরের সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ওই সিদ্ধান্তকে হঠকারী বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, “এই ধরনের হঠকারি সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হবে না। এই ব্যাপারে দলের রাজ্য নেতৃত্বকে অভিযোগ জানানো হবে।”
কোচবিহার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কল্যাণী পোদ্দার বৃহল্পতিবার এই প্রসঙ্গে বলেন, “নিয়ম মেনেই বদলি করা হচ্ছে। তার মধ্যে যে কেউই পড়তে পারেন। তা ছাড়া রবীন্দ্রনাথবাবু আমার দফতরের মন্ত্রী নন। তাই তার কথা আমার শোনার প্রয়োজন নেই। আমার দফতরের মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নির্দেশ মেনে কাজ হচ্ছে।”
প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসে শিক্ষা সেলের কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক জিল আহমেদ দিনহাটা ১ নম্বর ব্লকের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ। তিনি তাঁর বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে জারিধরলা পঞ্চম পরিকল্পনা স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। এই দিন তাঁকে সিঙ্গিমারি গভর্নমেন্ট প্রাথমিক স্কুলে বদলি করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) তপন সিংহ এই দিন বলেন, “ওই শিক্ষককে যে শুধু বদলি করে দেওয়া হয়েছে তাই নয়, ওই সংগঠনের জেলা সভাপতি দেবাশিস করকেও বদলি করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
দেবাশিসবাবু এই দিন জানিয়েছেন, শিক্ষা সংসদের চেয়ারপার্সেনের কাজ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে তাঁরা বিরোধিতা করে আসছেন। নানা সময়ে যে ভাবে স্কুলের শিক্ষকদের বদলি করা হচ্ছে তাতে অস্বচ্ছতা রয়েছে বলে তাঁদের দাবি। ওই সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে, যে স্কুলে শিক্ষকের প্রয়োজন নেই সেখানে শিক্ষক বদলি করা হচ্ছে। কিন্তু যে স্কুলে শিক্ষকের প্রয়োজন সেখানে তা দেওয়া হচ্ছে না। বুধবার এই নিয়ে চেয়ার পার্সেনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে ওই সংগঠনের তরফে জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক)-কে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। অভিযোগ, এর পরেই ওই সংগঠনের নেতাদের বদলি করার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষা সেলের কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক জিল আহমেদ দাবি করেন, জারিধরলা পঞ্চম পরিকল্পনা স্কুলে শিক্ষক রয়েছেন ৪ জন। তিনি দ্বিতীয় শিক্ষক। তাঁর থেকে জুনিয়র আরও দুই জন রয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী বদলি করার হলে জুনিয়র শিক্ষকদের আগে করতে হয়। কিন্তু সেখানে তাঁদের বদলি না করে তাঁকেই বদলি করা হয়েছে। তিনি এই দিন বলেন, “বিষয়টি আমি জেলা নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছি।” অন্য দিকে দেবাশিসবাবু বলেন, “যেহেতু চেয়ার পার্সেনের কাজে অস্বচ্ছতার জন্য আমরা আন্দোলন শুরু করেছি, সে কারণেই ওই বদলি করা হয়েছে। আমাকেও বদলির হুমকি দেওয়া হয়।” চেয়ারপার্সন বলেন, “অভিযোগ ঠিক নয়, নিয়ম মতোই সব কাজ হচ্ছে।” |