চরম অবহেলার শিকার দক্ষিণ দিনাজপুরের সবুজ উদ্যান ‘আরণ্যক’ ফের সাজিয়ে তুলে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করতে উদ্যোগী বালুরঘাট পঞ্চায়েত সমিতি। ডিসেম্বরে পিকনিক মরসুম শুরু হওয়ায় আগেই একগুচ্ছ প্রকল্প নিয়ে সংস্কার কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সদ্য ক্ষমতায় আসা তৃণমূল পঞ্চায়েত বোর্ড। বালুরঘাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রবীর রায় বলেছেন, “প্রশাসনের সহায়তায় নতুন সাজে সাজিয়ে আরণ্যকের হৃতগৌরব ফিরিয়ে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা হবে।” তিনি বলেন, “টাকার অভাব হবে না। শীঘ্রই সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনিক স্তরে এই বিষয়ে বৈঠক হয়েছে।” বালুরঘাটের বিডিও শুভ্রজিৎ গুপ্ত বলেন, “প্রাথমিক ভাবে আরণ্যক সংস্কারে ৩০ লক্ষ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প-সহ নানা তহবিলের টাকায় ওই কাজ করা হবে।”
নব্বইয়ের দশকে শহর লাগোয়া খানপুর এলাকায় বিস্তীর্ণ খাসজমি ও দুটি জলাশয়কে কাজে লাগিয়ে প্রায় ছয় বিঘার শিশু উদ্যান গড়ে তোলে বাম পরিচালিত বালুরঘাট পঞ্চায়েত সমিতি। পরে সেখানে বনসৃজন করে জলাশয়ে মাছ চাষ, বোটিং-সহ সাজিয়ে পিকনিক স্পট গড়ে তুলে পার্কটির নাম দেওয়া হয় আরণ্যক। অল্প দিনেই তা জেলাবাসীর প্রিয় হয়ে ওঠে। শহর লাগোয়া শান্ত-সবুজে ভরা ওই উদ্যানে টিকিট কেটে দলে দলে মানুষ ভিড় করতেন। এর পরেই পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আর অবহেলায় বন্ধ হয়ে যায় আরণ্যক। পার্কটি ক্রমে দুষ্কৃতীদের দখলে যায়। রাতে পিকনিক স্পটের গাছ কেটে নিয়ে যায় তারা। সীমানা পাঁচিলের ইট, লোহার গ্রিল, অফিস ঘরের দরজা জানলাসবই ধীরে ধীরে উধাও হয়ে যায়। সমাজবিরোধী তাণ্ডব ঠেকাতে এলাকায় এক সময় পুলিশ পাহারাও বসাতে হয়েছিল। কিন্তু বাম আমলে বন্ধ হওয়া আরণ্যকের হাল বদলায়নি। উদ্যানটির দুর্দশায় জনমানসে ক্ষোভ হয়। পঞ্চায়েত ভোটে বিষয়টি তুলে ধরে প্রচার করে তৃণমূল। তাই ক্ষমতায় এসেই আরণ্যক সংস্কারে উদ্যোগী পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীরবাবু বলেন, “আরণ্যক পার্ককে পর্যটনের জায়গা হিসাবে গড়ে তোলার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে পঞ্চায়েতের আয়ও বাড়বে। সেউ সঙ্গে বাড়বে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের সুযোগ। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত কাজ শুরুর চেষ্টা চলছে।” |