সামান্য মশা! অথচ পুরভোটের আগে সেই মশারাই মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠছে শাসক দলের। বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার কারণে সামান্য বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে কৃষ্ণনগরের বেশ কিছু এলাকা। সেই জল বের হতে না পেরে দীর্ঘদিন জমে থাকে। আর সেই জমা জলে বাড়তে থাকে মশার সংখ্যা। এই মশা নিয়ে ভোটের আগে সরব হয়েছেন শহরের বাসিন্দারা।
প্রাচীন এই শহরে নিকাশি ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় এখনও সামান্য বৃষ্টিতে হাঁটু জল জমে যায়। কোনও কোনও এলাকায় একটু বেশি বৃষ্টি হলেই ঘরের ভিতরে জল ঢুকে যায়। নর্দমার নোংরা জল উপচে গোটা এলাকায় একটা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করে।
বেলেডাঙা ঘোষপাড়ার বাসিন্দা নমিতা চক্রবর্তী বলেন, “সারা বছর ধরেই মশা আর মাছির অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। এভাবে কেউ বাস করতে পারে?” এই জিজ্ঞাসা শুধু নমিতাদেবীর একার নয়, কৃষ্ণনগরের আপামর মানুষের। তালপুকুর এলাকার বাসিন্দা, পেশায় শিক্ষক, প্রবীর বসু যেমন বলছেন, “পনেরো বছর ধরে তালপুকুর এলাকা বাস করছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত অবস্থার কোনও পরিবর্তন তো চোখে পড়ল না। বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান জল জমে গিয়ে আমাদের একপ্রকার গৃহবন্দি হয়ে থাকতে হয়।” বাগাডাঙার বাসিন্দা সনাতন ঘোষ বলেন, “আমাদের এই ওয়ার্ডকে মশার আঁতুরঘর বলতে পারেন। দিনের পর দিন আমাদের এলাকায় নর্দমা পরিস্কার করা হয় না। অথচ মশা নিয়ে পুরসভারও কোনও হেলদোল নেই।”
পুরপ্রধান অসীম সাহা বলেন, “শহরের নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে সম্পূর্ণ অপরিকল্পিত ভাবে। এই শহরের বেশ কিছু এলাকা বেসিনের মতো। তাই সামান্য বৃষ্টিতেই সেখানে জল জমে যায়।” তিনি বলেন, “এই শহরের নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে না পারলে অবস্থার কোনও পরিবর্তন হবে না। জওহরলাল নেহেরু আরবান রিনিউয়াল মিশন প্রকল্পের জন্য সাত কোটি টাকার একটি ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরি করা হয়েছে। আশা করা যায়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে শহরের নিকাশি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।” কৃষ্ণনাগরিকরা অবশ্য জানাচ্ছেন, এমন আশ্বাস প্রতিবারই ভোটের আগে মেলে। কিন্তু ভোট ফুরোতেই সব প্রতিশ্রুতি হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। থেকে যায় কেবল জমা জল আর মশা। |