চলমান সিঁড়ির কাজ শুরু হল না ৭ মাসেও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
এসে পড়ে রয়েছে নির্মাণ সামগ্রী। কিন্তু সাত মাসেও শুরু হয়নি কাজ। কবে শুরু হবে, স্পষ্ট উত্তর নেই রেল কর্তৃপক্ষের কাছে। ফলে, দুর্গাপুর স্টেশনে চলমান সিঁড়ির পরিষেবা দূর অস্ত। রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর অবশ্য আশ্বাস, শীঘ্রই কাজ শুরু করা হবে।
দুর্গাপুর স্টেশনে চলমান সিঁড়ি তৈরির পরিকল্পনা অনেক দিনের। কিন্তু তা না হওয়ায় ওভারব্রিজের খাড়াই সিঁড়ির ৪৬টি ধাপ পেরিয়ে রোজ যাতায়াত করতে হয় যাত্রীদের। ব্যাগপত্র বেশি থাকলে সমস্যা বাড়ে। বেশি বিপাকে পড়েন বয়স্ক ও শিশুরা। দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের তরফে এখানে প্রথম চলমান সিঁড়ি বসানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। তা বাস্তবায়িত হয়নি। পরে রেল কর্তৃপক্ষ প্রকল্পের কাজ হাতে নেন। কিন্তু তা-ও বাস্তবায়িত হবে, এমন কোনও কাজকর্ম নজরে পড়েনি বলে অভিযোগ যাত্রীদের। |
শিশু কোলে ওঠানামা সিঁড়ি ভেঙেই। —নিজস্ব চিত্র। |
বিষয়টি নিয়ে সরব হন আসানসোল-দুর্গাপুরের সিপিএম সাংসদ সাইদুল হক। তিনি বলেন, “এই স্টেশন দিয়ে আমি মাঝে-মধ্যেই যাতায়াত করি। অতগুলি সিঁড়ি টপকে চলাচল করা যাত্রীদের পক্ষে বেশ কষ্টের।” তিনি বলেন, “যাত্রীদের সমস্যার কথা ভেবে এ ব্যাপারে ডিএসপি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলি। ডিএসপি কর্তৃপক্ষ আমাকে জানান, স্টেশনে চলমান সিঁড়ি বসানোর কোনও পরিকল্পনা এখন আর তাঁদের নেই।” তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি রেলের দফতরে যোগাযোগ করেছেন। কথা বলেছেন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর সঙ্গেও।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর স্টেশনে চলমান সিঁড়ি বসানোর প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে হাতে নেওয়া হয়েছে। গুরগাঁওয়ের একটি সংস্থা দেশের শ’খানেক স্টেশনে চলমান সিঁড়ি তৈরির বরাত পেয়েছে। ২০১২ সালের মে মাসে বরাত পাওয়ার পরে চিন থেকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে এসেছে তারা। চলমান সিঁড়ি গড়ার পাশাপাশি সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও পেয়েছে গুরগাঁওয়ের ওই সংস্থা। মাস সাতেক আগে দুর্গাপুরেও এসে গিয়েছে চলমান সিঁড়ি তৈরির সামগ্রী। স্টেশনে গিয়ে দেখা গিয়েছে, খোলা আকাশের নীচে পড়ে রয়েছে সেই সব বড় বড় ধাতব জিনিসপত্র। রোদে-জলে সেগুলির গুণমান নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। দুর্গাপুরের স্টেশন ম্যানেজার জ্যোতির্ময় রায় জানান, এ ব্যাপারে তাঁর কিছু জানা নেই। কোনও নথিপত্র এখনও আসেনি বলে দাবি তাঁর।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ রাজ্যে শিয়ালদহ, খড়্গপুর, আসানসোল ও দুর্গাপুর স্টেশনে চলমান সিঁড়ি তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে দুর্গাপুর স্টেশনকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বলে জানান রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, “পূর্বাঞ্চলের প্রথম চলমান সিঁড়ি গড়ে উঠবে দুর্গাপুরেই।” কেন এত দিন ধরে সামগ্রী এসে পড়ে থাকলেও কাজ শুরু হচ্ছে না, সে প্রশ্নে রেল প্রতিমন্ত্রী জানান, কিছু কারিগরি পরিকাঠামোগত সমস্যা ছিল। অধীরবাবু বলেন, “দ্রুত দুর্গাপুরের কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছি।” রেল দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরে চলমান সিঁড়ি তৈরির জন্য জায়গা প্রস্তুত করে ফেলা হয়েছে। তবে আসানসোল স্টেশনে প্রয়োজনীয় জায়গা এখনও তৈরি করা যায়নি। |