দলিল লেখকদের বিক্ষোভ-আন্দোলনের জেরে গত ৮ দিন ধরে হুগলির পুড়শুড়া ব্লকের জমিজমা-সংক্রান্ত নিবন্ধীকরণ দফতরটিতে (রেজিস্ট্রি অফিস) কোনও কাজ হচ্ছে না। পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে এলাকার মানুষ যেমন ক্ষুব্ধ, তেমনই অসহায়ও বোধ করছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই সরকারি আয় বন্ধ হয়েছে। দলিল লেখক সংগঠনের অভিযোগ-সহ নিবন্ধ রক্ষকের (সাব রেজিস্ট্রার) নানা অনিয়মের প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছে। বুধবার দলিল লেখকদের তরফে হুগলি জেলা পরিষদের সভাধিপতি মেহবুব রহমানের কাছে একটি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। সভাধিপতি বলেন, “দফতরটি সচল করতে খুব শীঘ্রই আলোচনায় বসা হবে।” যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে পুড়শুড়া সাব রেজিস্ট্রার পারমিতা পোল্লে বলেন, “সরকারি নিয়ম কার্যকর করাতেই দলিল লেখকদের একটা অংশ অসহযোগিতা শুরু করেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”
পুড়শুড়া নিবন্ধীকরণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জমির বাজারের মূল্য নির্ধারণ নিয়ে মাস খানেক ধরে অসন্তোষ প্রকাশ করছিলেন দলিল লেখকেরা। ১২ নভেম্বর থেকে কাজকর্ম সম্পূর্ণ বন্ধ। জানা গিয়েছে, ওই রেজিস্ট্রি দফতর থেকে সরকার মাসে গড়ে ২০ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় করে। কাজ বন্ধ হওয়ায় সেই সরকারি আয় এখন বন্ধ। পুড়শুড়া দলিল লেখক সমিতির সম্পাদক ধনঞ্জয় মণ্ডলের অভিযোগ, “সাব-রেজিস্ট্রার নিজের খুশি মত বাজার মূল্য নির্ধারণ করেন। আমরা সরকারি বাজার মূল্যের তালিকা চেয়েছি। তিনি তালিকা-পিছু ৩০০ টাকা চাইছেন। এ ছাড়া, অসুস্থ মানুষের বাড়ি গিয়ে কিছু রেজিস্ট্রি করার প্রয়োজন হলে মোটা টাকা দাবি করছেন। এই সব অনিয়মের প্রতিবাদেই আমরা বিক্ষোভ করছি।”
পারমিতা পোল্লের অবশ্য বক্তব্য, “সব অভিযোগই কাল্পনিক। সম্পত্তি কেনা বেচার ক্ষেত্রে সেটির নানা দিক বিবেচনা করে সরকারি বাজার মূল্য নির্ধারণ করা হয়। তার নির্দিষ্ট তালিকাও আছে। সম্পত্তির বিবরণে কোনও কারচুপি থাকছে কিনা, তার জন্য পরচা বা দলিল দেখতে চেয়েছি। কিন্তু দলিল লেখকেরা তা দেখাতে চাইছেন না। কেন দেখাতে চাইছেন না, তা সকলেই বুঝতে পারছেন। ওঁদের বিক্ষোভ অবস্থানের জেরে সরকারি আয়ও বন্ধ। মানুষ পরিষেবা পাচ্ছেন না।” পারমিতাদেবী জানান, গত আর্থিক বছরে রাজস্ব উঠেছিল প্রায় ২ কোটি টাকা। এ বছর তা ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা হয়ে থমকে রয়েছে। অথচ আমাদের লক্ষ্য ছিল ৩ কোটি টাকা।
মুখ্যমন্ত্রীর কথার দাম কমছে, কটাক্ষ সূর্যকান্তের। মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনে ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনায় সরব হলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। সিপিএমের হাবরা জোনাল কমিটির ডাকে বুধবার স্থানীয় দেশবন্ধু পার্কে এক সভায় সূর্যবাবু বলেন, “রাজ্যে সব জিনিসের দাম বাড়ছে। কমছে শুধু মুখ্যমন্ত্রীর কথার দাম।” নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির পিছনে অবশ্য কেন্দ্রের ভূমিকার কথাও অস্বীকার করেননি সূর্যকান্তবাবু। যদিও তাঁর বক্তব্য, ইউপিএ বা এনডিএ যারাই নীতি তৈরি করেছে, উনি (মমতা) তাতে শরিক ছিলেন। দিল্লিতে সরকার বদলে গেলে উনিও দল বদলান।” মমতাকে কটাক্ষ করে সূর্যবাবু আরও বলেন, “আমেরিকার কেউ এ দেশে এলে আগে কংগ্রেসের সঙ্গে দেখা করে। তারপর বিজেপির সঙ্গে। তৃতীয় কারও সঙ্গে দেখা করা মানে হল কলকাতায় এসে মমতার সঙ্গে দেখা করা।”
এ দিন সভায় আসার কথা ছিল সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক গৌতম দেবের। দলীয় সূত্রের খবর, সভার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার সময়ে অসুস্থ বোধ করায় আসেননি গৌতমবাবু। |