|
|
|
|
পুরভোটে নক্ষত্র পতন শুধু সময়ের অপেক্ষা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বেজে গিয়েছে পুরভোটের দামামা। আর তারই সঙ্গে একটা আশঙ্কা ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। জেলা সদর শহরের পুরভোটে একাধিক ওয়ার্ডে হেভিয়েট প্রার্থীরা পাঞ্জা ঠুকছেন জেতার আশায়। কিন্তু বাস্তবে যে কোনও একজন হারবেন। কিংবা, দু’জনই হারতে পারেন। জিতবেন অন্য কোনও প্রার্থী। তবে আগে থেকেই হারতে রাজি নন কোনও পক্ষই। তাই মেদিনীপুর শহর এখন পোস্টার-ফেস্টুনে ছয়লাপ। যেন কেউই কারও থেকে এতটুকু পিছিয়ে থাকতে নারাজ। কংগ্রেস, তৃণমূল থেকে সিপিএম, সিপিআই সমস্ত রাজনৈতিক দলই যে যার মতো করে প্রচার করছে।
আগামী ২২ নভেম্বর মেদিনীপুর পুরসভা নির্বাচন। গণনা ২৫ নভেম্বর। আগে শহরে ২৪টি ওয়ার্ড ছিল। এলাকা পুনর্বিন্যাসের পর একটি ওয়ার্ড বেড়েছে। ২৫টি ওয়ার্ডের সবক’টিতেই বহুমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। শহরে প্রার্থী সংখ্যা সবমিলিয়ে ১১৫। একই ওয়ার্ডে ভোটপ্রার্থী সিপিএমের শহর জোনাল সম্পাদক এবং পুরসভার বিদায়ী কংগ্রেস উপপুরপ্রধান। অন্য একটি ওয়ার্ডে আবার ভোটপ্রার্থী পুরসভার বিদায়ী তৃণমূল পুরপ্রধান এবং সিপিআই জেলা সম্পাদকের স্ত্রী। অর্থাৎ, এদের মধ্যে যে কেউ একজন জিতবেন। অথবা জিতবেন অন্য কোনও প্রার্থী। সবমিলিয়ে, পুরভোটে নক্ষত্র পতন এখন সময়ের অপেক্ষা। |
 |
মনোনয়নপত্র স্ক্রুটিনির দিন একসাথে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীরা। —ফাইল চিত্র। |
এ বার পুরভোটে নজরকাড়া ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে ২৩ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে সবথেকে বেশি সংখ্যক ৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। লড়াইয়ে রয়েছেন পুরসভার বিদায়ী কংগ্রেস উপপুরপ্রধান এরশাদ আলি, সিপিএমের শহর জোনাল কমিটির সম্পাদক কীর্তি দে বক্সী, তৃণমূলের ওয়ার্ড সভাপতি জিতেন্দ্রনাথ দাস প্রমুখ। অর্থাৎ, পুরভোটের পর নক্ষত্র পতন নিশ্চিত। একই পরিস্থিতি ৬ নম্বর ওয়ার্ডেও। এই ওয়ার্ডে প্রার্থী সংখ্যা ৫। লড়াইয়ে রয়েছেন পুরসভার বিদায়ী তৃণমূল পুরপ্রধান প্রণব বসু, সিপিআই জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণার স্ত্রী ভারতী রাণা প্রমুখ। শহরের নজরকাড়া ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে ১১ নম্বরও। কারণ, এই ওয়ার্ডে বামফ্রন্ট সমর্থিত বিকাশ পরিষদের প্রার্থী হয়েছেন নাজিম আহমেদ। নাজিমবাবু প্রাক্তন পুরপ্রধান। ওয়ার্ডে প্রার্থী সংখ্যা ৪। প্রাক্তন পুরপ্রধানের লড়াই তৃণমূলের নিবেদিতা পাল, কংগ্রেসের আজম আলি প্রমুখের সঙ্গে। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শহর কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন খান। সৌমেনবাবু এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলর। |
 |
শহরের জুগনুতলাতে পুরভোটের প্রচার। |
এই ওয়ার্ডে সবমিলিয়ে ৫ জন প্রার্থী রয়েছেন। শহর কংগ্রেস সভাপতিকে লড়তে হচ্ছে তৃণমূলের শক্তিপদ দাস অধিকারী, সিপিএমের শান্তনু দত্ত প্রমুখের সঙ্গে। পুরভোটে সবথেকে কম সংখ্যক প্রার্থী রয়েছে ৪ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে, ৩ জন করে।
পাঁচ বছর আগে, ২০০৮ সালের নির্বাচনে জিতে পুরসভার ক্ষমতা দখল করে কংগ্রেস-তৃণমূল। দু’দলের জোট হয়। ভোটের আগে অবশ্য দু’দলের জোট ছিল না। এ বারও ভোটের আগে জোট হয়নি। ভোটের পর জোটের সম্ভাবনাও কম। কারণ, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলেছে। সবক’টি ওয়ার্ডেই তাই কংগ্রেস-তৃণমূল সম্মুখসমরে। কী হবে পুরভোটের ফল? জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতির দাবি, “মানুষ তৃণমূলকেই সমর্থন করবে। আমরা এ বার একক সংখ্যাগরিষ্ঠ হব।” জেলা কংগ্রেসের সভাপতি স্বপন দুবের মন্তব্য, “মেদিনীপুরের মানুষ এ বার কংগ্রেসকে আশীর্বাদ করবেন। আমরা স্থায়ী পুরবোর্ড চাই। মিউজিক্যাল চেয়ার চাই না।” অন্য দিকে, জেলা সিপিএমের সম্পাদক দীপক সরকারের জবাব, “ফল কী হবে, তা জনগণ বলবে। গণতন্ত্রে তো জনগণই শেষ কথা বলেন।” ফল যাই হোক। পুরভোটে শেষ হাসি কে হাসবেন, জানা যাবে ২৫ নভেম্বর। |
|
|
 |
|
|