ফাঁস খুলছে না লাল ফিতের। পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের আধুনিকীকরণের জন্য অর্থ এসে পড়ে থাকলেও, স্রেফ স্বাস্থ্য দফতর ও পূর্ত দফতরের গড়িমসিতে বঞ্চিত হচ্ছেন জেলার বাসিন্দারা। এমনই অভিযোগ উঠেছে।
পুরুলিয়া সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অপারেশন থিয়েটারের পাশে যেখানে মালপত্র রাখা হয়, সেখানেই ওই মাইক্রোসার্জারি ইউনিট গড়ে তোলার কথা। অর্থাৎ, অল্প ক্ষত করে অপারেশন করা যাবে। হাসপাতালের শল্য চিকিৎসকেদের মতে, মাইক্রোসার্জারি পদ্ধতিতে অপারেশন করলে রোগীরা কষ্ট অনেক কম পাবেন। অথচ তাঁরা দ্রুত সেরেও উঠবেন। এ কথা মাথায় রেখেই হাসপাতালে এই ইউনিট গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চলতি বছরের গোড়ার দিকে, পুরুলিয়ার মতো পিছিয়ে পড়া জেলায় এই ইউনিট গড়ে তুলতে রাজ্য সরকার ৫২ লক্ষ টাকা মঞ্জুরও করে। কাজ শুরু করার জন্য গত মার্চ মাসে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে সেই টাকা চলেও আসে। কিন্তু কাজ শুরু হয়নি। |
হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক পবন মণ্ডল বলেন, “হাসপাতালের দোতলায় ওটির একাংশে যেখানে এই ইউনিট গড়ে তোলা হবে, আগে সেই ঘরটি সংস্কার করা প্রয়োজন। বিধি মোতাবেক পূর্ত দফতরে এই সংস্কার করার কথা। কয়েক মাস আগে পূর্ত দফতরের বাস্তুকাররা ঘরটি দেখেও যান। কিন্ত সংস্কার আজও হয়নি।” তিনি জানান, এর মধ্যে কিছুদিন আগে ওই ঘরের ছাদ থেকে চাঙড়ও ভেঙে পড়ে। স্বল্পক্ষত এই চিকিৎসা কেন্দ্রে নানা অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি বসবে। সেই সব যন্ত্রপাতি জার্মানি থেকে আসছে। অথচ এখনও ঘরটাই সংস্কার করা হয়নি।
গত সেপ্টেম্বর মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরুলিয়া সফরে আসার আগে এই কেন্দ্রটি চালু করতে চেয়েছিলেন হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ। কিন্তু ওটি তৈরি না হওয়ায় তা চালু করা যায়নি। আধুনিক এই অপারেশন থিয়েটারের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার জন্য হাসপাতালের চিকিৎসক পবন মণ্ডলকে কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয়েছিল। তিনি প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে এলেও ওই অত্যাধুনিক অস্ত্রোপচার ব্যবস্থা চালু হয়নি। পবনবাবু বলেন, “যন্ত্রপাতি সরবরাহের দায়িত্বে থাকা সংস্থা বার বার ওটি প্রস্তুত হয়েছে কি না জানতে চাইছেন। কিন্তু আমরা তাদের জানাচ্ছি, এখন যন্ত্রপাতি পাঠালে চালু করা যাবে না। অথচ এই কেন্দ্রটি আমরা জেলাবাসীর জন্য তাড়াতাড়ি চালু করতে চাই।”
পূর্ত দফতরের কার্যনির্বাহী বাস্তুকার গৌতম রায় বলেন, “ওই কাজ দ্রুত শুরু করা হচ্ছে।” হাসপাতালের সুপার নীলাঞ্জনা সেন বলেন, “ওই ঘরটি পূর্ত দফতর সংস্কার করবে। খবর পেয়েছি সংস্কারের জন্য পূর্ত দফতর দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া শেষ করেছে।” জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মানবেন্দ্র ঘোষ বলেন, “নানা কারণে একটু দেরি হয়েছে। প্রথমে যেখানে ওই কেন্দ্র করার কথা ভাবা হয়েছিল, সেই ঘর স্যাঁতস্যাঁতে। তাই পাশের ঘরে ওই কেন্দ্র করা হবে।”
কিন্তু চলতি বছরের গোড়ায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এবং গত মার্চ মাসে টাকা এসে পৌঁছলেও কেন ঘর সংস্কারের কাজ শুরু হল না আজও? স্বাস্থ্য দফতর বা পূর্ত দফতরের কর্তাদের কাছে এর সদুত্তর মেলেনি। জেলা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো বলেন, “কেন ওই কাজ এখনও শুরু করা যায়নি খোঁজ নেব।”
পুরুলিয়ায় মিছিল। বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ায় স্কুল পড়ুয়া ও বিশিষ্টজনরা মিছিল করেন। ছিলেন পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীরকুমার, বিধায়ক কে পি সিং দেও-সহ বিশিষ্টজন। পরে জনচেতনামূলক একটি সভাও হয়। |