দড়ির ফাঁসে মৃত্যু সিপিএম নেতার, চিঠিতে অভিযোগ
ভাড়াবাড়িতে গলায় দড়ির ফাঁসে ঝুলন্ত অবস্থায় মিলল ভাটপাড়ার প্রাক্তন সিপিএম কাউন্সিলর মানিক বিশ্বাসের (৬০) দেহ। পুলিশ সূত্রের খবর, মানিকবাবুর ঘর থেকে আট পাতার একটি চিঠি মিলেছে। হাইকোর্টের বিচারপতি থেকে ভাটপাড়ার পুরপ্রধান অর্জুন সিংহের মতো অনেককে উদ্দেশ্য করে লেখা সেই চিঠিতে নিজের কিছু আত্মীয়-পরিজন এবং স্থানীয় সিপিএম নেতাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন মানিকবাবু।

মৃত মাণিক বিশ্বাস।
—নিজস্ব চিত্র।
তার মধ্যে সিপিএমের রাজ্য কমিটি তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নেপালদেব ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়া এমনকী সম্প্রতি তাঁকে নিঃস্ব করে বাড়ি থেকে তাড়ানোর চেষ্টার অভিযোগও রয়েছে। নেপালবাবু অবশ্য বলেন, “আমি মানিকবাবুর চিঠি দেখিনি। তাই এই নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। সঠিক তদন্ত হোক।”
ব্যারাকপুরের অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার শুভঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অস্বাভাবিক মৃত্যুর একটি মামলা দায়ের হয়েছে। দেহটি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। চিঠির বিষয়বস্তু বা আত্মহত্যায় প্ররোচনা সম্পর্কিত কোনও অভিযোগ আসেনি।’’
মানিকবাবুর স্ত্রী রিঙ্কু বিশ্বাসের অভিযোগ, ‘‘নিজেদের বাড়ি থাকা সত্ত্বেও শরিকি ঝামেলায় সেখানে আমাদের ঠাঁই হয়নি। ভাড়াঘরে নিঃস্ব অবস্থায় দিন কাটছিল। বাড়িওয়ালা বাড়ি ছাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। আমার স্বামী সিপিএম করতেন। কিন্তু নেপালবাবু-সহ দলেরই কয়েক জন নেতা ও মহিলা সমিতির সদস্যেরা বাড়িতে চড়াও হয়ে সালিশির নামে যে ভাবে আমাদের দিনের পর দিন হেনস্থা করেছেন, সেটা আর আমার স্বামী নিতে পারেননি।”
মানিকবাবুর পৈতৃক বাড়ি স্থানীয় বাবুরানি পাড়ায়। ২০০৭ সালে সেই বাড়ি ছেড়ে এলাকারই একটি বাড়ির দু’টি ঘর ভাড়া নিয়ে স্ত্রী ও দুই ছেলের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন তিনি। রিঙ্কুদেবীর অভিযোগ, ‘‘বছর দুয়েক ধরেই বাড়িওয়ালা বনশ্রী হালদার ঘর ছাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। সম্প্রতি মহিলা সমিতিকে সামনে রেখে নেপালবাবুরা তাতে মদত দিচ্ছিলেন।” তাঁর দাবি, সম্প্রতি স্থানীয় সিপিএম নেতাদের উপস্থিতিতে একটি সালিশি সভা হয়েছিল। তাতে নভেম্বরে ঘর ছাড়ার কথা বলা হয়।
যদিও বাড়িওয়ালা বনশ্রী হালদার বলেন, ‘‘ওঁদের বিষয়ে আমি সহমর্মীই ছিলাম। কিন্তু আমিও নিঃস্ব মানুষ। বাড়ি ভাড়াই এক মাত্র আয়ের পথ। ওঁরা দীর্ঘদিন ভাড়া দিচ্ছিলেন না। ভাড়া না পেলে আমারই বা চলবে কী করে? ওঁদের তা বহু বার বলেছি। কিন্তু এই ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক।” ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ভাটপাড়া পুরসভার কাউন্সিলর ছিলেন মানিকবাবু। সেই সময়ে কিছু আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি পুরপ্রধান তথা তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহের কাছের মানুষ বলেও পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন তিনি। তবে সিপিএম ছাড়েননি। দলের নেতারা অবশ্য প্রায় কেউই তাঁর সম্পর্কে কথা বলতে চাননি। ভাটপাড়া জোনাল সম্পাদক রামপ্রসাদ কুণ্ডু সাফ বলে দেন, ‘‘মানিক বিশ্বাসের ঘটনা নিয়ে আমি কিছু বলতেই চাই না।’’ অর্জুনবাবুর বক্তব্য, ‘‘সিপিএমের ভাল লোকেদের মধ্যে উনি ছিলেন এক জন। তাই ওঁকে নিজের দলেই ব্রাত্য হতে হয়েছিল।’’





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.