|
|
|
|
ভারসাম্যের খেলায় ভারী একটি ওয়ার্ড
আর্যভট্ট খান |
একটি ওয়ার্ডের উপনির্বাচন। কিন্তু ওই ২৩ নম্বর ওয়ার্ড ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে। ওয়ার্ড-দখল নিতে মরিয়া তৃণমূল ও সিপিএম উভয়পক্ষই। এক দিকে তৃণমূলের নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী, সৌগত রায়ের মতো নেতারা। অন্য দিকে সিপিএমের প্রচারে বাগুইআটিতে সভা করেছেন নিরুপম সেন, গৌতম দেবরা। ঘন ঘন সভা করছেন এলাকার তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণেন্দু বসু। সিপিএম-এর হয়ে সোমবার বাগুইআটির শাস্ত্রীবাগানে নির্বাচনী সভায় যান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ও। কৌতুহল জেগেছে, একটি উপনির্বাচনে একটি ওয়ার্ড দখলের জন্য কেন এত উত্তেজনা?
উত্তর খুঁজতে গেলে রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার আগের পুর-নির্বাচনের ফলাফলের দিকে চোখ রাখলে অনেকটা স্পষ্ট হবে বিষয়টা। গত পুর-নির্বাচনে ফলাফল ছিল ১৯-১৬। সিপিএম পেয়েছিল ১৯টি ওয়ার্ড। তৃণমূল জোট ১৬টি। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের আশপাশের সব ওয়ার্ড তৃণমূল দখল করে নিলেও পুরপ্রধান তাপস চট্টোপাধ্যায়ের শক্ত ঘাঁটি ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের দখল নিতে পারেনি তৃণমূল। মাত্র ২৫০ ভোটে জিতে গিয়েছিলেন সিপিএমের ভূপতি সেনগুপ্ত। অনেকের মতে, ২৩ নম্বর ওয়ার্ড দখলে আনতে পারলে ফলাফল উল্টে না গেলেও অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থায় চলে আসত তৃণমূল। পরিসংখ্যান বলছে, ওই ওয়ার্ড তৃণমূল পেলে ফলাফল হত ১৮-১৭। এতে এক দিকে যেমন ফলাফল টাই-এর একদম কাছে চলে আসত, তেমনই ২৩ নম্বর ওয়ার্ড দখলে রাখলে তৃণমূল অনেকটা আত্মবিশ্বাসী হয়ে পরবর্তীকালে চাপ বাড়াতে পারত। |
|
নির্বাচনী প্রচার চলছে জোরকদমে। বুধবার, বাগুইআটিতে। ছবি: শৌভিক দে। |
আগামী বছরই রাজারহাট-গোপালপুরের পুর-নির্বাচন। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা ভাইস চেয়ারম্যান ভূপতি সেনগুপ্তের মৃত্যুর পরে আগামী ২২ তারিখ উপনির্বাচন হচ্ছে এখানে। ময়দানে আছে কংগ্রেস ও বিজেপিও। তৃণমূলের হয়ে দাঁড়িয়েছেন দেবেশ সাহা, সিপিএম-এর হয়ে জ্যোতির্ময় মুখোপাধ্যায়, বিজেপি প্রার্থী সোমনাথ চক্রবর্তী ও কংগ্রেসের অভিজিত্ ঘোষ। ইতিমধ্যেই পুর-পরিষেবার বেহাল দশা নিয়ে সোচ্চার হয়েছে তৃণমূল। সঙ্গে অভিযোগ উঠেছে পুরসভার দুর্নীতি নিয়েও। স্থানীয় সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “রাজারহাট পুর এলাকা বেআইনি নির্মাণে ভরে গিয়েছে। সরু রাস্তায় পাঁচতলা বাড়ি উঠেছে। বেআইনি নির্মাণের অনুমোদন দিয়ে পুর-তহবিল ভরে উঠেছে। নিকাশির হালও খুব খারাপ।” মঙ্গলবার রাত সাড়ে ন’টাতেও জোড়ামন্দিরে তৃণমূলের শুভেন্দু অধিকারীর সভায় উপচে পড়েছে ভিড়। ছিলেন সৌগত রায় ও এলাকার বিধায়ক পূর্ণেন্দু বসু, দোলা সেন প্রমুখ। পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, “মানুষকে পানীয় জল দিতেও ব্যর্থ এই পুরসভা। নিকাশি ব্যবস্থা নেই। নয়ানজুলিগুলো ভরাট হয়ে গিয়েছে।”
দু’দিন আগেই জোড়ামন্দিরে সভা করেছেন সিপিএম নেতা গৌতম দেব, নিরুপম সেনরা। রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার চেয়ারম্যান তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এখানকার মানুষ যে পুর-পরিষেবায় সন্তুষ্ট, তা নির্বাচনের ফলাফলই বলে দেবে। বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ ভিত্তিহীন। নিকাশির উন্নতির জন্য আধুনিক পাম্প বসানো হয়েছে। পানীয় জলের প্রকল্পের জন্য আমরা রাজ্য সরকারকে বারবার বলেছি। কোনও সাহায্য মেলেনি। আমরা নিজেরা ডিপ টিউবওয়েল করেছি।” যদিও সৌগতবাবু বলেন, “তাপসবাবু ভুল বলছেন। আমরাই বরং বারবার বলেছি জল প্রকল্পের জন্য প্রস্তাব জমা দিতে। ওঁরা দেননি।”
|
|
|
|
|
|