বর্ধমান পুরসভা এলাকার মধ্যে থাকা সমস্ত ব্যবসায়িক বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং, প্ল্যাকার্ড সরিয়ে দেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করলো পুরসভা। এই বিজ্ঞপ্তিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বর্ধমানে। যদিও উপযুক্ত কর দিলে এই ধরনের বিজ্ঞাপন দিতে সমস্যা থাকবে না বলে আশ্বাস দিয়েছে পুরসভা।
সম্প্রতি বর্ধমানের পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তের সই-সহ জারি করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোনও সরকারি রাস্তা বা সরকারি স্থান থেকে দেখা যায় এই ধরনের কোনও ব্যবসায়িক বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা যাবে না। এই কাজ পশ্চিমবঙ্গ পুর আইন ১৯৯৩-র ১২১ ধারা মতে সম্পূর্ণ বে-আইনি। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছিল, বিজ্ঞাপনদাতাদের আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নিজের দায়িত্বে কাঠামো-সহ বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত সমস্ত জিনিস সরিয়ে নিতে হবে। বিজ্ঞাপনদাতারা এই কাজ না করলে পুরসভা নিজের উদ্যোগে সমস্ত ব্যবসায়িক বিজ্ঞাপন সরিয়ে দেবে অথবা মুছে ফেলবে। যদিও সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞাপনদাতাকেই সেই খরচ বহন করতে হবে। |
বর্ধমান রেল স্টেশন চত্বরে টাঙানো রয়েছে হোর্ডিং। —নিজস্ব চিত্র। |
এই বিজ্ঞপ্তি জানাজানি হওয়ার পরে বুধবার ‘বর্ধমান ডিষ্ট্রিক্ট অ্যাডভারটাইজিং কনট্রাক্টরস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন-এর কর্তারা পুরসভার চেয়ারম্যান স্বরূপ দত্তের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁরা বলেন, বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলির সঙ্গে অনেক মানুষের রুজি জড়িত। তাঁদের অভিযোগ, এর আগে তাঁরা বিজ্ঞাপন বাবদ পুরসভাকে কর দিতে চাইলেও কর সংগ্রহে আগ্রহ দেখায়নি পুরসভা। এই ঠিকেদার সংস্থার সভাপতি তিলক দুবে বলেন, “আমরা পুরপ্রধানকে বলেছি, আচমকা এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিলে অসংখ্য কর্মী কাজ হারাবেন। পুরপ্রধান আমাদের বলেছেন, পুরসভার অনুমতি নিয়ে এই বিজ্ঞাপনগুলো লাগানো হয়নি। আমরা পুরসভাকে জানিয়েছি, বিজ্ঞাপন বাবদ আমরা কর দিতে চাই।” তিনি আরও জানান, পুরপ্রধান আমাদের বলেছেন, অবিলম্বে ওই ফ্লেক্স বা হোডিংগুলি সরিয়ে নিলে ৭২ ঘন্টার মধ্যে উনি আমাদের সঙ্গে কথা বলবেন। তাই আপাতত শহর থেকে সমস্ত ফ্লেক্স ও হোডিং সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
বর্ধমান পুরসভার পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত বলেন, “ভারতের সমস্ত শহরেই ব্যবসায়িক বিজ্ঞাপন দিতে পুরসভার অনুমতি লাগে। আমি সে কথাই বলেছি। বিজ্ঞাপণদাতারা বলেছেন, তাঁরা বিজ্ঞাপন বাবাদ কর দিতেও রাজি। যদি এই ধরনের বিজ্ঞাপন বাবদ কর সংগ্রহ করা যায় তা হলে পুরসভার আয় বাড়বে। ভবিষ্যতে আমরা করের বিনিময়ে পুর এলাকায় এই ধরনের ব্যবসায়িক বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত প্রচার করতে দেব।”
কিন্তু বর্ধমানের বিভিন্ন ওয়ার্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল নেতাদের ছবি দেওয়া পোস্টার, ব্যানার ও হোর্ডিং এখনও ঝুলছে। সেগুলির কী হবে? শহরকে দৃশ্যদূষণের হাত থেকে বাঁচাতে কী সেগুলিও সরিয়ে নেওয়া হবে? স্বরূপবাবু বলেন, “ রাজনৈতিক নেতাদের ছবি দেওয়া ফ্লেক্স বা হোডিং ব্যবসায়িক বিজ্ঞাপনের মধ্যে পড়ে না। তাই সেগুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য এই নির্দেশ জারি করা হয়নি।” |