আজ থেকে সমীক্ষা শুরু মোগলমারিতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
মোগলমারির প্রত্নস্থল সমীক্ষার কাজ শুরু করল রাজ্য পুরাতত্ত্ব দফতর। বুধবার সকালেই ওই দফতরের কর্মীরা দাঁতনে পৌঁছন। দাঁতনের মোগলমারিতে ২০০৩-০৪ সাল থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে টানা ৯ বছর ছ’দফায় উৎখননে প্রচারের আলোয় এসেছিল ওই প্রত্নস্থল। তবে প্রায় দেড় বছর বন্ধ ছিল খনন। এ বারে খনন ও সংরক্ষণে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য পুরাতত্ত্ব ও সংগ্রহালয় দফতর।
আজ, বৃহস্পতিবার থেকেই রাজ্য পুরাতত্ত্বের কর্মীরা সমীক্ষার কাজ শুরু করবেন। বস্তুত, বৌদ্ধ গ্রন্থ দাঠাবংশের বিবরণ অনুযায়ী, খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতকে বুদ্ধের একটি দাঁত এই স্থানে ছিল। সেই সময় থেকেই এই স্থানটির নাম হয়ে যায় দন্তপুর। অনেকের মতেই এই দন্তপুরই আসলে দাঁতন। পরে জুয়ান জ্যাং বা হিউয়েন সাং-ও তাম্রলিপ্ত বন্দরে একাধিক বৌদ্ধবিহারের কথা বলেছিলেন। সেই অনুযায়ী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতত্ত্ব বিভাগের প্রয়াত অধ্যাপক অশোক দত্ত দাঁতনের মনোহরপুর গ্রামের মোগলমারিতে উঁচু ঢিবি দেখে খনন শুরু করেন। ছ’দফায় উৎখননের পরে এই প্রত্নস্থলকে জুয়ান জ্যাং কথিত তাম্রলিপ্ত এলাকার একটি বৌদ্ধবিহার বলেই দাবি করেছিলেন অশোকবাবু। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রত্নস্থলটি খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর সমসাময়িক। |
|
মোগলমারির প্রত্নস্থলের কাছেই একটি বাড়িতে পুজো হচ্ছে এই
দশম শতকের কালো পাথরের এই মূর্তিটির। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
গত বছর ২৩ মে পর্যন্ত চলেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুসন্ধান। তারপরে ধ্বংসের আশঙ্কায় এর প্রায় এক তৃতীয়াংশ মাটি চাপা দেওয়া হয়। তবে খোলা থাকা অংশে বৃষ্টির জলে ক্ষতি হচ্ছিল বলে স্থানীয়রা ক্ষোভ দেখাচ্ছিল। রাজ্য পুরাতত্ত্ব দফতর এ বার টানা অনেকদিন খননকার্য করবেন বলে জানিয়েছে। ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কাছেই একটি দ্বিতল সংগ্রহশালাও গড়া হবে। গত ১৫ নভেম্বর রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগের উপ-অধিকর্তা অমল রায়ের নেতৃত্বে দফতরের প্রতিনিধিরা এলাকা পরিদর্শন করেন। এ দিন ওই বিভাগের পুরাতত্ত্ববিদ বিনয় মুনির নেতৃত্বে দু’জন সমীক্ষক, দু’জন সহকারী ও একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়ে মোট ৬ জন দাঁতনে এসেছেন। আপাতত তাঁরা সেচ দফতরের বাংলোয় থাকবেন। আজ থেকে চলবে প্রাথমিক সমীক্ষার কাজ। পরে খননস্থলে ক্যাম্প করা হতে পারে বলে খবর। রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগের উপ-অধিকর্তা অমল রায় বলেন, “বৃহস্পতিবার থেকেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। আমি শুক্রবার যাব। তার পর থেকে টানা থাকার চেষ্টা করব। আগে সমীক্ষার কাজটা গুরুত্বপূর্ণ। তার পরে খনন। আমার নির্দেশে স্থানীয় শ্রমিকদের দিয়েই খনন করা হবে।”
|
পুরনো খবর: ফের খননকার্য শুরু হচ্ছে মোগলমারিতে |
|