শেষ লগ্নের ভোট প্রচারে চনমনে সব দলই
কটি পুরবোর্ডের মেয়াদ ফুরোতে বাকি মাত্র ১০ মাস। অন্যটির দেড় বছর। দু’টি পুরসভা মিলিয়ে তিনটি ওয়ার্ডে উপনির্বাচনে প্রচারের ঘটা দেখে কিন্তু বোঝার উপায় নেই, নতুন কাউন্সিলরেরা কাজ করতে সামান্যই সময় পাবেন। শুক্রবার ভোট। তার আগে শিলিগুড়ির দু’টি ও জলপাইগুড়ির একটি ওয়ার্ডে ওই উপনির্বাচনের জন্য বুধবার প্রচারে নেমেছেন সব দলেরই হেভিওয়েটরা।
(বাঁ দিকে) শিলিগুড়িতে তৃণমূল ও (ডান দিকে)
সিপিএমের প্রচার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
শিলিগুড়িতে সিপিএমের তরফে জেলার কার্যকরী সম্পাদক জীবেশ সরকার, তৃণমূলের তরফে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, কংগ্রেসের তরফে শঙ্কর মালাকার, সুবীন ভৌমিক, গঙ্গোত্রী দত্তও বেলা ৩টে পর্যন্ত ওয়ার্ডে প্রচার করেছেন। বিজেপিও যথাসাধ্য শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করেছে। জলপাইগুড়িতেও তৃণমূলের তরফে চন্দন ভৌমিক, কংগ্রেসের পক্ষে পুর চেয়ারম্যান মোহন বসু, সিপিএমের পক্ষ থেকে জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন সাংসদ জিতেন দাসকেও ঘাম ঝরাতে দেখা গিয়েছে।
শিলিগুড়িতে ৩১ এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ডে উপনির্বাচন হচ্ছে। দলের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কাউন্সিলর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। সেই থেকে ৩ বছরের বেশি সময় ওই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নেই। অন্য দিকে গত বছর ২৭ সেপ্টেম্বর কলকাতায় তৃণমূল ভবনে গিয়ে দল ত্যাগের কথা জানান ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নান্টু পাল। দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলে তাঁর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে মামলা করেন কংগ্রেসের কাউন্সিলররা। আলাদা ভাবে হলেও বাম এবং কংগ্রেস কাউন্সিলররা তার বিরুদ্ধে সরব হন। তা নিয়ে জটিলতা চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত মাস কয়েক আগে তিনি ইস্তফা দেন। তাতে এই ওয়ার্ডে উপনির্বাচনের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। ১১ এবং ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী করেছে নান্টু পাল, জনা বাগচীকে। ওই দুই ওয়ার্ডে কংগ্রেসের প্রার্থী সৌরভ ভট্টাচার্য এবং পিউ ভট্টাচার্য। সিপিএমের উমা গোয়েল এবং দীপা বিশ্বাস, বিজেপির নন্দন দাস এবং পুষ্প দাস। জলপাইগুড়ি পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেসের কাউন্সিলর তারা রায়ের মৃত্যু হয়েছে। সে জন্য উপনির্বাচন হচ্ছে। তারাদেবীর আত্মীয় সুশীল সিংহকে প্রার্থী করেছে দল।
কংগ্রেসের মোটরবাইক মিছিল জলপাইগুড়িতে। ছবি: সন্দীপ পাল।
এ দিন দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা দলের উত্তরবঙ্গ কোর কমিটির সভাপতি গৌতম দেব অভিযোগ করেন, “কংগ্রেস পরিচালিত বর্তমান শিলিগুড়ি পুরবোর্ড বিভিন্ন নাগরিক পরিষেবা দিতে ব্যর্থ। আমরা ২০ মাস কংগ্রেসের সঙ্গে যৌথ বোর্ড চালালেও বাকি বেশির ভাগ সময়টাই সিপিএমের সমর্থন নিয়ে বোর্ড চালাচ্ছে কংগ্রেস। অনাস্থা আনার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক কাউন্সিলর আমাদের নেই। ওই দুই ওয়ার্ডেই মানুষ আমাদের ভোট দেবেন। দুটি ওয়ার্ডে জিতলে অনাস্থা আনার জন্য যে সংখ্যক কাউন্সিলর দরকার তা আমাদের হবে। ফলাফল সেই মতো হলে পর দিনই আমরা অনাস্থা আনব।” এমনকী অনাস্থা প্রস্তাবের খসড়াও তারা তৈরি করে রেখেছেন বলে জানান। শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “তৃণমূলের জন্যই ওই দুই ওয়ার্ডে উপনির্বাচন করতে হচ্ছে। তাদের জন্য দীর্ঘদিন ধরে পুরসভা অচল হয়ে রয়েছে। মানুষ তা ভালই বোঝেন। তারাই এর জবাব দেবেন।”
তবে ২৫ ওয়ার্ড বিশিষ্ট জলপাইগুড়ি পুরসভায় ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। ২০১০ সালের ভোটে মাত্র ৬২ বোর্ডের ব্যাবধানে কংগ্রেস প্রার্থী ওই ওয়ার্ডে জিতেছিলেন। সে যাত্রায় মাত্র ১টি আসনে জয়ী হয় তৃণমূল। তাই উপনির্বাচনে জিততে মরিয়া তৃণমূল।
তৃণমূলের প্রার্থী জয়দেব দেবশমা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি চন্দন ভৌমিক বলেন, “এটা ঠিকই যে শহরে আমাদের সংগঠনের কিছু ঘাটতি ছিল। তবে এই উপনির্বাচনই শহরবাসীকে নতুন বার্তা দেবে বলে আশা করছি।” পক্ষান্তরে, জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু কিন্তু পুরবোর্ডের কাজে মানুষ খুশি বলেই দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা শুধুই উন্নয়নের কথা বলছি। বাসিন্দারা জানেন, তাঁরা কেমন পরিষেবা পেয়েছেন। আমরা তাঁদের রায়ের উপরে ভরসা রাখি।”
সিপিএমের জলপাইগুড়ি সদরের জোনাল সম্পাদক জিতেন দাসরা কিন্তু, তাঁদের তরুণ প্রার্থী দীপক মিশিরকে নিয়ে আশাবাদী। প্রাক্তন সাংসদ জিতেনবাবু বলেন, “আমরা লাগাতার প্রচার করেছি। যথেষ্ট আশাবাদীও। কারণ, কংগ্রেস-তৃণমূলের কর্মকাণ্ড শহরবাসী দেখছেন।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.