উপনির্বাচনে শিলিগুড়ি পুরসভার ফের পরিবর্তনের আঁচ লাগবে কি না সেই প্রশ্নটাই উঠছে ঘুরে ফিরে। গত পুর নির্বাচনে কংগ্রেস -তৃণমূল জোট গড়ে শিলিগুড়ি পুরসভায় পরিবর্তন এনেছে। তবে তার পরেও তৃণমূলের সঙ্গে বিরোধের জেরে বাইরে থেকে বামেদের সমর্থন নিয়ে বোর্ড চালিয়েছে কংগ্রেস। কখনও তারা তৃণমূলের সঙ্গে জোট গড়ে চালালেও পরে তা থেকে বেরিয়ে যায় রাজ্যের শাসক দল। এই পরিস্থিতিতে দুটি ওয়ার্ডে উপনির্বাচনের ফল পুরবোর্ডের চেহারা কতটা পাল্টে দিতে পারে তা নিয়েই আলোচনা চলছে।
৪৭ আসনের শিলিগুড়ি পুরসভায় বর্তমানে ১৭ জন বাম কাউন্সিলর রয়েছেন। গত পুর নির্বাচনে কংগ্রেস এবং তৃণমূল ১৫ টি করে আসন পায়। ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর ইস্তফা দেন। কংগ্রেসের কাউন্সিলর নান্টু পাল দলত্যাগ করেন গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মামলা করেন কংগ্রেসের কাউন্সিলররা। নান্টুবাবু শেষ পর্যন্ত পদ থেকে ইস্তফা দিলে ওই দুটি ওয়ার্ডে উপনির্বাচন হচ্ছে। |
শিলিগুড়ির রাস্তায় ভোটের সাজ। ছবিটি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক। |
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব জানান, দুটি আসনের ফল নিয়েই তাঁরা আশাবাদী। জিতলে তাঁরা ফলের পর দিনই এই পুরবোর্ডের বিরুদ্দে অনাস্থা আনবেন। তাঁর কথায়, “আমরা ২টি আসনে জিতে অনাস্থা আনার জন্য তৈরি হচ্ছি।” প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য জানান, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের কাউন্সিলর তাদেরই দলের লোকদের দোষারোপ করে ইস্তফা দিয়েছেন। বাসিন্দারা জানেন, ওই ওয়ার্ডে তৃণমূলের পরিস্থিতি। গত নির্বাচনের সময় শাসক দলে থাকায় তাদের কাছে মানুষের আশা ছিল বেশি। তা পূরণ না হওয়ায় কিছু মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। এখন বিরোধী আসনে থেকে তাঁরা মানুষের বেশি সমর্থন পাচ্ছেন বলে দাবি করেন অশোকবাবু।
পক্ষান্তরে, কংগ্রেস নেত্রী তথা মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত জানান, দুটি ওয়ার্ডে তারা মানুষের সমর্থন পাবেন বলে আশাবাদী। সংখ্যালঘু হলেও বর্তমানে পুরবোর্ডে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। তাদের বিরুদ্ধে কোনও দল অনাস্থা আনতে গেলে ন্যুনতম ১৬ জন কাউন্সিলর দরকার। বামেরা অনাস্থা আনার পক্ষে নন। তৃণমূলের ১৬ জন কাউন্সিলর না থাকায় তারা অনাস্থা আনতে পারছেন না। উপনির্বাচনে ২ টি আসন পেলে তবেই তারা অনাস্থা আনতে পারেন।
গত পুর নির্বাচনের ফল বলছে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী জিতেছিলেন নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে মাত্র ৭২ ভোটের ব্যাবধানে হারিয়ে। ১১ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড়িয়ে ১০৪৪ ভোটে জিতেছিলেন নান্টু পাল। গত পুর নির্বাচনে কংগ্রেস -তৃণমূল জোট হয়ে লড়েছিল। এখন জোট নেই। বামেরা সে সময় রাজ্যে শাসক দলে ছিলেন। এখন তারা বিরোধী। সেকারণে তাদের পক্ষে ভোট কিছুটা কমার আশঙ্কা রয়েছে। তবে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট না থাকায় বাম বিরোধী জোট ভাগ হবে। তা নিয়েই আশাবাদী বামেরা।
এ দিন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত, ডেপুটি মেয়র সবিতা দেবী অগ্রবাল এবং অন্য মেয়র পারিষদদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধি ভেঙে নির্দিষ্ট সময় সীমার পরেও ভোটের প্রচার চালানোর অভিযোগ তোলে তৃণমূল। নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ তুলে পুলিশে অভিযোগও করেন তারা। মেয়র, ডেপুটি মেয়ররা অবশ্য ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। |