শৌচাগার তৈরির অর্থ মিলছে ১০০ দিনের প্রকল্পেও
‘ভারত নির্মাণ অভিযান’ প্রকল্পে শৌচাগার তৈরির জন্য সাড়ে ৫ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। যার মধ্যে উপভোক্তাকে দিতে হত ৯০০ টাকা, আর বাকি ৪৬০০ টাকা দেওয়ার কথা কেন্দ্রীয় সরকারের। কিন্তু এই টাকায় কি উন্নত শৌচাগার বানানো সম্ভব? এই প্রশ্ন ওঠায় এ বার এই খাতে শৌচাগার পিছু আরও সাড়ে চার হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। বাড়তি অর্থ দেওয়া হবে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প থেকে।
বৃহস্পতিবারই ভিডিও কনফারেন্সে জেলাগুলিকে এ কথা জানিয়ে দিয়েছে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) পাপিয়া ঘোষ রায়চৌধুরী বলেন, “একশো দিনের কাজের প্রকল্প থেকেও রাজ্য সরকার শৌচাগার পিছু সাড়ে চার হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে শৌচাগার পিছু ব্যয় ধরা হল ১০ হাজার টাকা। উপভোক্তারা ৯০০ টাকা দিলেই হবে।” তাঁর কথায়, “এতে ভাল শৌচাগার নির্মাণ সম্ভব হবে।”
এই কার্যসূচি ইতিমধ্যেই বড় আকারে শুরু হয়ে গিয়েছে নদিয়ায়, জানালেন এনআরইজিএস কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার। তিনি এখন রাজ্যে ‘ভারত নির্মাণ অভিযান’-এর দায়িত্বেও রয়েছেন। দিব্যেন্দুবাবু জানান, ‘সবার শৌচাগার’ নাম দিয়ে একটি অভিযান শুরু করেছে নদিয়া জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদ। গত আড়াই মাসেই ৩০ হাজার শৌচাগার বানানো হয়েছে। এই আর্থিক বর্ষে এক লক্ষ শৌচাগার বানানোর লক্ষ্য নিয়েছে নদিয়া।
১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে মজুরি এবং নির্মাণসামগ্রী, এই দুই মিলিয়ে বরাদ্দ খরচ করা হয়। সে হিসেবে শৌচাগার পিছু ২৭০০ টাকার মজুরি এবং ১৮০০ টাকার নির্মাণসামগ্রী দেওয়ার কথা। কিন্তু ঠিক সেই অনুপাত না থাকলেও ক্ষতি নেই, জানান দিব্যেন্দুবাবু। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারেরই নির্দেশ, ৬০-৪০ অনুপাত গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে রাখলেই চলবে, প্রতিটি কাজে তা রাখার দরকার নেই।” সম্পদ তৈরি করাই এই প্রকল্পের কাজ, এবং শৌচাগার একটি পরিবারের স্থায়ী সম্পদ, এই দৃষ্টভঙ্গী থেকেই ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে শৌচাগার তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যাঁদের বাড়ি তৈরি হচ্ছে শৌচাগার, তাঁর জবকার্ড থাকলে তিনি নিজেই মজুরি পেতে পারেন। না হলে অন্য কোনও শ্রমিকও জব কার্ডে কাজ করতে পারে।
মঙ্গলবার ছিল বিশ্ব শৌচাগার দিবস। সেই উপলক্ষে ওই দিন মেদিনীপুর জুড়ে প্রচারের জন্য ট্যাবলো বের হয়। ওই ট্যাবলো ঘোরার কথা প্রতিটি ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েতে। পাশাপাশি এ বিষয়ে গুরুত্ব দিতে আরও দুটি পদক্ষেপ করা হয়েছে। যেমন, পড়ুয়াদের নিয়ে পদযাত্রা ও প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও শৌচাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত পঞ্চায়েত কর্মীদের নিয়ে দু’দিনের আবাসিক কর্মশালা। প্রশাসন জানিয়েছে, পড়ুয়ারা সচেতন হলে বাড়িতে গিয়ে তারা শৌচাগার নির্মাণের জন্য অভিভাবকদের জানাবে। এতে অভিভাবকদের উৎসাহ বাড়বে। আর কর্মশালায় জানানো হবে, কী ভাবে উপভোক্তাদের কাছ থেকে ৯০০ টাকা সংগ্রহ করা হবে, এবং শৌচাগারটি নিয়ম মেনে তৈরি হচ্ছে কিনা, তা দেখা। কারণ, শৌচাগার ঠিক ভাবে তৈরি হয়েছে কি না, এই শংসাপত্র দেবেন সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত প্রধান।
বৃহস্পতিবার থেকেই প্রথম দফার কর্মশালা শুরু হয়েছে জেলা পরিষদে। ধীরে ধীরে সব গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ও কর্মীদের নিয়েই কর্মশালা হবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মশালা থেকে নানা তথ্যও উঠে আসছে। যেমন, প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ শৌচাগার থাকলেও তা ব্যবহার করেন না। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও শৌচাগার তালাবন্ধ থাকে। কী ভাবে এর মোকাবিলা করা যায়, সে ব্যাপারেও চিন্তা ভাবনা শুরু হয়েছে। এ দিনের কর্মশালায় জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ জারিনা বেগম ও শিশু ও নারী কল্যাণ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ কাবেরী চট্টোপাধ্যায়, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.