প্রশাসনের দাবি খাস জমি, মানতে নারাজ সেনাবাহিনী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শালুগাড়ার বিকাশ নগরের জমি সেনাবাহিনীর নয় বলে জানিয়ে দিল জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। তাদের দাবি, জমিটি রাজ্য সরকারের অধীনে থাকা পুরোপুরি খাস জমি। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত জানাতে আরও সময় চাওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ির কাছেই ফুলবাড়ির কামরাঙাগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবিত উত্তরবঙ্গের সচিবালয়ের সামনে যে পরিবারগুলি দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছিলেন, তাঁদের এই জমিতেই পুনর্বাসন দিতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার।
বুধবার দুপুরে শালুগাড়ার রাজস্ব পরিদর্শকের দফতরে জেলার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর অফিসারদের বৈঠক হয়। সরকারি সূত্রের খবর, জমিটি খাস তা নিশ্চিত হতেই জেলা প্রশাসনের তরফে দুপুরের মধ্যেই সে কথা কলকাতায় জানানো হয়। সেখান থেকে রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র সেনাবাহিনীর উচ্চ পদস্থ অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের জমিটি খালি করে দিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিরা জমির দখল এখনই ছাড়তে রাজি নন। |
জমি-পাহারায় সেনা জওয়ান। শিলিগুড়ির শালুগাড়ায় বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি। |
এদিনের বৈঠকে সেনা প্রতিনিধিরা জানান, ১৯৮৩ সালে রাজ্য সরকারের কাছে ওই জমি চাওয়া হয়। রাজ্য সে সময়ে জমিটি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তাই জমিটি সেনাবাহিনীই ‘দেখভাল’ করত। স্থানীয় বাসিন্দারা সেটিকে খেলার মাঠ হিসাবে ব্যবহার করায় তারা আপত্তি করেনি। কিন্তু এখন যখন সেখানে রীতিমতো জমির পাট্টা দিয়ে পুনর্বাসন দেওয়া হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে জমির মালিকানার অগ্রাধিকার সেনাকেই দিতে হবে। তা ছাড়া, ওই এলাকার পাশেই ‘এয়ারফিল্ড’ রয়েছে। আর ওই জমিতে সেনার হেলিপ্যাড হওয়ার কথা। জলপাইগুড়ি অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি সংস্কার) দিব্যেন্দু দাস অবশ্য বলেন, “বিকাশনগরের জমিটি রাজ্য সরকারের। সেনাবাহিনী জমির মালিকানার কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তাও ওঁরা সময় চেয়েছেন। আমরা ওঁদের ২৫ নভেম্বরের মধ্যে কোনও কাগজপত্র থাকলে তা দেখাতে বলেছি।”
সেনা তাদের দাবি প্রতিষ্ঠা করতে না পারলেও প্রস্তাবিত মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের সামনের রাস্তা থেকে উচ্ছেদ হওয়া ২৪টি পরিবারকে এখনই পুনর্বাসন দেওয়া সম্ভব নয় বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। উদ্বাস্তু-পুনর্বাসন নিয়ে অস্বস্তি অব্যাহত সরকারি মহলেও। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “সেনাবাহিনীও যৌথ সমীক্ষা চেয়েছিল। তা হয়েছে। তবে জোর করে সেনাবাহিনী এ ভাবে জমির দখল নিতে পারে না। আর আমাদের
তরফে কোনও ভুল বা ত্রুটি থাকলে তা সংশোধন করা হবে। তবে পুনর্বাসনের বিষয়টি যেমন অগ্রাধিকার দিয়ে দেখা হবে, তেমনই স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবিও আমাদের বিবেচনার মধ্যে রয়েছে।” |