পরিবারের কিছু লোক দাবি করেছিলেন ছাদ থেকে পড়ে মারা গিয়েছেন বছর সাতাশের আব্বাস আলি লস্কর। গত ১৪ অক্টোবর ঘটনাটি ঘটে চণ্ডীতলার নবাবপুরে। পুলিশকে কিছু না জানিয়ে দেহ কবরও দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ঘটনার দিন পনেরো পরে আব্বাসের স্ত্রী রোজিনা পুলিশের কাছে অভিযোগ লিখিত অভিযোগে জানান, তাঁর স্বামীকে খুন করা হয়েছে। এক নিকটাত্মীয়ই আব্বাসকে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলেছে বলে দাবি করেন রোজিনা। আদালতের নির্দেশে আব্বাসের দেহ কবর থেকে তুলে ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়।
কিন্তু বৃহস্পতিবার দেহ আনতে গেলে সমস্যায় পড়তে হয় পুলিশকে। মৃতের শ্যালককে মারধর করে এলাকার কিছু লোক। বাধা দিতে গেলে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। শেষমেশ অবশ্য লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয় তারা। দেহ তুলে এনে ময়না-তদন্তে পাঠানো গিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৪ অক্টোবর রাতে নবাবপুরে নিজেদের বাড়ির একতলার ছাদ থেকে পড়ে যান আব্বাস। তাঁর মাথায় আঘাত লাগে। স্থানীয় নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাড়ির লোকজন বা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পুলিশকে জানাননি।
এ দিন সকালে চণ্ডীতলা ১ বিডিও পৃথ্বীশকুমার সামন্ত এবং স্থানীয় সার্কেল ইনস্পেক্টর দাউদ মনসুর মহম্মদ চণ্ডীতলা থানার পুলিশকে নিয়ে কবর থেকে দেহ তুলতে যান। অনেক গ্রামবাসী সেখানে ভিড় জমান। পুলিশ জানায়, রোজিনার এক ভাই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। মৃতদেহ কবর থেকে তুলে ফেলার পরে কয়েক জন গ্রামবাসীর সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। অভিযোগ, এর পরেই ওই যুবককে মারধর করতে শুরু করে গ্রামবাসীরা। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে জনতা ক্ষেপে ওঠে। এ বার পুলিশকে লক্ষ্য করেই ইট-পাটকেল ছোড়া হয়।
হামলাকারীদের বিরুদ্ধে পৃথক একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। রাত পর্যন্ত কেউ অবশ্য গ্রেফতার হয়নি। আব্বাসের দেহ ময়না-তদন্তের জন্য কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এসডিপিও (শ্রীরামপুর) রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওখানে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া হয়েছিল। হামলাকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।” আব্বাস দেহরাদূনে একটি সোনার দোকানে কাজ করতেন। ১৪ অক্টোবর সস্ত্রীক নবাবপুরে আসেন। সঙ্গে এক মামাতো ভাই এবং এক ভাগ্নেও আসে। তারাও দেহরাদূনে গয়নার দোকানে কাজ করেন। মৃতের বাড়ির লোকজন জানিয়েছেন, ১৪ তারিখ রাতে খাওয়া সেরে আব্বাস ও তাঁর ভাই ছাদে ওঠেন। এরপরে ওই ঘটনা। পুলিশের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট নয়। এফআইআর করতে কেন দু’সপ্তাহ লাগল, পুলিশ তা-ও দেখছে। |