|
|
|
|
দলে পরিবারের রাশ কায়েম করতে পথে নামলেন রাবড়ী
স্বপন সরকার • পটনা |
লালুপ্রসাদের অভাব ঘোচাতে আরজেডি-র দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে লালু-পত্নী রাবড়ী দেবী এ বার দ্বিতীয় দফায় পরিবর্তনের ডাক দিয়ে বেরিয়ে পড়লেন জেলা পরিক্রমায়। দুই ছেলে তেজস্বী এবং তেজপ্রতাপকে নিয়ে তাঁর পরিবর্তন যাত্রা দলের মধ্যে পরিবারতন্ত্রের কর্তৃত্ব বজায় রাখার একটা কৌশল বলেও মনে করা হচ্ছে।
পরিবর্তনের জন্য সভা করার মধ্যেই গুঞ্জন উঠেছে লালুপ্রসাদের শূন্যতা পূরণে রাবড়ী দেবীর নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করাই এখন বিহারের এক নম্বর যাদব পরিবারের লক্ষ্য। নিজের দলকে যে ভাবে লালুপ্রসাদ পরিবার ভুক্ত করে রেখেছেন, সেই ধারা অব্যাহত রাখাটাই এখন রাবড়ী দেবীর কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। লালুর অবর্তমানে ইতিমধ্যেই দলীয় নেতৃত্বের প্রশ্নে মতভেদ তৈরি হতে শুরু করেছে। দলের অন্যরা মেনে নিলেও রাবড়ী ও পরিবারতন্ত্র নিয়ে আরজেডি-র প্রবীণ নেতা তথা বৈশালীর সাংসদ রঘুবংশ প্রসাদ সিংহে অসন্তোষ গোপন থাকেনি। তিনি বলছেন, “নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আমি কী দলের কাছে আবেদন করব!”
জেল থেকে লালু দল পরিচালনার চেষ্টা করছেন। রাশ রাখতে চাইছেন পরিবারের হাতেই। এটা যে রঘুবংশের মতো নেতারা বুঝতে পারছেন না, তা নয়। দলটাকে পরিবারের নিয়ন্ত্রণে রাখার যে চেষ্টা লালু করছেন তা কার্যত মেনে নিয়েও রঘুবংশের বক্তব্য, “আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। এর উপরে দাঁড়িয়ে কাজ করতে চাই। দলকে পরিবারের নিয়ন্ত্রণে রাখলে আমার কী করার আছে? কংগ্রেসেও তো একই ধারা চলছে।” এরপরেই তাঁর বক্তব্য, “দল এখন কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এই সময় এক সঙ্গে কাজ করছি।” রাবড়ী দেবী তো দলের দায়িত্ব নিয়ে প্রচারে বেরিয়ে পড়েছেন। প্রবীণ এই সাংসদের বক্তব্য, “তিনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। রাবড়ী দেবী তো নতুন নন।” আর রাবড়ীর নেতৃত্বের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘রাবড়ী দেবীর নেতৃত্বের বিষয়টি সকলেই জানেন। নতুন করে কী বলার আছে?”
আরজেডি-র এক সূত্রের কথায়, প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী লালু যখন জেলে যান তখনও দলে পরিবারতন্ত্রের বিরোধিতা করেন রঘুবংশ। লালুর ধারণা, রঘুবংশ দলের নেতা হতে চান। এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে একটা দ্বন্দ্বও রয়েছে। কিন্তু কেউই কাউকে ছাড়েননি রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কারণেই। এ বারেও একই রকম আশঙ্কা লালুর ছিল। সেই কারণেই ছেলেদের নিয়ে রাবড়ীকে দলের হাল ধরার বার্তা পাঠিয়েছেন লালু। একই বার্তা গিয়েছে তাঁর ঘনিষ্ঠ অনুগামীদের কাছেও। এরপরেই আর দেরী না করে, সংসার ফেলে রেখেই দুই ছেলেকে নিয়ে ‘পরিবর্তন যাত্রা’-য় সামিল হয়েছেন রাবড়ী দেবী। এক দিকে তাঁর যেমন লক্ষ্য বিজেপি ও জেডিইউ, তেমনই অন্যতম লক্ষ্য দলের মধ্যেই রঘুবংশকে ঠেকানো।
পরিবর্তন যাত্রায় বেরিয়ে রাবড়ী দেবী বিজেপিকে রাবণ এবং জেডিইউকে কংস নামে অভিহিত করে বলেছেন, “এদের বিরুদ্ধেই আমাদের লড়াই। রাবণ এবং কংস হিসেবে রাজ্যের মানুষের কাছে এরা প্রতিপন্ন হয়েছে।” বিজেপি নেতারা তাঁর বক্তব্যের কোনও জবাব দিতে নারাজ। জেডিইউ মুখপাত্র কে সি ত্যাগী তাঁকে রাজনৈতিক ভাবে উপেক্ষা করে বলেছেন, “গৃহিনী হিসেবে তাঁর সংসার সামলানো উচিত।” |
|
|
|
|
|