|
|
|
|
তৃণমূলে কোন্দলের জের |
শ্রমিক নিয়োগ নিয়ে দ্বন্দ্ব, হাতাহাতি আইআইটি চত্বরে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের জেরে হাতাহাতি বাধল খড়্গপুর আইআইটি চত্বরে। গবেষণার নতুন ভবন নির্মাণে কোন গোষ্ঠীর লোক কাজ করবে, তা নিয়েই বচসার সূত্রপাত বলে জানা গিয়েছে। হাতাহাতিতে জখম হয়েছেন তালবাগিচার শ্রমিক দিব্যেন্দুকুমার রায়। তাঁকে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রেলনগরীতে কারখানায় ঠিকাশ্রমিক নিয়োগ নিয়ে গোলমাল বহুবারই হয়েছে। এ বার আইআইটিতেও সেই গোলমালের ছায়া পড়ছে। গত অক্টোবরে আইআইটি চত্বরে গ্যাস গুদাম সংলগ্ন পুকুর বাঁধিয়ে পার্ক তৈরির কাজে শ্রমিক নিয়োগ নিয়ে একপ্রস্থ অশান্তি হয়। তার জেরে থমকে যায় ওই সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প। এর পিছনেই তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল ছিল বলে অভিযোগ।
আইআইটির পুরোনো ভবন সংলগ্ন হিজলি স্টেশনের সীমানা ঘেঁষা এলাকায় নতুন একটি ভবন তৈরির কাজ চলছে। এখানেই থাকবে ‘সেন্ট্রাল রেলওয়ে রিসার্চ সেন্টার’। চারতলা ওই ভবনের জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৬ কোটি টাকা পরে। পরে ভবনের উচ্চতা বাড়লে বরাদ্দ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছর জুলাই থেকে এই ভবন তৈরির কাজ করছে ভুবনেশ্বরের এক ঠিকাদার সংস্থা। এই কাজে নির্মাণ শ্রমিক নিয়োগ ঘিরেই বারবার অশান্তি তৈরি হচ্ছে। সপ্তাহখানেক আগে খড়্গপুর টাউন থানার আইসি-র হস্তক্ষেপে স্থির হয়েছিল, প্রতিটি শ্রমিক সংগঠন থেকে সম-সংখ্যক শ্রমিক কাজ পাবে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই এলাকায় প্রভাবশালী প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর জহরলাল পাল এবং ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অপূর্ব ঘোষের অনুগামীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ রয়েছে। দু’পক্ষই আলাদা করে শ্রমিক নিয়োগ করতে চাওয়ায় গোলমাল বাধে। কাজের বরাত পাওয়া ঠিকাদার সংস্থার তরফে ওই প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যানেজার শিবানন্দ সাহা বলেন, “আমাদের কাজ বন্ধ হয়নি। তবে এই রাজনৈতিক লড়াইয়ে কাজে অসুবিধা হচ্ছে।”
তৃণমূল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এত দিন ভবন নির্মাণের কাজে অপূর্ব গোষ্ঠীর শ্রমিকরা কাজ করছিলেন। এ দিন জহর গোষ্ঠীর শ্রমিকেরা এলাকায় গিয়ে কাজের দাবি জানান। অভিযোগ, তাঁরা কাজেও বাধা দেন। তখন অপূর্ব গোষ্ঠীর শ্রমিকদের সঙ্গে হাতাহাতি বাধে। জখম হন জহর অনুগামী শ্রমিক দিব্যেন্দুকুমার রায়। তাঁর অভিযোগ, “অপূর্ববাবুর ছেলেরা আমার মাথায় মেরেছে।” ঘটনার পর দু’পক্ষই আইআইটি চত্বরেই হিজলি ফাঁড়িতে এসে মৌখিক অভিযোগ জানায়। খড়্গপুরের আইসি অরুণাভ দাস ঘটনাস্থলে গিয়ে ২৫ নভেম্বর আলোচনায় বসার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। জহরবাবুর অভিযোগ, “আইসি-র নির্দেশ মেনেই আমাদের শ্রমিকেরা কাজে গিয়েছিল। অপূর্ব ঘোষের মদতে কিছু লোক এসে তাঁদের মারধর করে।”
অপূর্ববাবুর আবার পাল্টা অভিযোগ, “জহরবাবুর ইন্ধনে কিছু লোক এসে কর্মরত শ্রমিকদের কোদাল কেড়ে নেয়। এর ফলেই গণ্ডগোল বাধে। পরে তা মিটে গিয়েছে।” খড়্গপুর আইআইটির রেজিস্ট্রার তপনকুমার ঘোষালের বক্তব্য, “এই ধরনের কার্যকলাপ যাতে বন্ধ হয়, তার চেষ্টা চলছে। আমরা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছিয়। পুলিশেও জানানো হয়েছে।” |
|
|
|
|
|