আগুনের আশঙ্কা নিয়ে জমজমাট চলছে মেলা
ত বছর সার্কাসে ‘ফায়ার ড্যান্স’ দেখাতে গিয়ে রাসমেলার মাঠে অগ্নি দগ্ধ হন এক আফ্রিকান যুবক। তাঁর মুখের একাংশ পুড়েও যায়। অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছিল। কিন্তু, রাসমেলায় বড় মাপের আগুন লাগলে তা নেভানোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে কি না সেই প্রশ্ন নাড়া দিয়েছিল উদ্যোক্তাদের। মেলার আগে খাবারের দোকানের রান্নার জায়গা পৃথক করার পরিকল্পনাও হয়েছিল। বাস্তবে কার্যকর হয়নি বলে আশঙ্কা রয়ে গিয়েছে।
আশঙ্কা হওয়ারই কথা। কারণ, মেলার মাঠ জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে তৈরি হচ্ছে চা, তেলেভাজা, জিলিপি, পিঠে সহ রকমারি খাবার তৈরি করছে অন্তত ৫০০ স্টলে। গ্যাস সিলিন্ডার ছাড়াও কয়েকশো স্টোভ, উনুন জ্বালিয়ে রান্না হচ্ছে। তাতে উদ্বিগ্ন কোচবিহার শাখার অফিসার-কর্মীরা। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “যত্রতত্র রান্না বন্ধ করতে নির্দিষ্ট এলাকা চিহ্নিত করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তা হয়নি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

মেলায় রান্নাবান্না। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।
রাসমেলার দায়িত্বে আছে পুরসভা। মেলা মাঠ, এমজেএন স্টেডিয়াম ছাড়া লাগোয়া একাধিক রাস্তার দুধারে সমস্ত স্টলও পুরসভার তরফে বিলি করা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার স্টল বসেছে। ব্যবসায়ীরা স্টল ভাড়া দিয়ে পুরসভার থেকে ব্যবসার ছাড়পত্র পেয়ে থাকেন। মেলার মাঠে খাবারের দোকানের জন্য আলাদা করে ‘ফায়ার লাইসেন্স’ নিতে হয়। নির্দিষ্ট কিছু বিধি মানতে হয়। ওই তালিকায় রান্নার জন্য নির্দিষ্ট এলাকা চিহ্নিত করা, ব্যক্তিগত সংযোগের সিলিন্ডার বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার না করা, দমকলের গাড়ি যাতায়াতের জন্য যথেষ্ট চওড়া রাখার বিষয় রয়েছে। অথচ বহু ক্ষেত্রেই তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ।
এ ছাড়াও মেলার মাঠে দমকলের একটি গাড়ি মজুত রেখে অস্থায়ী ভাবে ক্যাম্প চালুর প্রস্তাবও ছিল। দমকলের অস্থায়ী ক্যাম্প মঙ্গলবারও চালু হয়নি। দমকল কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক মলয় ঘোষ বলেন, “আগুন নেভানোর সরঞ্জাম মেলা চত্বরে অস্থায়ী ভাবে রাখার জন্য আয়োজকদের কাছে ৯০ হাজার টাকা চাওয়া হয়। ওই টাকা জমা পড়েনি। রাসমেলার জন্য একটি গাড়ি নিজস্ব দফতরে তৈরি রেখেছি।”
রাস সংক্ষেপে
পোড়া মাটির শিল্পকর্মের ছড়াছড়ি রাসমেলায়। আলিপুরদুয়ার, শিলিগুড়ি কৃষ্ণনগর থেকেও রকমারি সামগ্রী নিয়ে হাজির বিক্রেতারা। দোলনায় রাধাকৃষ্ণ, লাফিং বুদ্ধ থেকে, ফুলদানি কি নেই। মেলা শুরুর কদিনে ব্যবসাও জমেছে বেশ।
ক্ষীর পুলি আর মুগের পুলির জমজমাট লড়াই। মেলার মাঠে পিঠের দোকানে শীতের রাতে ভিড় জমছে। বিক্রেতারা জানান, চাহিদায় ক্ষীরের পুলির সঙ্গে টেক্কা দিচ্ছে মুগ ডাল দিয়ে তৈরি পুলি।
বলদের বদলে ‘কলুর ঘোড়া’। এ বারও ঘানি বসিয়ে সর্ষের তেল বিক্রির স্টল করেছেন চিলাখানার সিরাজুল হক। ওই ঘানি ঘোরাচ্ছে ঘোড়া। সিরাজুলের কথায়, বলদ যেখানে আধ ঘণ্টা টেনে হাঁপিয়ে উঠছে, ঘোড়া সেখানে টানছে টানা দু’ঘণ্টা। তেলও বেরোচ্ছে বেশি।
মেলা আয়োজক পুর চেয়ারম্যান বীরেন কুন্ডু বলেন, “অস্থায়ী দমকল কেন্দ্রের জন্য আমরা ২৫ হাজার টাকা জমা দিয়েছি। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত দমকলের সরঞ্জাম রাখার ব্যবস্থা হবে।” যত্রতত্র রান্নাঘর গজিয়ে ওঠার দায় নিয়েও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পুরসভার চাপানউতোর প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে। কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুব্রত সাহা বলেন, “পুরসভা নির্দিষ্ট এলাকায় রান্নাঘর করে দেয়নি। পরিস্থিতির জেরে ব্যবসায়ীদের মেলার মাঠে রান্না করতে হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা তো রয়েইছে।” তিনি জানান, বাড়িতে ব্যবহারের সিলিন্ডার বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা বন্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিলে তাঁরা কোনও আপত্তি করবেন না। পুরসভার চেয়ারম্যান বীরেনবাবু অবশ্য দাবি করেন, গত বছর আলাদা করে রান্নাঘরের জায়গা দেওয়া হলেও সেখানে কেউ যেতে চাননি।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.