|
|
|
|
গণপরিষদ ভোটে এগিয়ে নেপালি কংগ্রেস
নিজস্ব প্রতিবেদন |
নিজভূমে ধরাশায়ী হতে চলেছেন মাওবাদী শীর্ষনেতা প্রচণ্ড।
নেপালের গণপরিষদ নির্বাচনে (কনস্টিটুয়েন্ট অ্যাসেম্বলি) পিছিয়ে পড়ছেন মাওবাদীরা। ‘কাঠমান্ডু ১০’ কেন্দ্রে নেপালি কংগ্রেস প্রার্থী রাজন কে সি-র কাছে পরাস্ত হয়েছেন খোদ পুষ্পকুমার দহাল ওরফে প্রচণ্ড। পাশাপাশি, ‘কাঠমান্ডু ১’ কেন্দ্রে প্রচণ্ডের মেয়ে রেনু দহাল পরাজিত হয়েছেন নেপালি কংগ্রেসের জেনারেল সেক্রেটারি প্রকাশ মানসিংহের কাছে। গণপরিষদ নির্বাচনে বিপর্যয়ের মুখে সংযুক্ত সিপিএন (ইউনিফায়েড কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল)-মাওবাদী জোট। এখনও পর্যন্ত গণপরিষদ নির্বাচনে ছ’টি আসন দখল করেছে নেপালি কংগ্রেস। সিপিএন-ইউএমএল পেয়েছে পাঁচটি আসন। কিন্তু, নির্বাচনে বিপর্যয়ের আভাস পেয়েই হুঙ্কার ছেড়েছেন প্রচণ্ড। বলেছেন, ভোটগণনা স্থগিত করতে হবে। কারণ, ভোটের সময় ‘চক্রান্ত’ হয়েছে। পার্লামেন্ট বয়কটেরও ডাক দিয়েছেন তিনি। নেপালের মাওবাদীদের এই নয়া হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে নেপালে ফের রাজনৈতিক সঙ্কটের সৃষ্টি হতে চলেছে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, ‘কাঠমান্ডু ১০’ কেন্দ্রে প্রচণ্ডকে ২০ হাজার ৩৯২ ভোটে পরাজিত করেছেন নেপালি কংগ্রেস প্রার্থী রাজন কে সি। এই কেন্দ্র থেকে প্রচণ্ড পেয়েছেন ১২ হাজার ৮৫৯ ভোট। এমনকী, সিপিএন-ইউএমএল (ইউনাইটেড মার্কসিস্ট লেনিনিস্ট) প্রার্থী সুরেন্দ্র মানানধরও তাঁর থেকে বেশি ভোট পেয়েছেন। এই কেন্দ্র থেকেই ২০০৮-এ বিশাল ব্যবধানে জিতেছিলেন প্রচণ্ড। এ বারে ‘সিরাহা ৫’ কেন্দ্র থেকেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন প্রচণ্ড। এখানে অবশ্য তিনি এগিয়ে রয়েছেন। |
|
হারের খবর শোনার পর সাংবাদিক বৈঠকের পথে প্রচণ্ড। বৃহস্পতিবার। ছবি: এএফপি। |
সাত বছর আগে মাওবাদীরা অস্ত্র নামিয়ে রাখার পর থেকেই নেপালে কার্যত রাজনৈতিক অচলাবস্থা চলছে। দীর্ঘ এক দশকব্যাপী গৃহযুদ্ধ শেষে এখানে ছ’টি সরকার এলেও এই অচলাবস্থা কাটেনি। রাজতন্ত্রের অবসানের পরেও যথাযথ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রয়োগ না হওয়ায় নেপাল নিয়ে সংশয় ও উদ্বেগ রয়েছে বিভিন্ন মহলে।
সংযুক্ত সিপিএন-মাওবাদী জোট আজ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ভোট চলাকালীন চক্রান্ত এবং অস্বাভাবিক কাজকর্মের জন্য জনগণের প্রত্যাশা ও মতামত অনুযায়ী ভোটগণনা হয়নি। তাই ভোটগণনা স্থগিত করে দিতে হবে।’ মাওবাদীদের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের পরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তারা ভোটগণনা পর্ব থেকে তাদের প্রতিনিধিদের প্রত্যাহার করবে।
যদিও ভোটগণনা স্থগিত রাখার যে দাবি প্রচণ্ডের দল করেছে, তা খারিজ করে দিয়েছেন নেপালের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নীলকান্ত উপরেতি। আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “ভোটগণনা স্বচ্ছতার সঙ্গেই চলছে এবং তা চলবেও।” তাঁর কথায়: “ভোট হয়েছে অবাধ ও নির্ভয়ে। সুতরাং ভোটের ফল সকলকেই মানতে হবে।” পাশাপাশি, ভোটের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগে রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও আন্তর্জাতিক মহলকে ধৈর্য্য ধরার জন্য আবেদন জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
সুশীল কৈরালার নেতৃত্বে নেপালি কংগ্রেস সন্ধ্যা পর্যন্ত ৬৯টি কেন্দ্রে এবং সিপিএন-ইউএমএল জোট এগিয়ে আছে ৫৮টি কেন্দ্রে। যদিও সংযুক্ত সিপিএন-মাওবাদী জোট এগিয়ে আছে মাত্র ১৬টি আসনে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ ছাড়া মদহেসি পিপলস রাইটস ফোরাম-নেপাল ও মদহেসি পিপলস রাইটস ফোরাম ডেমোক্র্যাটিক দল এগিয়ে আছে যথাক্রমে ন’টি ও ছ’টি কেন্দ্রে। রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি এগিয়ে আছে তিনটিতে ও তরাই মদহেস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এগিয়ে আছে দু’টি কেন্দ্রে।
নতুন সংবিধান রচনার জন্য ৬০১ সদস্যের যে গণপরিষদ গঠিত হবে, তার মধ্যে ২৪০ জন্য সদস্য নির্বাচিত হবেন সরাসরি ভোটগ্রহণের মাধ্যমে। ২৬ জন সদস্যকে সরাসরি নির্বাচিত করবে সরকার। বাকি ৩৩৫টি আসনে সদস্যরা নির্বাচিত হবেন আনুপাতিক হারে ভোটের মাধ্যমে। |
|
|
|
|
|