ইস্ট-ওয়েস্ট করিডর গড়ার ক্ষেত্রে জমি নিয়ে উত্তরবঙ্গে আর সমস্যা নেই বলে জানাল রাজ্য। রবিবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গের ৬টি জেলার প্রশাসনের আধিকারিক, দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকের পরে এ কথা জানান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং পূর্তমন্ত্রী সুদর্শন রায়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জানিয়ে দেন, “আমাদের সরকার জমি জোর করে নেওয়ার পক্ষপাতী নয়। তবে উন্নয়নের জন্য সড়ক গড়তে হবে, তার জন্য জমি দরকার। আমরা তাই বাসিন্দাদের বুঝিয়ে সেই ব্যবস্থা করতে পেরেছি। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ যদি চান তা হলে টেন্ডার ডেকে ইস্ট ওয়েস্ট করিডর তৈরির কাজ শুরু করতে পারেন। ওই কাজের জন্য জমি পাওয়া নিয়ে আর সমস্যা নেই।”
মন্ত্রীর কথায়, ইস্টওয়েস্ট করিডর তৈরি হলে এলাকার উন্নতিতে সহায়ক হবে এ কথা বাসিন্দাদের বোঝাতে হয়েছে। তাতে তাঁরা রাজি হয়েছেন। জেলা প্রশাসনগুলির কাছ থেকে যে তথ্য মিলেছে সেই অনুযায়ী ওই সড়ক তৈরির ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণের জন্য আগেই এক দফায় টাকা এসেছিল। তা ক্ষতিগ্রস্ত জমি মালিকদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে। অক্টোবর মাসে ফের টাকা এসেছে। তা দেওয়ার কাজ চলছে। |
জমিজটে ঘোষপুকুর-শামুকতলা ১৫০ কিমি সড়কের কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। সমস্যা মেটায় এ বার তা দ্রুত শুরু সম্ভব বলে প্রশাসনের কর্তারা আশাবাদী। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকেও বিস্তারিত জানানো হয়েছে। আপাতত ফুলবাড়ি থেকে ধূপগুড়ি পর্যন্ত ওই রাস্তা মেরামতির কাজ শুরু করা হবে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেই। পূর্ত দফতরের জাতীয় সড়ক বিভাগ ৮৯ কোটি টাকা খরচে ওই কাজ করবে। আগামী বর্ষার আগেই কাজ শেষ করা হবে। অন্তত ৩ বছর রাস্তা যাতে ভাল থাকে নির্মাণকারী সংস্থার সঙ্গে এখন সরকার সেই চুক্তি করছে। অন্যথায় রাস্তা তৈরির বরাত পাওয়া সংস্থাকেই মেরামতি করে দিতে হবে। ঘোষপুকুর থেকে বাগডোগরা ১৫ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার কাজও রাজ্য করবে। পূর্ত এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেবকে করোনেশন সেতুটি বহু পুরনো। সেই সময় যে পরিমাণ যান চলাচল করত এখন সেই সংখ্যা বেড়েছে। তা ছাড়া সেতুটি দুর্বল হয়ে পড়ছে। সে কথা মাথায় রেখে বিকল্প সেতু তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ‘ডিটেল প্রজেক্ট রিপোর্ট’ তৈরি করতে একটি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়। এ দিন আলিপুরদুয়ারে চেকোর উপর সেতু, শিলিগুড়ি নকশালবাড়িতে লালপুল সেতু এবং মাটিগাড়ায় চামটা সেতুর উদ্বোধন করেন পূর্তমন্ত্রী। রেলের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ৩টি রেলওয়ে ওভার ব্রিজ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার মধ্যে একটি তৈরি হবে আলিপুরদুয়ার শহরে ঢোকার মুখে। একটি নিউ জলপাইগুড়ি এলাকায় ১ নম্বর রেল গেটে। অপরটি কোথায় তা চূড়ান্ত হয়নি। রানিডাঙা, ইস্টার্ন বাই পাস ও বাগরাকোটে এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সব দিক বিবেচনা করার পরে কোথায় তা হবে তা চূড়ান্ত হবে।
সুদর্শনবাবু এই দিন জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রতি জেলায় লক্ষ গাছ লাগাতে পরিকল্পনা হয়েছে। জলা ও জলের উৎসগুলিকে রক্ষায় ব্যবস্থা নেবে এই রাজ্য সরকার। জলপাইগুড়ির রাজবাড়ি দিঘি ও কোচবিহার শহরের রাজবাড়ির দিঘি সংস্কার করে সাজিয়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
|