পিঠে ইটের ব্যাগ, মা-ছেলের দেহ ভেড়িতে
ল্টলেকের সেক্টর ফাইভে মুন্সির ভেড়ির কাছে রবিবার বিকেলেও দেখা গিয়েছিল প্রৌঢ়া মা এবং তাঁর ইঞ্জিনিয়ার ছেলেকে। সন্ধ্যায় ভেড়ির জলে মিলল তাঁদের পিঠে ইটের ব্যাগ এবং হাত-পা বাঁধা মৃতদেহ। পুলিশ জানায়, তাঁদের নাম তন্দ্রা ভট্টাচার্য (৬৭) এবং সৌম্য ভট্টাচার্য (৪০)। এই জোড়া অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে।
এটি আত্মহত্যা না খুন, গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশ সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেনি।
ঠিক কী ঘটেছিল?
পুলিশি সূত্রের খবর, সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ কয়েক জন রাজমিস্ত্রি ওই ভেড়িতে স্নান করতে নামেন। তাঁরাই পাশাপাশি দু’টি ব্যাগ ভাসতে দেখেন। সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা থানায় খবর দেন। পুলিশ গিয়ে ব্যাগ দু’টিকে টেনে তোলে। দেখা যায়, দু’টি ব্যাগ বাঁধা আছে এক প্রৌঢ়া এবং এক যুবকের পিঠে। দু’টি ব্যাগেই ছিল ইট। এক জনের দু’হাতের সঙ্গে অন্যের একটি হাত এবং একটি পা জুতোর ফিতে দিয়ে বাঁধা ছিল। প্রৌঢ়ার পরনে ছিল শাড়ি। যুবক জিনস আর শার্ট পরে ছিলেন। একটি ব্যাগে সৌম্যের নামে দিঘার একটি গেস্ট হাউসের ক্যাশ মেমোও পাওয়া গিয়েছে। উদ্ধারের পরে দু’জনকেই বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, ব্যাগে পাওয়া ক্যাশ মেমো থেকেই সল্টলেকের ২৩ নম্বর বি-জে ব্লকের একটি বাড়ির ঠিকানা মেলে। বাড়িটি অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার শ্যামল ভট্টাচার্যের। তন্দ্রাদেবী তাঁর স্ত্রী এবং সৌম্য ছেলে। সৌম্যও পেশায় ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ হয়েছে আগেই। তন্দ্রাদেবী ছিলেন বিএসএনএলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। পড়শিরা জানান, শ্যামলবাবুর মেয়ে-জামাইও তাঁদের সঙ্গে ওই বাড়িতেই থাকতেন। অগস্টে মেয়ে শর্মিষ্ঠা সরকারের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর থেকে পরিবারের কয়েক জন অবসাদে ভুগছিলেন।
এক আত্মীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মা ও ছেলে এ দিন বিকেল নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। দীর্ঘ ক্ষণ বাড়ি না-ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। বিকেলে মুন্সির ভেড়ির কাছে তন্দ্রাদেবী ও সৌম্যকে দেখা গিয়েছিল বলে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে। তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধারের পরে শ্যামলবাবুকে খবর দেওয়া হয়। তিনি থানায় গেলেও গভীর রাত পর্যন্ত আত্মহত্যা বা খুনের কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। অনেক চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি তাঁর সঙ্গে। বিধাননগরের ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানা অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা শুরু করেছে। তাদের বক্তব্য, আত্মহত্যা না খুন, ময়না-তদন্তেই সেটা জানা যাবে।
এই জোড়া অস্বাভাবিক মৃত্যুতে কয়েকটি প্রশ্নের জবাব খুঁজছে পুলিশ।
• আত্মহত্যা করে থাকলে মা ও ছেলে এমন পথ বেছে নিলেন কেন?
• পিঠে ইটের ব্যাগ যদি নিলেনই, পরস্পরকে বেঁধে জলে ঝাঁপালেন কেন?
• এক জনের দু’হাতের সঙ্গে অন্যের একটি হাত এবং একটি পা বাঁধা ছিল। অর্থাৎ এক জনের এক হাত এবং এক পা খোলা ছিল। মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে সেই হাত দিয়ে বাঁধন খোলার চেষ্টা করাটাই পুলিশের মতে স্বাভাবিক।
• সেটা কি করা হয়েছিল? এই সব প্রশ্নের জবাব খোঁজার সঙ্গে সঙ্গেই খুনের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.