বাংলার শীতে এ বার বাধা হেলেন
ন্ধ্রপ্রদেশের পিছু ছাড়তে চাইছে না ঘূর্ণিঝড়! পিলিনের পর এ বার সেখানে হানা দিচ্ছে হেলেন। পুজোর সময় অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তরে, শ্রীকাকুলামে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় পিলিন। এ বার ওই রাজ্যেরই দক্ষিণ ভাগে আছড়ে পড়তে চলেছে বঙ্গোপসাগরে সদ্য তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়, ‘হেলেন’। এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে বাংলায় শীত আসার পথে সাময়িক বাধা আসতে পারে বলেও আবহবিজ্ঞানীরা মনে করছেন।
মৌসম ভবন বুধবার জানিয়েছে, গত দিন দুয়েক আগে বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছিল। সেটি শক্তি বাড়িয়ে এ দিন ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। নামকরণের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশের আবহবিদেরা এই ঝড়ের নাম দিয়েছেন ‘হেলেন’। মৌসম ভবন জানায়, এ দিন রাত পর্যন্ত অন্ধ্র উপকূল থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ঘূর্ণিঝড়টি। আজ, বৃহস্পতিবার রাত থেকে আগামিকাল, শুক্রবার সকালের মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের মছলিপত্তনম ও নেল্লোরের মাঝামাঝি কোনও জায়গা দিয়ে স্থলভূমিতে আছড়ে পড়বে সে। বিপদ আঁচ করে এ দিন রাতেই অন্ধ্র ও তামিলনাড়ুর জন্য ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা জারি হয়েছে।
মৌসম ভবনের ঘূর্ণিঝড় বিভাগের প্রধান মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেন, “ঘূর্ণিঝড়টি শক্তি বাড়াবে। বৃহস্পতিবার সকালে তা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।” আবহবিজ্ঞানীরা বলছেন, পিলিন আছড়ে পড়ে ওড়িশা-অন্ধ্র উপকূলে। ফলে দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টি হয়েছিল। হেলেন অন্ধ্র-তামিলনাড়ু উপকূলে আছড়ে পড়ায় তেমন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে আগামী দিন দুয়েক বাংলায় উত্তুরে হাওয়ার দাপট কিছুটা থমকাতে পারে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, “হেলেনের প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকে আকাশ মেঘলা থাকবে। এর ফলে দিনের তাপমাত্রা কমবে। রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।”
বাংলার শীত-ভাগ্যে অবশ্য আরও একটি বাধার আশঙ্কা করছেন আবহবিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলছেন, হেলেন স্থলভূমিতে আছড়ে পড়ার পরপরই আন্দামান সাগরে (দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর) আরও একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। সেটি কোন দিকে বয়ে আসবে, তার উপরেও বাংলার শীত-ভাগ্য অনেকটা নির্ভর করছে। কারণ, এই সময়ে নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আকাশ মেঘলা হওয়ার পাশাপাশি থমকে যায় উত্তুরে হাওয়ার গতি। ওই নিম্নচাপটি ওড়িশা-বাংলা উপকূলে বয়ে এলে শীতের পথে বড় কাঁটা হতে পারে সেটি।
মাস খানেক আগে হানা দেওয়া পিলিনের স্মৃতি এখনও দগদগে অন্ধ্রবাসীর মনে। এ বারও হেলেন-ও কি তেমন বিপর্যয় ঘটাবে? আবহবিদেরা বলছেন, পিলিন আছড়ে পড়ার সময় ঝড়ের বেগ ছিল ২০০ কিলোমিটারের বেশি। উপগ্রহ-চিত্রে অবশ্য এখনও হেলেনের তেমন মতিগতি ধরা পড়েনি। “হেলেন স্থলভূমিতে আছড়ে পড়ার সময় ১০০-১২০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইবে।”মন্তব্য মৃত্যুঞ্জয়বাবুর। বস্তুত, এ বছর অক্টোবর মাসের পর থেকে একের পর এক নিম্নচাপ-ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে। প্রশ্ন, বঙ্গোপসাগর কি নিম্নচাপ-ঘূর্ণিঝড়-প্রবণ হয়ে পড়ছে?
আবহবিদদের একাংশ বলছেন, সম্প্রতি প্রকাশিত আইপিসিসি-র পঞ্চম রিপোর্টে তেমন ইঙ্গিত মিলেছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের বিজ্ঞানী বলছেন, বর্ষা-পরবর্তী সময়ে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। গত এক দশকের নথি ঘাঁটলেও দেখা যাবে, প্রায় প্রতি বছরই অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় বা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.