পৃথিবীর সব বড় শহরেই গুরুত্ব পাচ্ছে দূষণহীন যান সাইকেল। অথচ শহর কলকাতার প্রধান রাস্তাগুলিতে নানা কারণে সেই সাইকেল চালানোর উপরই রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। নেই এর জন্য আলাদা কোনও রাস্তাও। তবে কলকাতায় না থাকলেও পাশেই তৈরি হওয়া উপনগরী নিউ টাউনের কয়েকটি রাস্তায় সাইকেলের জন্য আলাদা পথ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে হিডকো। নিউ টাউনের রাস্তায় দূষণহীন যানবাহন বাড়ানোর কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন হিডকো-কর্তৃপক্ষ।
হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন বলেন, “নিউ টাউনকে দূষণহীন সুন্দর করে গড়ে তোলার জন্য প্রথম থেকেই চেষ্টা করছি। পৃথিবীর সব সুন্দর শহরেই রাস্তার পাশে সাইকেলের জন্য আলাদা লেন রয়েছে। নিউ টাউনেরও কয়েকটি রাস্তায় সাইকেল চালানোর আলাদা পথ তৈরি করা হবে। ইতিমধ্যে অ্যাকশন এরিয়া ওয়ানে বিসর্জনের ঘাটের পাশে সেই পথ তৈরি করা হচ্ছে।” |
হিডকো সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা নিউ টাউনেই সাইকেলের জন্য এ রকম আলাদা পথ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথমে অপেক্ষাকৃত জনবহুল জায়গা অ্যাকশন এরিয়া ওয়ান অর্থাৎ নিউ টাউন বাস স্ট্যান্ডের আশপাশে ওই পথ তৈরি হবে। এর পর তা তৈরি হবে অ্যাকশন এরিয়া টু ও থ্রি-র রাস্তার পাশে। পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত বলেন, “শহরের প্রধান রাস্তায় সাইকেল চালালে দ্রুতগামী যানের পক্ষে তা বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে দূষণ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এর জন্য চাই আলাদা লেন। কলকাতায় প্রধান রাস্তার পাশে আলাদা সাইকেল-লেন তৈরির সম্ভাবনা প্রায় নেই। তবে এই সুযোগ নিউ টাউনে রয়েছে।”
গত বছর শীতে ইকো পার্ক উদ্বোধন করতে এসে নিউ টাউনকে যতটা সম্ভব দূষণমুক্ত করার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । নিউ টাউনের বেশ কিছু জায়গায় দৃশ্যদূষণ রুখতে সেগুলি ‘হোর্ডিং-ফ্রি জোন’ করা হয়েছে। পার্কগুলিও যতটা সম্ভব পরিবেশ-বান্ধব করে তোলা হয়েছে। হিডকোর চেয়ারম্যান জানান, নিউ টাউনে যানবাহন একটু একটু করে বাড়লেও এখনও সমস্যা পুরোপুরি মেটেনি। তথ্যপ্রযুক্তির অফিসগুলিতে প্রচুর মানুষ কাজ করেন, যাঁরা অফিসের কাছেই কোনও আবাসনে থাকেন। সাইকেল যাওয়ার রাস্তা থাকলে তাদের অফিস যাতায়াতেও অনেক সুবিধা হবে। তা ছাড়া, ভবিষ্যতে নিউ টাউনে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। তাই আলাদা রাস্তা থাকলে ছাত্র-ছাত্রীরাও সাইকেলে যাতায়াত করতে পারবেন।
তবে হিডকোর চেয়ারম্যান আরও জানান, এখনও নিউ টাউনে লোকসংখ্যা কম, তাই এমনিই রাস্তা ফাঁকা থাকে। তাই সেখানে শুধু সাইকেল চালানোর আলাদা রাস্তা তৈরি করলেই হবে না, চালকদের নিরাপত্তার দিকটাও ভেবে দেখা হচ্ছে। তবে মানুষকে সাইকেল চালানোর জন্য উৎসাহ দিতে ইতিমধ্যেই ইকো পার্কে সাইকেলের ‘জয় রাইডের’ ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেবাশিসবাবু বলেন, “ইকো পার্কে একটি বিশেষ ধরনের সাইকেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একসঙ্গে দু’জন মিলে সেই সাইকেল প্যাডেল করে চালাতে পারবেন।” |