চেন্নাই এক্সপ্রেসের লুঙ্গি ডান্স বা বসের ঝিঙ্কুনাকুর নয়, কার্তির লড়াইয়ের সুরটা বেঁধে দিচ্ছেন স্বয়ং মান্না দে।
কাটোয়ায় আজ, শনিবার থেকে শুরু হওয়া দু’দিনের কার্তিক লড়াইয়ে বেশিরভাগ মণ্ডপেই শোনা যাবে মান্না দে-র নানা বিখ্যাত গান। শহরের অধিকাংশ পুজো উদ্যোক্তারা মিলে ঠিক করেছেন, এটাই হবে প্রবাদপ্রতিম শিল্পীর প্রতি তাঁদের শ্রদ্ধার্ঘ্য। শহরের কেডিআই স্কুল মোড়ের কাছের বিগ স্টার ক্লাব যেমন প্রজেক্টরের মাধ্যমে মান্না দের গান তুলে ধরবে দর্শকদের কাছে।
তবে শুধু মান্না দে নয়, ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার আগে সচিন তেন্ডুলকরকেও স্মরণ করছে শহরের বেশ কিছু ক্লাব। কেডিআই স্কুলের পিছনে দেশবন্ধু ক্লাব যেমন পুরী থেকে বালু শিল্পী নিয়ে এসেছেন রাতভর বালি দিয়ে মণ্ডপ চত্বরে মান্না দের ছবি ফুটিয়ে তোলার জন্য। থাকবে সচিন তেন্ডুলকরের বালি দিয়ে তৈরি মূর্তিও। ২৪ বছর ধরে দেশের জন্য খেলা এই ক্রিকেটারের অবসরজীবন যেন মসৃণ হয়, সেই কামনায় সাজানো হবে ‘ভাল থেকো সচিন’ লেখা পোস্টারও। শুধু মণ্ডপে নয়, রবিবার কাটোয়ায় কার্তিকের শোভাযাত্রাতেও সচিনের কাট-আউট রাখবেন উদ্যোক্তারা। প্রতিবাদ ক্লাবের এক কর্তার মতে, মুম্বই টেস্ট ম্যাচ হয়তো শনিবারেই শেষ হয়ে যাবে। ভারতীয় হিসেবে সচিনের জন্য এটাই আমাদের বিদায় উপহার। কয়েকজন উদ্যোক্তা আবার মান্না দে, সচিন ছাড়া প্রয়াত চিত্র পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষকেও সম্মান জানাবেন। |
এমনিতেই দুর্গাপুজোর আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় উৎসবের মরসুম। তারপর কালী পুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো , মহরম একেবারে পরপর হওয়ায় বেশিরভাগ জায়গাতেই এখনও মণ্ডপ বা থাকা পুরোপুরি তৈরি হয়নি। শহর জুড়ে চলছে শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতি। কার্তিক লড়াইয়ের আগের সন্ধ্যা থেকেই আলোর বন্যায় ভাসছে শহর। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কার্তিক লড়াইয়ের জন্য কাটোয়াতে তিন জন ডিএসপি, সাত জন ইন্সপেক্টর, ৮৫ জন এস আই ও ৫০০জন পুলিশ কর্মী মোতায়েন হয়েছে। এ ছাড়াও থাকবে সিভিক ও সিভিল পুলিশ। শহরের সাতটি জায়গাতে শিবির করে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করবেন তাঁরা।
প্রতিবারের মতো মণ্ডপসজ্জাতে এ বারও বৈচিত্র্য চোখে পড়ার মতো। বিগ স্টার ক্লাব তাঁদের মণ্ডপ সাজিয়েছে পুরনো খবরের কাগজ দিয়ে। আর্ট কলেজের চার ছাত্র নিজেদের হাতে মণ্ডপ বানিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এই মণ্ডপ তৈরি করতে প্রায় এক কুইন্ট্যাল কাগজ লেগেছে। তাঁদের মধ্যে অতনু দত্ত, রাকেশ বাহাদুর রাইরা বলেন, “ছোট্ট জায়গার মধ্যে পুরনো মন্দিরের আদলে মণ্ডপ সাজিয়েছি। মন্দিরের গায়ে রয়েছে ভারতীয় শিল্প, প্রাচীন গাছ আর পাথরের প্রাচীন মূর্তি।” এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানিয়েছেন তাঁরা। দেশবন্ধু ক্লাব আবার ধান দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করেছে। থিম লক্ষ্মীর বারোমাস্যা। লক্ষ্মীর ১২টা রূপ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সেখানে। সার্কাস ময়দানের ইউনিক ক্লাব চট ও সুতো দিয়ে মণ্ডপ বানিয়েছে। বাঁশের ছিলকা দিয়ে মণ্ডপ গড়েছে সংহতি। পানুহাটের নিউ আপনজন ক্লাব আবার তাঁদের মণ্ডপে বোতামকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। বারুজীবী পল্লীর ইয়ং বয়েজ ক্লাব ছোটা ভীমের মাধ্যমে দর্শকদের, বিশেষ করে খুদেদের পরিবেশ দূষণ নিয়ে সচেতন করতে চেয়েছে। |