|
|
|
|
হিসেব উল্টে দিতে চান ওডাফা |
পয়া স্ত্রীকে ডার্বিতে আনবেন চিডি
তানিয়া রায় • কলকাতা |
ডার্বিতে গোল করার লড়াইয়ে ওকোলি ওডাফার চেয়ে এখনও দু’কদম এগিয়ে এডে চিডি!
ডার্বিতে চিডির গোলসংখ্যা ৬ (১২ ম্যাচে)। আর ওডাফা করেছেন ৪ গোল (৬ ম্যাচে)। তবে চিডির থেকে ছয়টি বড় ম্যাচ কম খেলেছেন মোহনবাগান অধিনায়ক। এই পরিসংখ্যান তাঁর সামনে রাখা হলে হাসেন কিং কোবরা। “রবিবার থেকে হিসেবটা তো উল্টেও যেতে পারে।”
শান্ত স্বভাবের চিডি আবার নিজের লক্ষ্যে অবিচল। বৃহস্পতিবার বিকেলে মার্কোস ফালোপার বিদায়ী অনুষ্ঠানে এসেছিলেন স্ত্রী, কন্যার সঙ্গে। গাড়িতে ওঠার আগে বলছিলেন, “ডার্বি ম্যাচে আমার কাছে সব সময়ই স্পেশ্যাল। রবিবারের ডার্বিতে গোলের সংখ্যা আরও বাড়িয়ে নিতে চাই।” লাল-হলুদ স্ট্রাইকারের লক্ষ্য পরিষ্কার, ওডাফাকে আরও পিছনে ফেলে দেওয়া।
করিম বেঞ্চারিফা আর আর্মান্দো কোলাসোর হাতে যে গুটি কয়েক ‘টেক্কা’ আছে তার মধ্যে সবথেকে দামি সম্ভবত ওডাফা এবং চিডি।
গত মরসুমের প্রথম ডার্বিতে (৯ ডিসেম্বর, ২০১২) ওডাফার লাল কার্ডকে কেন্দ্র করেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল যুবভারতী। দল তুলে নেওয়ায় নির্বাসিত হয়েছিল মোহনবাগান। এই ঘটনার জেরে ওডাফার ফুটবল জীবনে নেমেছিল তীব্র অনিশ্চয়তা। সেই কলঙ্কিত ডার্বির কথা ভুলে যেতে চান ওডাফা। নতুন মরসুমে তাই প্রথম ডার্বিতেই তাঁর চ্যালেঞ্জ, “এ মরসুমে এখনও গোল পাইনি। ডার্বিতে গোল করে দলকে জেতাতে চাই। সব অপপ্রচারের জবাব দিতে চাই।” ওডাফা কতটা মরিয়া বোঝা যায় কথা বলার সময়।
কিছু দিন আগে ‘গো ব্যাক ওডাফা’ পোস্টার পড়েছিল বাগানে। সেই স্মৃতি এখনও টাটকা তাঁর। তবে এর জন্য অভিমান নেই সবুজ-মেরুন স্ট্রাইকারের। বললেন, “গোল পেলে এই সমর্থকরাই আমার জয়ধ্বনী দিয়ে পোস্টার মারবে। ও সব নিয়ে বেশি ভাবি না।”
চিডি আবার টানা সাত ম্যাচে গোল না পাওয়ায় তীব্র হতাশায় ডুবেছিলেন কয়েক দিন আগেই। সে সময় চিডির স্ত্রী আদাকু তাঁকে উদ্দীপ্ত করে গেছেন। “গোল না পেয়ে চিডি খুব হতাশ হয়ে পড়েছিল। আমি ওকে বলতাম, তুমি গোল পাবেই। গোল করা তোমার কাছে বড় বিষয় নয়। ইউ আর দ্য বেস্ট,” বলছিলেন চিডির ঘরণী। পাশে দাঁড়িয়ে চিডি তখন হাসছেন। গোল খরা থেকে মুক্তির হাসি। কলকাতা লিগের এরিয়ান ম্যাচে গোলে ফিরেছিলেন। তার পর জর্জ ম্যাচে হ্যাটট্রিক। হারানো আত্মবিশ্বাস আবার ফিরে পেয়েছেন ইস্টবেঙ্গলের গত বারের সর্বোচ্চ গোলদাতা। বললেন, “এ বার আমার স্ত্রী আর কন্যা গ্যালারিতে থাকবে। ওরা আমার জন্য লাকি। গোল আমি করবই।”
২০০৯-এর ২৫ অক্টোবর মোহনবাগানের পাঁচ গোলের ডার্বিতে চিডির স্ত্রী আদাকু মাঠে ছিলেন। সেই ম্যাচে সবুজ-মেরুন জার্সিতে চার গোল করেছিলেন চিডি। ম্যাচটা মোহনবাগান জিতেছিল ৫-৩-এ। চার বছর পর আবার ডার্বি দেখতে মাঠে আসবেন আদাকু। ‘লেডি লাক’ কি রবিবার কাজ করবে? লাল-হলুদ জার্সি গায়ে চিডি কী পারবেন চার বছর আগের ছবি ফেরাতে? লাজুক হেসে চিডির উত্তর, “ভাল কিছুরই আশা করছি। গোল না করলে কি স্ট্রাইকারদের দাম থাকে।”
নাইজিরিয়ায় চিডির লাগোসের বাড়ি থেকে ওডাফার বাড়ির দূরত্ব গাড়িতে ঘন্টা খানেকের। কাছাকাছি থাকার সুবাদে বেশ ভাল সম্পর্কও রয়েছে দুই স্ট্রাইকারের। কিন্তু রবিবারের ডার্বির নব্বই মিনিট অবশ্য দু’জনের সম্পর্ক যে সাপে-নেউলে হবে সেটা কথা বললেই বোঝা যায়।
দু’জনেই গোল চান। চান একে অপরকে হারাতে। কিন্তু ফুটবল ঈশ্বর কাকে রাজা করেন, কাকে করেন ফকির, সেটা দেখার জন্য রবিবার রাত পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতেই হবে। |
|
|
|
|
|