শিয়ালদহ থেকে বহরমপুর ১৮৭ কিলোমিটার রাস্তা লালগোলা প্যাসেঞ্জারে আসতে লাগে ৩৫ টাকা। আর বহরমপুর কোর্ট স্টেশনে নেমে খাগড়া প্রায় ৭ কিলোমিটার যেতে রিকশায় লাগে ৫০ টাকা। কাশিমবাজার বা সৈয়দাবাদ যাওয়ার কথা বললে নির্বিকার মুখে রিকশা চালকরা যে দর হাঁকেন, তা শুনলে মাথা ঘুরে যেতে পারে! বিষয়টি বহরমপুর পুর কর্তৃপক্ষের অজানা নয়। |
অধীর চৌধুরী বলেন, “রুজি-রোজগারের জন্য গরিব মানুষরা পঞ্চায়েত এলাকা থেকে শহরে রিকশা চালাতে আসছেন। মানবিক কারণেই তাঁদের বাধা দেওয়া যায় না। তবে আগের তুলনায় পঞ্চায়েত এলাকার রিকশা শহরে কম ঢুকছে। ওই রিকশা চালকদের নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করেও কোনও ফল হয়নি।”
যদিও সাধারণ নাগরিকদের উপর থেকে রিকশা ভাড়ার বোঝা কমানোর জন্য গত দেড় বছর ধরে বহরমপুর স্টেশন থেকে পুর-এলাকায় বাস সার্ভিস চালু করেছে পুরসভা। এজন্য প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের ‘ভর্তুকি’ দিতে হয় তাদের। ওই বাস চালু হওয়ার ফলে কাদাই, খাগড়া, কাশিমবাজার, সৈয়দাবাদা এলাকার মানুষ দারুণ ভাবে উপকৃত হয়েছেন বলে দাবি পুরসভার। পুরবাসিন্দাদের অভিযোগ, বহরমপুর শহরে প্রতিদিন কয়েক হাজার রিকশা চলে। তার মধ্যে অধিকাংশ রিকশার লাইসেন্স নেই। এই লাইসেন্সবিহীন রিকশার দাপট রুখতে পুরসভা বা প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। |
নিয়ন্ত্রণহীন ওই রিকশার দাপটে বহরমপুরের বিভিন্ন রাস্তায় মাত্রাতিরিক্ত যানজট হচ্ছে। বহরমপুর লাগোয়া বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকা থেকে প্রতি দিন কয়েক হাজার রিকশা বহরমপুর শহরে ভিড় জমানোর ফলেই ওই যানজট চরম আকার নেয়। পঞ্চায়েত এলাকার ওই রিকশার পাশাপাশি শহরের পথে যে সমস্ত লাইসেন্সবিহীন রিকশা চলছে, তার বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ প্রশাসন ও পুরসভা যৌথভাবে নিয়মিত অভিযান চালালে যানজট থেকে পরিত্রাণ মিলত বলেও পুরবাসীদের দাবি।
বহরমপুর পুরভোটের দায়িত্বে থাকা জেলা তৃণমূলের নির্বাহী সভাপতি হুমায়ুন কবীর বলেন, “পরিকল্পনার অভাবে ধুঁকছে বহরমপুর পুরসভা। এই পুরসভার একটাই পরিকল্পনা, তা হলোযে কোনও উপায়ে অর্থ উপার্জন করা। ফলে রিকশা ভাড়া বৃদ্ধি হওয়া না হওয়া নিয়ে নিয়ে পুর-কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল নেই। লাগামহীন রিকশা শহরে যানজট সৃষ্টি করছে। সেই সঙ্গে যে হারে রিকশা ভাড়া বেড়েছে, তাতে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ নাগরিকদের। বিরোধী শূন্য পুরসভা হওয়ায় তারা স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবে পুরসভা চালাচ্ছে। এর পরিবর্তন না হলে আগামী দিন পুরবাসীদের আরও ভুগতে হবে।”
|
ছবি তুলেছেন গৌতম প্রামাণিক। |