টাকা ভর্তি ব্যাগ ফেরাল কুলি
ভোর সওয়া পাঁচটায় তেমন ভিড় জমেনি নবদ্বীপ ধাম রেল স্টেশনে। এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে ধীরে ধীরে ঢুকছে দিনের প্রথম কাটোয়াগামী ডাউন ব্যান্ডেল লোকাল। ট্রেনে যাত্রী বিশেষ নেই বললেই চলে। প্রতি কামরায় শাকসব্জির ঝুড়ি নিয়ে দু-একজন করে সব্জি বিক্রেতা। স্টেশনে ওই ট্রেনের সব্জি নামানোর জন্য অপেক্ষা করছিলেন রেলের লাইসেন্সপ্রাপ্ত কুলি গৌতমকুমার রায়। অভ্যস্ত চোখে খুঁজছিলেন কোন কামরায় আছে সব্জির ঝাঁকা। হঠাত্‌ ট্রেনের চার নম্বর কামরার মাঝামাঝি একটা সিটে কালো রঙের একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। কামরায় উঠে ব্যাগটি তুলে গৌতমবাবু সোজা চলে যান স্টেশন মাস্টারের ঘরে।
স্টেশন মাস্টার পুষ্পক দাস বলেন, “তার একটু আগেই আমার কাছে সমুদ্রগড় স্টেশন থেকে খবর এসেছে যে, ওই স্টেশনে এক যাত্রী তাঁর ব্যাগ ডাউন ট্রেনে ফেলে রেখে নেমে পড়েছেন। আমরা যেন নবদ্বীপে ট্রেনটি তল্লাশি করি। সেই মতো ব্যবস্থা নিতে গিয়ে দেখি রেল কুলি গৌতম ব্যাগটি ট্রেন থেকে নামিয়ে এনেছে। সঙ্গে সঙ্গে খবর পাঠাই সমুদ্রগড় স্টেশনে। ওঁরা জানান, যাঁর ব্যাগ তিনি নবদ্বীপ আসছেন।” এরপর সড়ক পথে নবদ্বীপ ষ্টেশনে পৌঁছন ব্যাগের মালিক তাপস বসু। শান্তিপুর নৃসিংহতলার বাসিন্দা তাপসবাবু পেশায় কাপড় ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, “আমি কালনা থেকে ৩টে ৫০ এর প্রথম ডাউন ব্যান্ডেল লোকাল ধরে সমুদ্রগড়ের হাটে আসছিলাম। সঙ্গে ওই ব্যাগটি ছাড়াও কাপড়ের একটা বড় গাঁট ছিল। তাড়াতাড়ি নামার সময়ে ব্যাগটি নিতে ভুলে যাই।” তাপসবাবু বলেন, “ওই ব্যাগে ছিল ৭৩ হাজার টাকা এবং তার থেকেও বহু মূল্যবান ব্যবসা সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র। টাকা না পেলেও সামলে নিতে পারতাম। কিন্তু কাগজপত্রগুলো না পেলে আমি শেষ হয়ে যেতাম। ওই ছেলেটির কাছে আমি সারা জীবন ঋণী হয়ে থাকলাম। তাঁকে ধন্যবাদ জানানোর কোনও ভাষা নেই।” বিহারের বাসিন্দা গৌতমবাবু অবশ্য এসব নিয়ে খুব বেশি ভাবতে রাজি নন। ভাঙা ভাঙা বাংলায় তিনি বলেন, “এটা আমার কর্তব্য। যাঁর ব্যাগ তিনি ফিরে পেয়েছেন, ব্যাস। এটাই ভাল লাগা।” তাপসবাবু অবশ্য কোনও আপত্তি শুনতে চাননি। জোর করে এক হাজার টাকা গুঁজে দিয়েছেন গৌতমবাবুর হাতে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.