সিউড়ি পলিটেকনিক কলেজ রয়েছে। এ বার সরকারি ভাবে বীরভূমের অপর দু’টি মহকুমায় ৪টি পলিটেকনিক কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এর মধ্যে রামপুরহাট মহকুমাতেই (মুরারই-১, নলহাটি ১ ও রামপুরহাট ২ ব্লক) তিনটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আর একটি হবে বোলপুর মহকুমায়।
বোলপুর মহকুমায় জমি দেখার কাজ চলছে। নলহাটি ১ ব্লকে ২৫ শতাংশ কাজ শেষ। রামপুরহাট ২ ব্লকে গত ১৭ মার্চ শিলান্যাস হলেও কাজ সে ভাবে এগোয়নি। রামপুরহাট বা নলহাটিতে কোনও সমস্যা না হলেও মুরারই ১ ব্লকে কাজে অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকার নিজভূমি নিজগৃহ প্রকল্পে প্রথম পর্বে ৪৭ জন উপভোক্তাকে সম্প্রতি ৫ শতক করে জমির পাট্টা বিলি করে। |
মুরারইয়ের কাঁটাপাহাড়িতে তৈরি হচ্ছে পলিটেকনিক কলেজ।—নিজস্ব চিত্র। |
গত ১৩ নভেম্বর ৪০ জনকে বাড়ি তৈরির জন্য প্রথম কিস্তির সাড়ে বাইশ হাজার টাকা দেওয়াও হয়। কিন্তু চেক, পাট্টা বিলি-সহ নানা অসংগতিতে মুরারই থানার মহুরাপুর এলাকায় পলিটেকনিক কলেজ গড়া নিয়ে আদিবাসীসের একাংশর মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। মুরারই ১ ব্লকের বিডিও আবুল কালাম বলেন, “কলেজের নির্মাণ কাজ শুরু করতেই এলাকার আদিবাসীদের একাংশ বাধা দিতে থাকে। সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি। কিছু পরিবার দীর্ঘদিন ধরে ওই জায়গায় বসবাস করছিল। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তা ছাড়া, সমস্ত বিষয়টি এখন পঞ্চায়েত সমিতি এবং ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর দেখছে। আশা করছি আলোচনার মাধ্যমে খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধান করা যাবে।”
প্রসঙ্গত, মোরামের চাঁই ফাটানোর সময় পাথরের টুকরো এলাকার বাড়িতে এসে পড়ত। পনেরো বছর আগে আন্দোলনের জেরে এলাকায় নতুন করে আর খাদান গড়ে উঠেনি। পরিত্যক্ত খাস জায়গায় পঞ্চায়েতের মাধ্যমে লাগানো বনসৃজন প্রকল্পের গাছ ওই সমস্ত আদিবাসী পরিবারগুলি দেখভাল করতে থাকে। মহুরাপুর পঞ্চায়েতের লাখোরগ্রাম মৌজায় ওই ৫ একর জমিতে কলেজ তৈরির কাজ চলছে। এলাকার বাসিন্দা রমেশ কিস্কু, রাজকুমার কিস্কুরা বলেন, “এলাকার এখনও তিনটি পরিবার পাট্টা পায়নি। ৪৭টি পরিবারকে পাট্টা দেওয়া হলেও তাদেরকে জায়গা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়নি। ফলে জায়গার দখল কেউ নিতে পারছে না। এ ছাড়া এখনও পর্যন্ত ৭ জন চেক পায়নি।” ৬ জনের চেকে ভুল রয়েছে বলে অভিযোগ। জেলাশাসক জগদীশ প্রসাদ মিনা বলেন, “চেক বিলি এবং বিলি হওয়া পাট্টার জায়গা দ্রুত চিহ্নিত করে উপভোক্তাদের দখল দেওয়ার জন্য রামপুরহাট মহকুমাশাসককে বলে দিচ্ছি।” জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক শ্যামাশিস রায় বলেন, “যাঁরা ওখানে পাট্টা পাননি, তাঁদেরকেও পাট্টা দেওয়া হবে। নিজভূমি নিজগৃহ প্রকল্পে যাঁদেরকে পাট্টা দেওয়া হয়েছে, তাঁদের সকলকেই চেক দেওয়া হবে।”
পলিটেকনিক কলেজ ছাড়াও জেলার ১৯টি ব্লকে একটি করে আইআইটি চালু হবে। সিউড়িতে অবশ্য আগে থেকেই রয়েছে। কারিগরি শিক্ষার পাশাপাশি জেলায় ৫টি মডেল স্কুল খোলারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেগুলি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প। তার জন্যও প্রয়োজনীয় টাকা পাওয়া গিয়েছে বলে শ্যামাশিসবাবু জানিয়েছেন। |