নজরবন্দি বহরমপুর
রিকশাভাড়া দিয়ে নাকাল বাসিন্দারা
শিয়ালদহ থেকে বহরমপুর ১৮৭ কিলোমিটার রাস্তা লালগোলা প্যাসেঞ্জারে আসতে লাগে ৩৫ টাকা। আর বহরমপুর কোর্ট স্টেশনে নেমে খাগড়া প্রায় ৭ কিলোমিটার যেতে রিকশায় লাগে ৫০ টাকা। কাশিমবাজার বা সৈয়দাবাদ যাওয়ার কথা বললে নির্বিকার মুখে রিকশা চালকরা যে দর হাঁকেন, তা শুনলে মাথা ঘুরে যেতে পারে! বিষয়টি বহরমপুর পুর কর্তৃপক্ষের অজানা নয়।
কংগ্রেসের প্রচার।
অভিযোগ, বছর দুয়েক আগে রিকশা ভাড়ার তালিকা রাস্তায় টাঙিয়ে দিয়েই দায় সেরেছে পুরসভা। কিন্তু নির্ধারিত ওই দর মানা হচ্ছে কিনা, সে ব্যাপারে পুরসভা কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ নাগরিকদের। তাই পুরভোটের মুখে রিকশা ভাড়া নিয়ে বিস্তর অভিযোগ পুর-নাগরিকদের মুখে। কংগ্রেসের কর্মিসভা বা নির্বাচনী প্রচার সভায় সেই অভিযোগ শুনতে হচ্ছে জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা পুরসভার মুখ্য উপদেষ্টা অধীর চৌধুরীকে। গোরাবাজারের কর্মিসভায় মাইক হাতে নিয়ে এক তরুণী রিকশার ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে সরাসরি অধীর চৌধুরীকে প্রশ্ন করেন। কাশিমবাজারের এক নির্বাচনী প্রচার সভাতেও তাঁকে একই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়।
তৃণমূলের প্রচার।
অধীর চৌধুরী বলেন, “রুজি-রোজগারের জন্য গরিব মানুষরা পঞ্চায়েত এলাকা থেকে শহরে রিকশা চালাতে আসছেন। মানবিক কারণেই তাঁদের বাধা দেওয়া যায় না। তবে আগের তুলনায় পঞ্চায়েত এলাকার রিকশা শহরে কম ঢুকছে। ওই রিকশা চালকদের নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করেও কোনও ফল হয়নি।”
যদিও সাধারণ নাগরিকদের উপর থেকে রিকশা ভাড়ার বোঝা কমানোর জন্য গত দেড় বছর ধরে বহরমপুর স্টেশন থেকে পুর-এলাকায় বাস সার্ভিস চালু করেছে পুরসভা। এজন্য প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের ‘ভর্তুকি’ দিতে হয় তাদের। ওই বাস চালু হওয়ার ফলে কাদাই, খাগড়া, কাশিমবাজার, সৈয়দাবাদা এলাকার মানুষ দারুণ ভাবে উপকৃত হয়েছেন বলে দাবি পুরসভার। পুরবাসিন্দাদের অভিযোগ, বহরমপুর শহরে প্রতিদিন কয়েক হাজার রিকশা চলে। তার মধ্যে অধিকাংশ রিকশার লাইসেন্স নেই। এই লাইসেন্সবিহীন রিকশার দাপট রুখতে পুরসভা বা প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
বামফ্রন্টের প্রচার।
নিয়ন্ত্রণহীন ওই রিকশার দাপটে বহরমপুরের বিভিন্ন রাস্তায় মাত্রাতিরিক্ত যানজট হচ্ছে। বহরমপুর লাগোয়া বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকা থেকে প্রতি দিন কয়েক হাজার রিকশা বহরমপুর শহরে ভিড় জমানোর ফলেই ওই যানজট চরম আকার নেয়। পঞ্চায়েত এলাকার ওই রিকশার পাশাপাশি শহরের পথে যে সমস্ত লাইসেন্সবিহীন রিকশা চলছে, তার বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ প্রশাসন ও পুরসভা যৌথভাবে নিয়মিত অভিযান চালালে যানজট থেকে পরিত্রাণ মিলত বলেও পুরবাসীদের দাবি।
বহরমপুর পুরভোটের দায়িত্বে থাকা জেলা তৃণমূলের নির্বাহী সভাপতি হুমায়ুন কবীর বলেন, “পরিকল্পনার অভাবে ধুঁকছে বহরমপুর পুরসভা। এই পুরসভার একটাই পরিকল্পনা, তা হলোযে কোনও উপায়ে অর্থ উপার্জন করা। ফলে রিকশা ভাড়া বৃদ্ধি হওয়া না হওয়া নিয়ে নিয়ে পুর-কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল নেই। লাগামহীন রিকশা শহরে যানজট সৃষ্টি করছে। সেই সঙ্গে যে হারে রিকশা ভাড়া বেড়েছে, তাতে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ নাগরিকদের। বিরোধী শূন্য পুরসভা হওয়ায় তারা স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবে পুরসভা চালাচ্ছে। এর পরিবর্তন না হলে আগামী দিন পুরবাসীদের আরও ভুগতে হবে।”

ছবি তুলেছেন গৌতম প্রামাণিক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.