কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্যাগে সব্জি থাকলে সাইকেল থামিয়ে পুলিশ মালপত্র পরীক্ষা করছিল। ইদানীং ব্যাগে মশলাপাতি থাকলেও পুলিশ জোর করে আটকে রেখে হেনস্থা করছে। বরাবাজার থানার পুলিশের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে এ বার ঝাড়খণ্ডের কমলপুর থানার শুসনি গ্রামে কয়েক ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে রাখলেন বাসিন্দারা। এর জেরে ওই রাস্তা দিয়ে দুই রাজ্যের মধ্যে যান চলাচল ঘণ্টা ছয়েক ব্যাহত হয়। পরে ঝাড়খণ্ডের যুগশলাই কেন্দ্রের বিধায়ক রামচন্দ্র সহিস ও পুলিশ গিয়ে আশ্বাস দেওয়ার পরে অবরোধ ওঠে।
এ দিন সকাল ৮টা থেকে বরাবাজার ও ঝাড়খণ্ডের সীমানায় শুসনি গ্রামে অবরোধ শুরু হয়। যোগ দিয়েছিলেন শুসনি, বাঙ্গুড়দা, জামবনি, বড়াম প্রভৃতি কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৫০০ বাসিন্দা। পুরুলিয়ার বান্দোয়ানে যাওয়ার দু’টি রাস্তা রয়েছে। একটি বরাবাজার হয়ে, অন্যটি মানবাজার হয়ে। বরাবাজার থেকে বান্দোয়ানের দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। তার মধ্যে মাঝখানে ১২ কিলোমিটার রাস্তা ঝাড়খণ্ডের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। বুধবার এই রাস্তার শুসনি গ্রামে অবরোধ হয়। আটকে পড়ে জামসেদপুর ও পুরুলিয়ার মধ্যে চলাচলকারী যানবাহনও।
শুসনি গ্রামের অধর মাহাতো, বলহরি মাহাতো, বাঙ্গুড়দা গ্রামের সজন সিংদের অভিযোগ, “ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা হলেও আমাদের বাজার-হাট সব বরাবাজারে। বেশ কিছুদিন ধরে বরাবাজার থানার পুলিশ তল্লাশির নামে আমাদের রাস্তায় আটকে অহেতুক হয়রান করছে।” অধরবাবু দাবি করেন, বাড়িতে খাওয়ার জন্য বরাবাজার থেকে কয়েক কেজি আলু নিয়ে গেলেও পুলিশ তাঁদের আটকে দিচ্ছে। সজনবাবুর অভিযোগ, “সীমানার গ্রাম হওয়ায় এ রাজ্যের আত্মীয় কুটুম্ব বাড়িতে জিনিসপত্র পাঠালেও পুলিশ ব্যাগপত্র খুলে তল্লাশি চালাচ্ছে। দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখছে। সম্প্রতি পুলিশি তত্পরতা বাড়ায় তাঁদের যাতায়াত করতে অসুবিধা হচ্ছে। এর প্রতিবাদেই তাঁরা এ দিন অবরোধে সামিল হন।
ঝাড়খন্ডের যুগশলাই কেন্দ্রের আজসু দলের বিধায়ক রামচন্দ্র সহিস খবর পেয়ে সেখানে যান। তিনি বলেন, “দুই রাজ্যের বাসিন্দা হলেও সীমানার গ্রামগুলির আত্মীয়দের মধ্যে জিনিসপত্র আদানপ্রদান হয়। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ থেকে পড়শি রাজ্যে আলু পাঠানোর উপর কড়াকড়ি হওয়ায় পুলিশ সাধারণ বাসিন্দাদের হয়রান করছিল। পুলিশি বাড়াবাড়ি হবে না।” তাঁর এই আশ্বাসে অবরোধ ওঠে দুপুর ২টায়। বরাবাজার থানার আইসি অঞ্জন সাহা বলেন, “বাসিন্দাদের সঙ্গে পুলিশ কর্মীদের একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগও ঠিক নয়। অসাধু উদ্দেশ্যে কেউ আলু পাচার করছে কি না, তা আমরা নজরে রাখছি। তবে এ জন্য সাধারণ মানুষকে হেনস্থা করা হবে না।” |