পঞ্চাশ পরিবারের জন্য একটি শৌচাগার |
বিপ্লব ভট্টাচার্য • দুর্গাপুর |
মঙ্গলবার সারা রাজ্যের সঙ্গে দুর্গাপুরেও পালিত হল বিশ্ব শৌচাগার দিবস। ‘ঘরে ঘরে শৌচাগার আজ আমাদের অহঙ্কার’, ‘মাঠে ঘাটে পায়খানা মৃত্যুর পরোয়ানা’র মত স্লোগান দেওয়া পোস্টার নিয়ে পদযাত্রায় পা মেলাল কচিকাঁচা-সহ শহরের বাসিন্দারা। কিন্তু খোদ দুর্গাপুর পুরসভা এলাকার মধ্যেই এখনও শৌচাগার না থাকায় খোলা মাঠে মলমূত্র ত্যাগ করতে বাধ্য হন স্থানীয় বাসিন্দারা। |
এই শৌচাগারই ভরসা। —নিজস্ব চিত্র। |
দুর্গাপুর পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নাগার্জুন বস্তির মধ্যে ডিসপোজাল প্ল্যান্ট পাড়ার অবস্থা এমনই। এই এলাকায় কম বেশি পঞ্চাশটি পরিবারের বাস। এলাকার বেশির ভাগ পরিবারের মহিলারা বাড়িতে পরিচালিকার কাজ করেন। পুরুষেরা চাষের সঙ্গে যুক্ত। কেউ কেউ দিনমজুরী করেন। এলাকায় রাস্তা মোটামুটি ভালো। আলোর ব্যবস্থাও আছে। কয়েকটি জায়গায় রয়েছে পাকা নর্দমা। কিন্তু বেশির ভাগ বাড়িতেই নেই শৌচাগার। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে পুরসভা থেকে দুটি শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হলেও বর্তমানে একটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যেটি রয়েছে সেটি এলাকা থেকে কিছুটা দুরে হওয়ার ফলে সেখানে কেউ যেতে চায় না। ফলে এলাকার প্রায় সকল বাসিন্দাকেই প্রাতকৃত্য করার জন্য যেতে হয় পাশের ঝোপঝাড় কিংবা মাঠে। স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণদেব মাহাতো বলেন, “আগে যখন কাছের শৌচাগারটি ভাল ছিল তখন বাড়ির মহিলা-সহ প্রায় সকলেই সেটি ব্যবহার করত। কিন্তু সেটি নোংরা হয়ে যাওয়ায় আর ব্যবহার করা যায় না।” তাঁর অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে বার বার পুরসভার কাছে নতুন শৌচাগার বানানো ও পুরনো শৌচাগারটি পরিস্কার করার দাবি জানানো হলেও লাভ হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা রেখা ডোম, রীনা ডোমেরা জানান, অনেকে বাড়ির পাশেই মলমূত্র ত্যাগ করেন। গোটা এলাকায় দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, ওই এলাকায় পরিবেশ খুবই অস্বাস্থ্যকর। পুরসভা থেকে তৈরি করা একটি শৌচাগার বর্তমানে ব্যবহারের অযোগ্য। আর একটি বেশ দুরে হওয়ায় সেখানে যেতে অনীহা বাসিন্দাদের। রাস্তার দুপাশের মাঠে, জঙ্গলে ইতিউতি ছড়িয়ে রয়েছে মল।
দুর্গাপুর পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ মণি দাশগুপ্ত বলেন, “শৌচালয় তৈরির বিষয়ে টেন্ডার ডাকা হয়েছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। তবে যেখানে সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করার বিষয়ে সাধারণ মানুষকেও সচেতন থাকতে হবে।” |