|
|
|
|
পাঁচ বছরে লাল থানহাওলার বয়স কমেছে দু’বছর
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি |
কথায় বলে দায়িত্ব আর চাপ মানুষকে বুড়িয়ে দেয়। কিন্তু এই প্রচলিত তত্ত্বকে দিব্যি ভুল প্রমাণ করে দিলেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লাল থানহাওলা। চারবারের মুখ্যমন্ত্রী আয়ে বাড়লেও, নিজের বয়সকে অন্তত ২ বছর কমিয়ে ফেলেছেন!
২০০৮ সালের নির্বাচনের সময় তিনি যে হলফনামা দাখিল করেছিলেন তাতে তাঁর বয়স লেখা ছিল ৬৮। সেই অনুসারে, পাঁচ বছর পর, এ বারের নির্বাচনে তাঁর বয়স হওয়া উচিত ৭৩। কিন্তু এ বার মনোনয়নপত্র দাখিল করার শেষ দিনে এসে রাংতুরজো ও সেরচিপ থেকে দাঁড়ানো কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী যে হলফনামা জমা দেন সেখানে তাঁর বয়স ৭১ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। হলফনামায় সত্য গোপন অপরাধ। রাজ্যসভার নির্বাচনের সময় প্রধানমন্ত্রীর বয়স-বিভ্রান্তি নিয়ে কম শোরগোল হয়নি। কিন্তু লাল থানহাওলা অবশ্য এখনও এ নিয়ে ভুল শোধরানোর পথে হাঁটেননি।
বয়স কমলেও মুখ্যমন্ত্রীর সম্পদের বেড়েছে। গত বার তাঁর ঘোষিত অস্থাবর সম্পত্তি ছিল ১১ লক্ষ ৯৪ হাজার ৫১০ টাকা। এ বার সেই পরিমান দাঁড়িয়েছে ৮৯ লক্ষ ৮৬ হাজার ২৪৭ টাকা। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরের মুখ্যমন্ত্রীত্বকালে তাঁর প্রায় ৭৯ লক্ষ টাকার সম্পদ বেড়েছে। তবে গত বার তাঁর কাছে দু’টি জিপসি ও একটি সাফারি গাড়ি থাকলেও এ বারের হলফনামা অনুযায়ী তাঁর একটিও গাড়ি নেই। স্ত্রীর রয়েছে একটি এসইউভি ও একটি সেডান গাড়ি। মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর পত্নীর কাছে থাকা সোনার পরিমাণ ৫ বছরে একই থেকে গিয়েছে। এমন কী সোনার দাম অনেক বাড়লেও তাঁদের কাছে থাকা সোনার মূল্যের কোনও হেরফের হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর জমি-বাড়ির বাজারদর প্রায় ৭ কোটি। তুলনায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন জঙ্গিনেতা জোরামথাঙ্গার অর্থনৈতিক অবস্থা হীনতর। তাঁর অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ মাত্র ১২ লক্ষ ৯ হাজার ৪৭৯ টাকা। স্থাবর সম্পতির মূল্য প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা।
লাল থানহাওলা ১৯৭৩ সাল থেকেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। ২০ বছর ধরে তিনিই মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় চার দশক ধরে রাজ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক দলের প্রধান হয়ে থাকা লালের পরিবারকে মিজোরা ‘লাল ছুংকুয়া’ বা ‘রাজ পরিবার’ আখ্যা দিয়েছে। সেই পরিবারতন্ত্রের নমুনা প্রার্থী তালিকাতেও প্রতিফলিত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সহোদর পরিষদীয় সচিব লাল থানজারা উত্তর আইজল ৩ নম্বর কেন্দ্র থেকে দাঁড়াচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দুই শ্যালক, ক্রীড়ামন্ত্রী জোডিংতুলুঙ্গা ও চার্লোসাংগা রালতে থোরাং ও পশ্চিম লুংলে থেকে কংগ্রেসের টিকিটে লড়বেন।
এবারের নির্বাচনে বিধানসভার ৪০টি আসনের জন্য ১৪২ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। গত বার মুখ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় চেনা আসন চাম্পাই থেকে হারবার পর, এ বার প্রধান বিরোধী নেতা জোরামথাঙ্গা পূর্ব তুইপুই থেকে দাঁড়াচ্ছেন। কংগ্রেস ও বিরোধী জোট মিজোরাম ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (এমডিএ) ৪০টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। জোরাম ন্যাশনালিস্ট পার্টি ৩৮টি ও বিজেপি ১১টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। কংগ্রেস ৩১ জন বিধায়ককেই তালিকায় রেখেছে। বাদ গিয়েছেন কেবল প্রাক্তন মন্ত্রী নিরূপম চাকমা। তালিকায় রয়েছে ৭টি নতুন মুখ। |
|
|
|
|
|