|
|
|
|
একশো দিনের কাজে বাড়াতে উদ্যোগ পশ্চিমে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
একশো দিনের কাজের প্রকল্পে আরও বেশি করে জোর দেওয়ার কথা বারবার বলছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বাস্তব চিত্র বলছে, এই প্রকল্পের কাজ সে ভাবে হচ্ছে না, বরং বেশ কিছু ক্ষেত্রে পিছিয়েই পড়ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা।
প্রশাসনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মাসে এক-একটি পঞ্চায়েতে গড়ে শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে মাত্র ১৪২৩টি! এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। তাই সব থেকে কম শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে এমন ১৩টি ব্লককে চিহ্নিত করা হয়েছে। কেন সেই সব ব্লকে কাজের গতি কম তা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি ওই সব ব্লকে কাজের গতি বাড়াতে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কী কারণে একশো দিনের কাজের গতি এতটা কমে গেল?
জানা গিয়েছে, এর পিছনে যেমন নির্বাচন বা বন্যা পরিস্থিতি রয়েছে, তেমনই প্রশাসনিক উদাসীনতাও রয়েছে। কিছু ব্লকে বন্যার কারণে কাজ করা যায়নি এটা ঠিক। কিন্তু দেখা গিয়েছে, যেখানে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি তেমন ব্লকেও কাজের গতি হয়েছে অতি মন্থর।
প্রশাসনিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি আর্থিক বছরের এপ্রিল মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্তএই সাত মাসে জেলার ২৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ২৮ লক্ষ ৮৯ হাজার ৭০৩টি শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ গ্রাম পঞ্চায়েত পিছু ৭ মাসে গড় শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে ৯৯৬৪টি। ফলে জেলা পাওনা টাকাও খরচ করতে পারেনি। এখন পর্যন্ত ১০০ দিনের প্রকল্পে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ২২৬ কোটি টাকা পেয়েছে। খরচ হয়েছে প্রায় ১৭০ কোটি টাকা! সব থেকে খারাপ কাজ হয়েছে মেদিনীপুর সদর ব্লকে। যেখানে মাসে গড়ে শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে ২৪১টি। খারাপের নিরিখে তার পরেই রয়েছে খড়্গপুর-২ ব্লক। যেখানে মাসে গড়ে ৬৪৭টি শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে। সবংয়ে হয়েছে ৬৭৫টি শ্রম দিবস। দাঁতন-২, পিংলা, সাঁকরাইল, জামবনি, খড়্গপুর-১, দাঁতন-১, দাসপুর-২, মোহনপুর ও দাসপুর-১ রয়েছে পিছিয়ে পড়া ১৩টি ব্লকের তালিকায়। জেলার মধ্যে সেরা কাজ হয়েছে নারায়ণগড় ব্লকে। গ্রাম পঞ্চায়েত পিছু মাসে ২৬৫৩টি শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে। নয়াগ্রাম ব্লকও জেলার নিরিখে ভাল কাজ করেছে। আর পঞ্চায়েত পিছু মাসে শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে ২৫৩৬টি।
প্রশাসন জানিয়েছে, একশো দিনের প্রকল্পের কাজে পিছিয়ে পড়া ১৩টি ব্লককে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের নিয়ে ব্লকে-ব্লকেই বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২-৩টি ব্লককে পাশাপাশি কোনও ব্লকে ডেকে নিয়ে বৈঠক করা হবে। বৈঠকে বিডিও, সংশ্লিষ্ট ব্লকের পঞ্চায়েত প্রধান ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদেরও ডাকা হবে। কি ভাবে কাজে গতি আনা যায় সে ব্যাপারে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করবেন ও রূপরেখাও তৈরি করে দেবেন জেলা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকেরা। জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি বলেন, “কিছু কারণে কয়েকটি ব্লকের কাজের অগ্রগতি আশানুরূপ হয়নি। তবে এ বার সকলেই কাজে নেমে গিয়েছেন। যাতে আরও ভাল কাজ করা যায়, কী ভাবে তা করতে হবে তা নিয়ে ব্লকের সকলকে নিয়ে বৈঠকেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
হাতে মাত্র আর ৫ মাস। এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ১৭০ কোটি টাকা। গত আর্থিক বছরের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতেই ১২৫ কোটি টাকা খরচ করতে হবে প্রশাসনকে। বাস্তবে তা কতটা সফল হবে তা অবশ্য সময়ই বলবে। |
|
|
|
|
|