মুড়িগঙ্গায় চর, ঝুঁকি নিয়েই চলছে পারাপার
দুপুর দেড়টায় মুড়িগঙ্গা নদীতে তখন ভাটা চলছে। সাগরের কচুবেড়িয়া ঘাট থেকে কাকদ্বীপের লট ৮ ঘাটে আসছিল একটি যাত্রীবাহী ভেসেল। কিন্তু পাড় থেকে নদীর ৫০ মিটার এলাকাতেই চর পড়ে গিয়েছে। ফলে ঘাটেই লাগানো যায়নি ভেসেল। তাই পাড়ে নামতে হলে দু’টো উপায়। হয় জোয়ার আসা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে, না হলে ভেসেল থেকে নদীতে নেমে সাঁতরে উঠতে হবে পাড়ে। স্বাভাবিকভাবে দ্বিতীয় উপায়ই বেছে নিচ্ছেন যাত্রীরা। সাগর থেকে কচুবেড়িয়া যাতায়াতের জন্য জীবনের ঝুঁকি নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।
পূর্ণিমা বা অমাবস্যার ভরা কোটাল ছাড়া মুড়িগঙ্গা নদীতে সারা দিনে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা ভেসেল চলাচল করতে পারে। বাকি সময়ে মাঝনদীতে আটকে পড়ে ভেসেল। ফলে ভোগান্তি হয় সাগরের প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষের। এর সঙ্গে রয়েছেন পুর্ণ্যাথীরা, যারা কপিল মুনির আশ্রম দেখতে সাগরের পথে পা বাড়ান।

চরার কারণে ভেসেল থেকে এ ভাবেই যাত্রী আনা নেওয়া করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ক্রমাগত পাড় ভাঙছে মুড়িগঙ্গা নদীর। আর তাতে যেমন চরা পড়ছে, তেমনই নষ্ট হচ্ছে লোকালয়। ভাঙনে ইতিমধ্যেই সাগরদ্বীপের পূর্ব দিকের আবাসবেড়িয়া গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। পার্শ্ববর্তী গোবিন্দপুর, সুমতিনগর, বিশালাক্ষীপুর গ্রামেরও অস্তিত্ব বিপন্ন। ঘোড়ামারা গ্রামের কিছুটা অস্তিত্ব থাকলে লোহাচরা গ্রামেরও কোনও অস্তিত্ব নেই। নাব্যতা হারাচ্ছে নদী।
এক দিকে যেমন নাব্যতার সমস্যা তৈরি হচ্ছে, তেমনই যেভাবে নদী পেরোতে হচ্ছে, তাতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে। বছর কয়েক আগেও একই কারণে নদীতে তলিয়ে মৃত্যু হয় বেশ কয়েক জন বৃদ্ধ ও শিশুর। তাঁরা ভিন রাজ্য থেকে কপিলমুনির আশ্রম দেখতে এসেছিলেন।
ভেসেল আটকে যাওয়ায় মাঝে মধ্যে অবশ্য ছোট নৌকা নামানো হয় চরা পড়ে যাওয়া অংশটিতে। পাড় থেকে মাঝ নদী অবধি যাত্রীদের পার করে দেয় নৌকা। তাতেও সমস্যা মিটছে না। দেখা যাচ্ছে, নৌকা থেকে ভেসেলটি প্রায় ১০ থেকে ১২ ফুট উঁচু। ফলে নৌকা থেকে কোলে নিয়ে ভেসেলে ওঠানো হচ্ছে যাত্রীদের। রয়ে যাচ্ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।
ইতিমধ্যে অবশ্য কাকদ্বীপ লট ৮ এক নম্বর থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে একটি কংক্রিটের জেটিঘাট তৈরির কাজ শুরু করেছে সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশা, সেটি সম্পূর্ণ হলে কিছু সুরাহা হবে।

জেটিতে পৌঁছনোর কসরত। —নিজস্ব চিত্র।
সাগরের বিধায়ক তথা জেলার বকখালি ও সাগর উন্নয়ন কমিটির চেয়ারম্যান বঙ্কিম হাজরা বলেন, “আমি ভূতল পরিবহণ দফতরে ও পরিবহণ মন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছি, যাতে বার্জ আরও বাড়ানো হয়। মুড়িগঙ্গা নদীর উপর সেতু নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যেই সার্ভে হচ্ছে।”
কাকদ্বীপের বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা বলেন, “গঙ্গাসাগর মেলা শুরুর আগেই ৪ নম্বর জেটির কাজ শেষ হয়ে যাবে। আর তাই জেটি ব্যবহার শুরু হলে ভাটার সময়ে জল কম থাকলেও মাঝনদীতে আটকে থাকতে হবে না ভেসেলকে। কারণ ওই ঘাটটির কাছে নদীর গভীরতা অনেক বেশি।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.