রাজ্য সরকার ভিন রাজ্যে আলু পাঠানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার পরেও বান্দোয়ানের ঝাড়খণ্ড লাগোয়া এলাকায় খুচরো সব্জি ব্যবসায়ীদের হেনস্থা করা হচ্ছে। যৌথবাহিনী ও বাসিন্দাদের একাংশের বিরুদ্ধে বান্দোয়ান ও লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের কয়েকটি গ্রামের ক্ষুদ্র সব্জি ব্যবসায়ীরা এমনই অভিযোগ তুলেছেন। এ নিয়ে জট তৈরি হওয়ায় রবিবার গালুডি ও বান্দোয়ান থানার পুলিশ আধিকারিকরা আলোচনায় বসলেন। বৈঠক শেষে বান্দোয়ান থানার ওসি রজত চৌধুরী জানান, ঝাড়খণ্ডের কেশরপুর গ্রামে এ দিনের বৈঠকে দুই থানার পুলিশ ছাড়াও এলাকার বিশিষ্টরা ছিলেন। তিনি বলেন, “বৈঠকে ঠিক হয়েছে, সীমানার দু’পারের ছোট ব্যবসায়ীরা সব্জি নিয়ে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবেন। তাঁদের যাতে কেউ বাধা না দেন, পুলিশ নজর রাখবে।”
ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা বান্দোয়ানে সব্জি চাষ ভাল হয়। খেতের ফসল সাইকেলে চাপিয়ে বান্দোয়ান থানার বহু মানুষ ঝাড়খণ্ডের গালুডি ও পটমদা বাজারে বিক্রি করতে যান। সব্জি বেশি থাকলে জামশেদপুরেও অনেকে বিক্রি করতে যান। কিন্তু সম্প্রতি ভিন রাজ্যে আলু পাঠানো নিয়ে পুলিশের নজরদারি বেড়ে যাওয়ায় তার ছাপ পড়ে এই ক্ষুদ্র সব্জি ব্যবসায়ীদের উপর। বান্দোয়ান থেকে ঝাড়খণ্ডের নরসিংপুর, কেশরপুর গ্রামে সব্জি নিয়ে যাওয়ার পথে অনেক ব্যবসায়ীকে মালপত্র-সহ যৌথবাহিনী আটকে হেনস্থা করে বলে অভিযোগ।
বান্দোয়ানের কুচিয়া গ্রামের স্বপন দত্ত, পোপো গ্রামের ভরত সিংয়ের অভিযোগ, “বান্দোয়ানের থেকে গালুডির বাজার বড়। তাই কপি, মুলো, বেগুন, লাউ গালুডিতে বিক্রি করতে যাই। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে নরসিংপুর, কেশরপুর এলাকায় পুলিশ ও কিছু গ্রামবাসী আমাদের আটকে দিচ্ছেন। এ রাজ্যের সব্জি ও রাজ্যে নিয়ে যাওয়া যাবে না বলে তারা হুমকি দিচ্ছেন। বাধ্য হয়ে মালপত্র নিয়ে ফেরৎ আসতে হচ্ছে।” উল্টো দিকে, কেশরপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রফুল্ল মাহাতোর অভিযোগ, “কয়েকদিন আগে বান্দোয়ানের বাজার থেকে চাষের জন্য সাইকেলে বীজ আলু নিয়ে আসছিলাম। কুচিয়া সিআরপিএফ শিবিরের জওয়ানরা আমাকে প্রায় ঘণ্টা দুয়েক দাঁড় করিয়ে রাখেন। অনেক বুঝিয়ে ওদের হাত থেকে মুক্তি পাই।”
এ রাজ্যে জ্যোতি আলুর দর সরকার ১৩ টাকায় বেঁধে দিলেও ঝাড়খণ্ডের বাজারে এখনও আলুর দাম ২৫-৩০ টাকা প্রতি কেজি। পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “আলু নিয়ে অবৈধ ব্যবসা রুখতে সর্বত্র নজর রাখা হয়েছে। সীমানা এলাকায় নজরদারি একটু বেশি। তবে এ নিয়ে কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হন, তা দেখতে বলা হয়েছে।” বান্দোয়ানের বিডিও মধুসূদন মণ্ডল বলেন, “আনাজপত্র নিয়ে সীমানা এলাকায় সমস্যা হচ্ছে। আশা করছি ধীরে ধীরে এই সমস্যা মিটে যাবে।” |