ছেলেমেয়ে থাকলে কারও অবসরকালীন পাওনার সবটুকুই তাঁর স্ত্রী পেতে পারেন না। এটাই মনে করে কলকাতা হাইকোর্ট। নমিনি বা প্রাপক হিসেবে মায়ের নাম থাকলেও বাবার মৃত্যুতে তাঁর অবসরকালীন প্রাপ্যের সমান ভাগ মেয়েও পাবেন। মেয়ে বিবাহিতা হলেও এর ব্যতিক্রম হবে না। সোমবার একটি মামলার সূত্রে এ কথা জানান কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত।
বাবার অবসরকালীন পাওনার ভাগ চেয়ে তাঁর এক বিবাহিতা মেয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছেন। সোমবার সেই মামলার শুনানির পরে বিচারপতি দত্ত জানান, বাবার অবসরকালীন প্রাপ্যের অংশ মায়ের সঙ্গে মেয়েদেরও পাওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন। বিচারপতি ওই ব্যক্তির অবসরের সময়কার পাওনা মেটানো স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। চূড়ান্ত রায়ের পরে সেই পাওনা বিলির বন্দোবস্ত হবে।
নিখিলচন্দ্র সিকদার ন্যাশনাল হাইড্রো-পাওয়ার কর্পোরেশন (এনএইচপিসি)-এর কর্মী ছিলেন। প্রথমা স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে নিখিলবাবু দ্বিতীয় বার বিয়ে করেন। চলতি বছরের ২৭ জুন নিখিলবাবু মারা যান। তার আগে তিনি তাঁর অবসরকালীন প্রাপ্যের নমিনি করেন দ্বিতীয়া স্ত্রীকে। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পরে ওই পাওনার অংশ দাবি করে নিখিলবাবুর প্রথম পক্ষের মেয়ে দেবযানী রায় ২৪ জুলাই হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন।
দেবযানীর আইনজীবী অঞ্জন ভট্টাচার্য শুনানিতে বলেন, মেয়েরা যেমন বাবার সম্পত্তির অধিকারিণী, তেমনই অবসরকালীন প্রাপ্যেরও। ওই অর্থ বাবার অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে পড়ে। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি দত্ত এই ব্যাপারে তাঁর অভিমত জানিয়ে দেন। তাঁর মতে, মাকে যদি নমিনি করা থাকে, তা হলেও টাকা পাওয়ার পরে সমান অংশে মেয়েদেরও ভাগ দেওয়া উচিত। অর্থাৎ স্বামীর অবসরকালীন প্রাপ্যের সবটাই তাঁর স্ত্রী পাবেন না।
এনএইচপিসি-কর্তৃপক্ষ অবশ্য নিখিলবাবুর দ্বিতীয়া স্ত্রীকে তাঁর স্বামীর অবসরকালীন প্রাপ্যের সবটুকুই দিয়ে দেবেন বলে স্থির করেছিলেন। কারণ, সাধারণ রীতি এটাই। বিচারপতি জানিয়ে দেন, ২০১৪-র ৩১ জানুয়ারি যাবতীয় নথিপত্র দেখে তিনি চূড়ান্ত রায় দেবেন। তার আগে নিখিলবাবুর অবসরকালীন প্রাপ্য কাউকে দেওয়া চলবে না বলে ওই সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। |