সেতুর মেরামতি দূর অস্ত, কোয়েলের জল ভাঙাই নিয়তি
ই তেরো পেরিয়ে চোদ্দ বছরে পা দিল ঝাড়খণ্ড রাজ্য। কিন্তু কাজের কাজ কী হচ্ছে?—সেই প্রশ্নই বিভিন্ন ক্ষেত্রে বার বার দেখা দিচ্ছে। পলামুর কেঁচকি সঙ্গমে রয়েছে এমনই এক নজির। ২০১০ সালে সেখানে কোয়েল নদীর উপরে তৈরি হয়েছিল লাতেহার আর পলামুর সংযোগকারী একটি সেতু। কিন্তু তৈরি হওয়ার এক বছরের মধ্যেই সেতুটি ভেঙে পড়ে। তারপর থেকে সেতুর স্মৃতি সম্বল করে সেটি ভেঙেই পড়ে আছে। সেতুটি ঠিক করার কোনও উদ্যোগই নেই সরকারের। গত তিন বছর ধরে পায়ে হেঁটে নদীর জল ভেঙেই শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা যাতায়াত করছে স্থানীয় মানুষ।
কোয়েল নদীর ধারে রাজ্য বন দফতরের যে বাংলোয় সত্যজিৎ রায় ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ ছবির শুট্যিং করেছিলেন সেটির অদূরেই এই ভাঙা সেতু। সেতুর এক দিকে লাতেহারের কেঁচকি, আর অন্য দিকে পলামুর অফসানি।
কোয়েলের উপরে এই সেই ভেঙে পড়া সেতু। জল ভেঙে পারাপার অব্যাহত। ছবি: প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়।
স্থানীয় মানুষের কথায়, মুখ্যমন্ত্রীর গ্রামীণ সেতু যোজনায়, ৭ কোটি টাকা খরচ করে কোয়েলের উপরে সাতশো মিটার লম্বা সেতুটি তৈরি হয়েছিল। সেতুর অদূরেই কোয়েলের সঙ্গে মিশেছে ঔরঙ্গা নদী। যে কারণে ওই জায়গাটি ‘কেঁচকি সঙ্গম’ নামে পরিচিত। বেতলা ন্যাশনাল পার্ক থেকে আট কিলোমিটার দূরে কেঁচকি সঙ্গম। নদীর আশপাশে লাতেহারের দিকে রয়েছে অফসানি, চেচানি, পিহারে, মায়াপুরের মতো অন্তত আট থেকে দশটি গ্রাম। আর পলামুর দিকে কেঁচনি, টোকরা, সোকরা-সহ বিভিন্ন গ্রাম। সেতু ভেঙে পড়ার পর ফের আগের মতো হেঁটেই নদী পারাপার করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই সংলগ্ন এলাকার মানুষের। বর্ষাকালে নদীর জল বাড়লে গ্রামের কিছু মানুষ নদীতে নৌকো নামিয়ে লোকজনকে পারাপার করান। মাথা পিছু নৌকো ভাড়া পঁচিশ থেকে ত্রিশ টাকা ।
কেঁচকিতে, কোয়েলের পাড়ে দাঁড়িয়ে নজর যায় নদীতে, শীতের সকালে ঠাণ্ডা জল ভেঙে পায়ে হেঁটে নদী পার হচ্ছেন এক বৃদ্ধ, কোলে-হাতে বাচ্চা নিয়ে এক দম্পতি। পলামুর সোকরা গ্রামের বাসিন্দা ঘুঁচু ওঁরাওয়ের কথায়, “এখন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের কোমর সমান জল রয়েছে নদীতে। ছোটরা ডুবে যাবে। তা সত্ত্বেও পায়ে হেঁটে নদী পার হওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।” তাঁর কথায়, ঘুরে আসতে গেলে খরচ অনেক। তার থেকে জল ভাঙাই ভাল।
স্টেট রুরাল ওয়ার্কস বিভাগের প্রধান সচিব সন্তোষ শতপথি জানান, পঞ্জাবের একটি সংস্থা ওই সেতুটি তৈরি করেছিল। সেটি ভেঙে যাওয়ার পরে তাদেরই বলা হয়েছিল ফের সেতুটি নির্মাণ করে দিতে। কিন্তু এ পর্যন্ত তারা কিছু করেনি। ওই সংস্থাকে ‘ব্ল্যাক লিস্টেড’ করা হয়েছে। কীভাবে ফের ওই সেতুটি তৈরি করে দেওয়া যায় তা নিয়ে তাঁরা চিন্তা-ভাবনা করছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.