মূল্যবৃদ্ধির আঁচে তরজা সূর্য-মমতার
মূল্যবৃদ্ধির আঁচে এ বার বিধানসভা প্রথম থেকেই উত্তপ্ত। তাতে বুধবার জুড়ল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের বাদানুবাদ।
তাঁর নির্ধারিত দিন না-হলেও এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ বিধানসভায় চলে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। এসেই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিবৃতি দিতে শুরু করেন। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা চেয়ে মঙ্গলবারই পৃথক ভাবে মুলতবি প্রস্তাব এনেছিল বিরোধী কংগ্রেস ও বামেরা। কিন্তু তাদের আলোচনার দাবি খারিজ হয়ে যায়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী ওই একই বিষয়ে বিবৃতি দিতে শুরু করার জেরেই এ দিন বিতর্ক বাধে।
বিরোধীদের আপত্তি খারিজ করে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “জনস্বার্থের বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিবৃতি দিতেই পারেন।” মুখ্যমন্ত্রীও বিরোধী দলনেতার দিকে আঙুল তুলে চিৎকার করে বলেন, “ইউ ক্যান নট গাইড মি!” আলোচনা না-করে একতরফা ভাবে মুখ্যমন্ত্রী যে সভায় কোনও বিষয়ে শুধু বক্তৃতা করতে পারেন না, সে কথা সূর্যবাবু উল্লেখ করতেই মমতার পাল্টা আক্রমণ, “এক দম রাজনীতি করবেন না!” এর পরে সূর্যবাবু কিছু বলার অনুমতি চাওয়ায় উত্তেজিত ভাবে মমতাই স্পিকারকে বলেন, “আপনি যদি মনে করেন, সূর্যবাবুকে দু’মিনিট বলতে দিন। তার পরে আমি বলব!”
কোন দলের কোন সদস্য কতক্ষণ বলবেন, তা নির্ধারণের এক্তিয়ার স্পিকারের। মুখ্যমন্ত্রী সেই বিধি ভেঙেছেন বলে সূর্যবাবুর অভিযোগ। তিনি বলেন, “মঙ্গলবারই বলেছিলাম, মুখ্যমন্ত্রীর সুবিধামতো একটা সময় আলোচনা হতে পারে। এক ঘণ্টা-আধঘণ্টা আলোচনা হোক। উনি একতরফা বলতে থাকলে সেটা আলোচনা নয়।” কোনও বিবৃতি দিতে গেলে সদস্যদের আগে তা লিখিত ভাবে জানাতে হয় বলেও দাবি করেন সূর্যবাবু। তাঁকে বাধা দিয়ে পাল্টা মুখ খোলেন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
পরিস্থিতি সামলাতে তখন স্পিকার সূর্যবাবুকে বলেন, “আপনারা অনেকেই দ্রব্যমূল্য নিয়ে মঙ্গলবার প্রশ্ন তুলেছিলেন। এখন বলুন!” ২৪ ঘণ্টা আগে খারিজ হয়ে যাওয়া প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সুযোগ দেওয়াটাও নিয়মবহির্ভূত বলে অভিযোগ সূর্যবাবুর। তাঁর বক্তব্য, “আমি আগে বলার অনুমতি চেয়েছিলাম। আগে আমাকে বলতে দিলে ভাল হত।” এর জবাবে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় পরে বলেন, “কালই তো ওঁরা (বিরোধীরা) চাইলেন মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হোক। মুখ্যমন্ত্রী সে জন্যই সে বিষয়ে বলতে চেয়েছেন। এতে এত চিৎকারের কী আছে!” বাম আমলে নন্দীগ্রাম, নেতাই, সিঙ্গুরের মতো ঘটনার সময়ও বিরোধী দল তৃণমূলের আবেদনে আমল দেওয়া হত না বলে পার্থবাবু পাল্টা অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, “আগের মুখ্যমন্ত্রী তো বিরোধী দলনেতাকে মেরুদণ্ডহীন বলেছিলেন! মুখ্যমন্ত্রী তো নিজে থেমে সূর্যবাবুকে বলার সুযোগ দিয়েছেন। সূর্যবাবুকে সম্মান দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আমরা তো এর ছিটেফোঁটাও পাইনি!”
মন্ত্রীদের কাছ থেকে কোনও প্রশ্নের জবাবও যে বিরোধীরা পান না, এ দিন ফের সেই অভিযোগ তুলেছেন সূর্যবাবু। সভায় তিনি বলেন, “আলুর দাম, শাকসব্জির দাম, সব বাড়ছে। রাজ্য সরকার ভূমিকা পালন করতে পারছে কি না, তা নিয়ে সবাই মিলে আলোচনা করতে পারি। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, ৩০ হাজার কৃষককে আলুর বীজ দেওয়া হবে, অথচ লক্ষ-লক্ষ কৃষক রয়েছে। তাঁদের কী হবে?” এমনকী, হিমঘর থেকে চাষিদের আলু বার করতে দেওয়া হচ্ছে না বলেও বিরোধী দলনেতার অভিযোগ। জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা যখন বুঝব, তখন আলু বার করব!” আলোচনার সুযোগ না মেলায় দিনের বাকি অংশের জন্য সভা থেকে ওয়াকআউট করেন কংগ্রেস বিধায়কেরা।
পরে সব্জি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে নবান্নে এ দিনই টাস্কফোর্সের বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠক শেষে টাস্কফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে জানান, চালের দাম যাতে অকারণে না বাড়ে, সে ব্যাপারে আড়তদারদের সতর্ক করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নুন নিয়ে ফাটকাবাজির চেষ্টা রাজ্য সরকার বরদাস্ত করবে না বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.