মাত্র একটি ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচন। তাকে ঘিরেই সরগরম অশোকনগর-কল্যাণগড় পুর এলাকা।
আজ, শুক্রবার রাজ্যের পাঁচটি পুরসভার সঙ্গে উপ-নির্বাচন হতে চলেছে অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডেও। ২০১০ সালের পুর নির্বাচনে ওই পুরসভার ২২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ২০টিতে জিতে প্রথম বারের জন্য ক্ষমতা দখল করে। বাকি দু’টি আসন পায় সিপিএম। পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর হন বিপ্লব সরকার। কিন্তু সম্প্রতি তিনি সরকারি চাকরি পেয়ে কাউন্সিলর পদ থেকে পদত্যাগ করায় উপ-নির্বাচন হচ্ছে।
কিন্তু এই নির্বাচন ঘিরে পারদ চড়েছে রাজ্যের শাসক দলের অন্দরেই। বিরোধীরা বলছেন, ভোট ঙিরে শাসক দলের গোষ্ঠী-কোন্দল ফের প্রকাশ্যে এসেছে। কারণ, দলের টিকিট না পাওয়ায় নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে পড়েছেন এলাকার দীর্ঘদিনের তৃণমূল সমর্থক হিসেবে পরিচিত বাপ্পা দাস। তিনি পুরসভার চেয়ারম্যান সমীর দত্তের অনুগামী হিসেবে পরিচিত। বাপ্পাবাবুর হয়ে এলাকার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের একাংশকে প্রচার করতেও দেখা গিয়েছে। সেই দলে রয়েছেন ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল সভাপতি সুমিত দাসও। ওই ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী করেছে চিকিত্সক সময় হীরাকে। প্রচারে দলের কর্মী-সমর্থকদের সকলের সমর্থন তিনি পাননি বলে নিজেই মেনে নিচ্ছেন। কর্মী-সমর্থকদের একাংশ জানিয়েছেন, সময়বাবু ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা না হওয়ায় তাঁকে মেনে নিতে পারছেন না।
তবে, ভোটের ময়দানে লড়াই নিয়ে বাপ্পাবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি। সুমিতবাবুর কথায়, “তৃণমূলের প্রতীকে যিনি দাঁড়িয়েছেন, বাম আমলে তিনি বিভিন্ন নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে বামপ্রার্থীদের সহযোগিতা করেছেন। ফলে, তাঁকে প্রার্থী করাটা এলাকার কর্মী-সমর্থকেরা মানতে পারেননি।” পুরসভার চেয়ারম্যানের দাবি, “আমরা দলের প্রার্থীর হয়েই প্রচার করেছি। দলের প্রার্থীই জিতবেন।” নির্দল প্রার্থীর পিছনে দলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশ রয়েছে মেনে নিয়ে ওই এলাকার তৃণমূল বিধায়ক ধীমান রায়ও দাবি করেছেন, দলীয় প্রার্থীই জিতবেন। সময়বাবু বলেন, “প্রচারে দলের সব অংশকে পাইনি এটা ঠিক। তবে, জেতার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না।” নির্দল প্রার্থী ছাড়াও সময়বাবুকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে সিপিআই, কংগ্রেস এবং বিজেপি প্রার্থীদের সঙ্গেও। রাজনৈতিক মহল অবশ্য মনে করছে লড়াইটা হবে ত্রিমুখী। নির্দল, তৃণমূল এবং বামপ্রার্থীর মধ্যে। অশোকনগরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সত্যসেবী করের দাবি, “তিন বছরে পুরসভার কাজে মানুষ তিতিবিরক্ত। এর প্রভাব পড়বে ভোটের ফলে।”
ওই ওয়ার্ডে মোট ভোটদাতা ৪০৩০ জন। পাঁচটি বুথে আজ ভোটগ্রহণ হবে। এ জন্য কড়া পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ডে ঢোকা ও বেরনোর পথে পুলিশি তল্লাশি চলছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। থাকবেন ১০০ জন পুলিশকর্মী। পাঁচটি গাড়িতে টগলদারি চলবে বলে জেলা পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী জানিয়েছেন। |