|
|
|
|
লাল কাপড়ে মঞ্চ বাঁধায় বাতিল সরকারি অনুষ্ঠান |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
মঞ্চ বাঁধা হয়েছিল লাল কাপড়ে (মতান্তরে মেরুন)। শাসকদল তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশ সেটা ‘ভাল চোখে’ দেখেননি। এই পরিস্থিতিতে শেষ মুহূর্তে বাতিল হল প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উদ্যাপনের সরকারি অনুষ্ঠান। মঙ্গলবার এমনটাই ঘটল পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুর ব্লকের ব্রজলালচক গ্রাম পঞ্চায়েতে।
তৃণমূল পরিচালিত চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঞ্চিতা বর্মন মাইতি বলেন, “সরকারি ওই অনুষ্ঠানের মঞ্চ যে ভাবে লাল কাপড় দিয়ে বাঁধা হয়েছিল, তাতে সেটি একটি রাজনৈতিক দলের মঞ্চের মতো লাগছিল। এই নিয়ে দলের কর্মীরা আপত্তি জানিয়েছিলেন।”
কিন্তু রাজনৈতিক দলের আপত্তি প্রশাসন মানল কেন? ব্লক প্রাণিসম্পদ আধিকারিক অমিয়কুমার শাসমলের বক্তব্য, “পঞ্চায়েতকে নীল-সাদা কাপড় দিয়ে মঞ্চ বাঁধতে বলা হয়েছিল। ওরা তা না শুনে লাল কাপড় দিয়ে বাঁধায় স্থানীয় একটি মহল থেকে আপত্তি আসে। বিতর্ক এড়াতে অনুষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। পরে অনুষ্ঠান হবে।”
নীল-সাদা কাপড়ের কথাই বা বলা হয়েছিল কেন? অমিয়বাবুর দাবি, “এখন সরকারি অনুষ্ঠানে নীল-সাদা কাপড়ই ব্যবহার হয়। তাই ও রকম বলা হয়েছিল। ওঁরা কথা শুনলে অযথা বিতর্ক হত না।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উদ্যাপনের (১৮ নভেম্বর শুরু) জন্য এ বার পূর্ব মেদিনীপুরে জেলা স্তরের অনুষ্ঠান হচ্ছে রামনগরে। এ ছাড়া প্রতিটি ব্লকে আলাদা করে অনুষ্ঠান হচ্ছে। চণ্ডীপুর ব্লকের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল ব্রজলালচক গ্রাম পঞ্চায়েত ভবন প্রাঙ্গণে। ব্লক প্রাণিসম্পদ দফতর স্থানীয় সিপিএম-বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতকে মঞ্চ তৈরি-সহ যাবতীয় আয়োজনের দ্বায়িত্ব দেয়। সিপিএম প্রধান সুপ্রিয়া মাইতি দাস বলেন, “সপ্তাহ দু’য়েক আগে চিঠি দিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে বলে ওরা। আট হাজার টাকা বাজেট ছিল। পাঁচ হাজার টাকা দিয়েও দিয়েছিল।” ওই টাকায় মঞ্চ বাঁধার পাশাপাশি মাইক ভাড়া, ফুলের তোড়া, পুরস্কারের ব্যবস্থা করেছিলেন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ।
এ দিন সকাল ৯টায় অনুষ্ঠান শুরুর কথা ছিল। সেই মতো গরু, হাঁস, মুরগির প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে এলাকার বেশ কিছু প্রাণিপালক তাঁদের পোষ্যকে নিয়ে গুটিগুটি হাজির হন পঞ্চায়েত অফিসে। দুপুরের খাবারের জন্য উনুনে রান্নাও চড়ানো হয়। আচমকাই সাড়ে ৮টা নাগাদ ব্লক প্রাণিসম্পদ আধিকারিক ফোন করে অনুষ্ঠান বাতিল করতে বলেন পঞ্চায়েতের বিজেপি উপপ্রধান আশিস মাইতিকে। সুপ্রিয়াদেবী বলেন, “অনুষ্ঠান বাতিল হওয়ার কারণ শুনে হতভম্ব হয়েছিলাম। কাপড়ের রং আমরা ঠিক করিনি। আর সেটা লালও নয়, মেরুন। ব্লক অফিসে ফোন করলে ওরা লোকজনকে বুঝিয়ে বাড়ি পাঠাতে বলেন। একে-একে সকলের কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইতে হয়। বড় খাটো হয়ে গেলাম।” যা শুনে পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের কুশুকুমার বেরার মন্তব্য, “সোমবারই মঞ্চের কাপড় নিয়ে আপত্তি জানাই। তখন কথার গুরুত্ব দিলে এমনটা হত না।” |
|
|
|
|
|