নামে কার্তিক লড়াই হলেও আসলে সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে পলাশিপাড়ার কার্তিক পুজো। এখানের লড়াই সামাজিক নানা ব্যাধি, কু-সংস্কারের বিরুদ্ধে, লড়াই অশিক্ষা-ভেদাভেদের বিরুদ্ধে। সেই লড়াইয়ে পুজো কমিটিগুলির পাশাপাশি সামিল হয়েছে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত। শুধু তাই নয়, সামিল এলাকার ১৮টি গ্রাম ছাড়াও মুর্শিদাবাদ এলাকার ৭টি গ্রামের মানুষ।
শনিবার থেকে পলাশিপাড়া এলাকায় শুরু হয়ে ছিল কার্তিক পুজো। বুধবার ছিল তার শেষ দিন। এ দিন সকাল থেকে এলাকার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা জড়ো হয়েছিল পলাশিপাড়া বাজারের সরু রাস্তার ধারে। রাস্তার দু’পাশের বাড়ির ছাদেও তিল ধারণের জায়গা ছিল না। শ্যামনগরের বৃদ্ধা উমারানি মণ্ডল বলেন, “বছর ভর এই দিনটির আপেক্ষায় থাকি। কত মানুষের দেখা মেলে এখানে। নানা সামাজিক শিক্ষার প্রসারে নানা রকম সেজে আসেন অনেকে।” এ দিনের শোভাযাত্রায় ট্যাবলোগুলির মাধ্যমে এক দিকে যেমন তুলে ধরা হয়েছে সতীদাহ প্রথার ঘটনা।, অন্যদিকে পাশের ট্যাবলোতেই দেখা গিয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে।
পলাশিপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের বিশ্বময়ী হালদার বলেন, “এই পুজো ঘিরে কার্তিক লড়াই আমাদের কাজ অনেকটা এগিয়ে দেয়। হাজার হাজার মানুষ এখানে জড়ো হয়। নানা সচেতনতা মূলক প্রচার সহজেই হয়ে যায়।” অনুষ্ঠানে ছিলেন তেহট্ট ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের বাসতুল্লা সেখ। তার কথায়, “কার্তিক লড়াই দেখতে এর আগেও অনেকবার এসেছি। এ বারও এসেছি সেই টানেই। আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েত এই আনুষ্ঠানে সহযগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কামনা করি, ভবিষ্যতে এই অনুষ্ঠান আরও সুন্দর হোক।”
স্থানীয় বাসিন্দা পলাশিপাড়া বাজার কমিটির সম্পাদক বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “একটা সময় কাটোয়া ও বেলডাঙ্গা এলাকায় আমরা কার্তিকের লড়াই দেখতে যেতাম। সেই শুরু। ভাবনা শুরু হয় আমরা দুরের গ্রামে দেখতে নয়, আমাদের এখানেই হবে লড়াই। সেই শুরু, এখনও চলছে সেই লড়াই।” |